সৈয়দ নজরুল হুদা (তৌহিদ) :
গ্রাম বাংলায় একটি বহুল প্রচলিত কথা লোকমুখে শোনা যায় : ‘হাতী ঘোড়া গেল তল, ছাগল বলে কত জল?' যতো বড় মুখ নয়, ততো বড় কথা'র মতো শিক্ষামূলক প্রবচনগুলো জাতিকে আলোর দিশা দিচ্ছে যুগ যুগ ধরে। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ৩ বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, জনমন নন্দিত বিএনপি'র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার হুমকি দিয়েছেন। তার ভাষায় মৌলবাদী দলগুলোর সাথে যূথবদ্ধ গণআন্দোলন গড়ে তোলায় তিনি নাকি জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। অতএব মাইনাস টু নয়- মাইনাস ওয়ানই তার কাছে এখন প্রতিপাদ্য হয়ে পড়েছে। কূপমন্ডূক হাসানুল হক ইনু কিংবা শাহরিয়ার কবিরেরা পরজীবী রাজনীতির ঘৃণ্যতম উপাদান হয়ে দেশীয় রাজনীতিকে কলঙ্কিত করছেন বহু পূর্ব থেকেই। স্বাধীনতার ঊষালগ্ন থেকে আওয়ামী রাজনীতির বিরোধিতাকারী হাসানুল হক ইনু গণবাহিনীর প্রধান হিসেবে আওয়ামী নিধনযজ্ঞের প্রধান অনুঘটক হিসেবে কাজ করতেন। সমাজতন্ত্রের নামে হত্যাকান্ড, সম্পদলুণ্ঠন, ব্যাংক ডাকাতির মতো সন্ত্রাসী কার্যকলাপ তাদেরকে জনবিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিলো। ১৯৭৫-এর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের দ্বার উন্মোচন করলে আন্ডার গ্রাউন্ডে থাকা ইনু সাহেবরা রাজনৈতিক মুক্ত আলোতে অবগাহনের সুযোগ পেয়েছিলেন। বক্তৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে জিয়াউর রহমানকে অভিনন্দিত করেছিলেন- সে অতীত খুব দূরে নয়। প্রায় অধিকাংশ নির্বাচনে জামানত হারানো এ মহান (?) নেতা এবার আওয়ামী ছত্রছায়ায় ‘মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন' যাদুর স্পর্শে এমপি নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতাসীনদের নেকনজরপ্রাপ্তির কোশেশ্ চালিয়ে যাচ্ছেন। '৭৫-পূর্ব রাজনীতিতে আওয়ামী উচ্ছেদযজ্ঞে যে নেতার দু'হাতই রঞ্জিত ছিলো- মাত্র ৩ যুগের মাথায় সে দু'টো হাত করজোড়ের মূর্ছনায় নগদপ্রাপ্তির জোয়ারে কতখানি নীতিহীনতার সয়লাবে ভেসে যেতে পারে, তা দেখলেও বিস্মিত হতে হয়। ইনু মেনন সাহেবদের রাজনীতি সেভাবেই ঘুরপাক খায় প্রাপ্তির অনৈতিক জোয়ারে। যতোখানি মুখ নয়, ততোখানি কথা'র মতো যে রাজনীতিবিদ সময়ের প্রয়োজনেই ইতিহাসের অাঁস্তাকুড়ে মাইনাস হয়ে যাবেন- তার মুখে বরেণ্য রাজনীতিবিদদের মাইনাস করার হুঙ্কার নিতান্তই বেমানান, হাস্যকর ও অজ্ঞতাপ্রসূত বলে মনে হয়। মহাজোটীয় অপর শরীক, জাপা প্রধান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ মহাজোটের তেলেঝোলে সিক্ত হয়েও সময় সময় ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করছেন সমূহ গণআন্দোলন সৃষ্ট গণবিস্ফোরণ থেকে পিঠ বাঁচাতে। নিজের ব্যাংক-বীমার মালিকানাপ্রাপ্তি, দলীয় নেতাকর্মীদের মন্ত্রিত্ব ও সংদদীয় কমিটি প্রধান করেও ‘বাসায় খুন, বাইরে গুম' তত্ত্বের উদ্ভাবক হয়ে বিরোধী জনমনে আসন গাড়তে যারপরনাই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। জোট না ছেড়ে সামনের নির্বাচন এককভাবে করার ঘোষণা মহাজোটীয় শাসনের ব্যর্থতার দায়ভার থেকে তাকে মুক্তি দেবে না- এ কথা একটি শিশু মাত্রই বুঝে! আগাম আশঙ্কায় আশঙ্কিত এ সাবেক স্বৈরশাসক ক্ষমতার শেষার্ধে এসে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠক শেষে জনমনে আসন গাড়তে একবার ফেনী নদীতে বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে কিংবা তিস্তা নদীর পানি বণ্টন ইস্যুতে লংমার্চের মতো কর্মসূচি দিচ্ছেন! কলুষিত রাজনীতিতে ভোট ডাকাতির প্রবক্তা এবং রজনীতির পবিত্র অঙ্গনে সুন্দরী ললনা তথা , ইভা মরিয়ম বা বিদিশাদের অবতারণার ক্লেদাক্ত রাজনীতির শেষাংশে বোধ হয় শুচিশীলতা তৈরি হচ্ছিল বয়সের ন্যুব্জতার জন্য। কালের বিবর্তনে মানুষ অনেক কিছুই ভুলে যায়। ভুল থেকে শুদ্ধতার চর্চা থাকতে হবে- প্রচেষ্টা থাকবে ভালো কিছু করার। কিন্তু রাজনৈতিক সুবিধাবাদ সে পরিবেশ তৈরি হতে দিচ্ছে না। ইদানীং এরশাদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে ‘অনির্বাচিত সরকার' হিসেবে অভিহিত করে যুদ্ধের ঘোষণা দিচ্ছেন। আন্দোলনের প্রবল জোয়ারে যখন নির্দলীয় সরকারের তত্ত্বাবধানে ‘জাতীয় সংসদ' নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে- তখন তিনি সুরসুর করে নির্বাচনে অংশ নেবেন, এ কথা কিন্তু নির্দ্বিধায় বলা যায়।
বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন এখন আন্তর্জাতিক উদ্বেগে পরিণত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার বিষয়ক বার্ষিক রিপোর্ট, এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসমূহ রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারি মদদে ক্রমাগত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অসংখ্য ঘটনা উল্লেখ করে তা নিরসনের পরামর্শ দিয়েছে। লন্ডন ভিত্তিক প্রভাবশালী সাময়িকী ‘দি ইকোনমিস্ট' বাংলাদেশের ‘‘প্রধানমন্ত্রী দেশকে এক বিপদজনক পথে নিয়ে যাচ্ছেন’’ (দ্য প্রাইম মিনিস্টার সেটস্ দ্য কান্ট্রি) অন এ ডেঞ্জারাস পাথ) শিরোনামে প্রতিবেদন ছেপেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সংসদ নির্বাচনের ১৮ মাস আগে বাংলাদেশের রাজপথে প্রতিবাদ সমাবেশ হচ্ছে। বিরোধী দলের নেতাদের জেলে পাঠানো হয়েছে এবং ক্ষমতার দ্বনেদ্ব গুম ও খুন বেড়েছে। আগামী নির্বাচন কার অধীনে হবে এবং স্বচ্ছ হবে কিনা- তা নিয়ে বিবাদ দেখা গেছে। অনেক পর্যবেক্ষক সন্দিহান হয়ে পড়েছেন যে দেশটিতে আদৌ সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হবে কিনা? এদিকে বাংলদেশে খাদ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, ব্যাপক লোডশেডিং এবং নতুন রাস্তা নির্মাণের প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়া নিয়ে বিক্ষোভ হচ্ছে বলে দি ইকোনমিস্ট জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া সকল ব্যর্থতার জন্য শেখ হাসিনার সরকারকে দায়ী করে বলেছেন যে, সব কিছুর জন্য সরকার দায়ী। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিরোধী দলের একজন তরুণ নেতাকে (ইলিয়াস আলী) এক মাস আগে অপহরণ করা হয়েছে এবং সম্ভবত তাকে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে আরো দু'জনকে হত্যা করা হয়েছে। দি ইকোনমিস্ট আরো জানিয়েছে, বিরোধী দলের শীর্ষস্থানীয় ৩৩ নেতাকে অগ্নি সংযোগের সাজানো মামলায় জেলে পাঠানো হয়েছে। বেগম জিয়া বলেছেন, প্রায় ৩ হাজার নেতাকর্মীকে ইদানীং গ্রেফতার করা হয়েছে। এটা শুধু ভীতি প্রদর্শনের জন্য নয়- আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য করা হয়েছে। সংকটের ঘনঘটা আরো তীব্রতর হচ্ছে। কয়েক মাস পূর্বে আরো অনেক রহস্যজনক হত্যাকান্ড ঘটেছে, সৌদী কূটনীতিককে হত্যা করা হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন নেতা আমিনুল ইসলামকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুরোপুরি আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করছে না। শুরুতে এই বিচার প্রক্রিয়ায় অনেক ত্রুটি ছিল, তার কিছু কিছু সংশোধন করা হলেও এখনো অনেক সমস্যা রয়ে গেছে এবং এই ট্রাইব্যুনাল আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করতে পারছে না। প্রতিবেদনের এ্যামনেস্টির বাংলাদেশ বিষয়ক গবেষক আববাস ফয়েজ বিবিসি বাংলাকে সরাসরি বলেছেন, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এখনো আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হতে পারেনি বলে তারা মনে করেন। এ্যামনেস্টি বাংলাদেশে বিরোধী দলের ওপর সরকারি নির্দেশে পুলিশ ও পেটোয়া বাহিনীর নির্মম নির্যাতন, ক্রস ফায়ার, গুমসহ আইন-শৃক্মখলা বাহিনীর পোশাক পড়া গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের যথেচ্ছ রাজনৈতিক নেতাকর্মী, ট্রেড ইউনিয়ন নেতা ও মানবাধিকার কর্মী অপহরণ এবং পরবর্তীতে র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক অস্বীকার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে মন্তব্য করেছে। গত ২৪ মে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিষয়ক দফতরের ‘বার্ষিক মানবাধিকার রিপোর্ট' ঢাকাস্থ আমেরিকান দূতাবাস প্রকাশ করেছে, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির তীব্র সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছেন যে, সরকার বিরোধী দলসমূহের সমাবেশ করার স্বাধীনতা খর্ব করেছে। এছাড়া রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূর্ণ সহিংসতা সমস্যাকে অধিকতর বাড়িয়ে দিয়েছে। সরকারি পর্যায়ে দুর্নীতি মারাত্মক এক সমস্যা। শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতাও বড় একটি সমস্যা। শ্রমিকদের অধিকার সীমিত করা, শিশুশ্রম, কর্মক্ষেত্রে অনিরাপত্তা রয়েই গেছে। অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ ক্ষমা মারাত্মক এক সমস্যা। নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর বেশির ভাগ সদস্য সাধারণ ক্ষমার অধীনে কাজ করেন। এক্ষেত্রে র্যাবের কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে হত্যাকান্ডের ঘটনার তদন্তে সরকার সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়নি। সরকারি দুর্নীতি ও তার সাথে সম্পৃক্ত সাধারণ ক্ষমা অব্যাহত আছে।' রিপোর্টে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ‘বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করা সত্ত্বেও উচ্চ আদালতে নিয়োগ দিয়েছে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের। অভিযোগ আছে, রাজনৈতিক স্পর্শকাতর অনেক মামলায় তারা বিচার বিভাগীয় সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেন। এতে সমস্যা বেড়েছে বিরোধী দলীয় সদস্যদের ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ সঙ্কুচিত করা হয়েছে।' সরকারি দুর্নীতি প্রসঙ্গে বলা হয়, ‘‘বাংলাদেশে দুর্নীতি বিরোধী আইন ও বিধি বিধান থাকলেও সরকার তার যথাযথ প্রয়োগ করে না। সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকেই দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এখানে দুর্নীতি করলে শাস্তি হয় না। টিআইবি দুর্নীতি দমন কমিশনকে ‘দন্তহীন বাঘ' আখ্যা দিয়েছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার আগে শাসক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যাবতীয় মামলা আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
০ ০ ০
বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর একশ্রেণীর পরজীবী বুদ্ধিজীবী দেশের সকল দলমত নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্যের বিরুদ্ধে ক্রমাগত ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য যেন তাদের ধাঁচে সয় না। স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ ধূয়াতুলে জাতিকে বিভাজিত করে রাখা হয়েছে- সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদী শক্তির ক্রীড়নক হিসেবে। এশিয়া মহাদেশের ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া আগ্রাসী মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সামরিক ধ্বংসযজ্ঞ রুখে দিয়ে একযুগ ও তদুর্ধ সময়ের রক্তাক্ত যুদ্ধ শেষে দেশ পরাধীনতা মুক্ত করেছিল। তারা সব বিভাজন ভুলে দেশ গড়ার মহতি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রবৃদ্ধির সমতালে এগিয়ে যাচ্ছে। এশিয়ার তারা ‘ইমাজিং টাইগার' এ ভূষিত হচ্ছেন। ব্যতিক্রম শুধু বাংলাদেশে। একশ্রেণীর পত্রপত্রিকা, মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবী লেখকের এক বিশাল অংশ বিভেদের এ বীজ রোপণ করেই চলেছেন। গত ২৫ মে'র দৈনিক প্রথম আলোতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল ‘রাজনীতি নিয়ে আমার ভাবনা-১' নিবন্ধে লিখেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী' জামায়াতের ছাত্র সংগঠনের কম বয়সী তরুণেরা ছাত্র সংগঠন কেমন করে করে? তাদের দেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখার কথা, দেশের জন্য লাগাম ছাড়া ভালোবাসার কথা, ২১ ফেব্রুয়ারিতে ফুল দিয়ে শহীদ মিনারে প্রভাত ফেরীর কথা'। নিবন্ধ পড়ে মনে হচ্ছিলো, ছাত্রশিবিরে যোগ দিলে যেন দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখা যায় না, লাগাম ছাড়া দেশকে ভালোবাসা যায় না। অনাদর্শের ঠুলি চোখে দিয়ে বিদ্বেষভাবাপূর্ণ লেখনিতে এর থেকে ভালো (?) মন্তব্য আর কি আশা করা যাবে অধ্যাপক সাহেবের লেখনি থেকে?
পাদটীকা : ২৮ মে, ২০১২ রাত ৯.২০ মিনিট। পঞ্চাশ টাকা ভাড়া চুকিয়ে সস্ত্রীক ফিরছি রিকশায়, শ্যামলী থেকে কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড গন্তব্যে। একটি কালো ট্যাক্সী ক্যাব মুহূর্তে ছিনিয়ে নিল স্ত্রীর ভ্যানিটি ব্যাগ। ভিতরে ছিল ২টি মোবাইল সেট ও পাঁচশত টাকা। ঘটনার আকস্মিকতায় সকলেই হতভম্ব! মনে পড়লো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অমৃত বচন- ‘আগের যে কোন সময় থেকে এখনকার আইন-শৃক্মখলা পরিস্থিতি উন্নততর।'
গ্রাম বাংলায় একটি বহুল প্রচলিত কথা লোকমুখে শোনা যায় : ‘হাতী ঘোড়া গেল তল, ছাগল বলে কত জল?' যতো বড় মুখ নয়, ততো বড় কথা'র মতো শিক্ষামূলক প্রবচনগুলো জাতিকে আলোর দিশা দিচ্ছে যুগ যুগ ধরে। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ৩ বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, জনমন নন্দিত বিএনপি'র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার হুমকি দিয়েছেন। তার ভাষায় মৌলবাদী দলগুলোর সাথে যূথবদ্ধ গণআন্দোলন গড়ে তোলায় তিনি নাকি জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। অতএব মাইনাস টু নয়- মাইনাস ওয়ানই তার কাছে এখন প্রতিপাদ্য হয়ে পড়েছে। কূপমন্ডূক হাসানুল হক ইনু কিংবা শাহরিয়ার কবিরেরা পরজীবী রাজনীতির ঘৃণ্যতম উপাদান হয়ে দেশীয় রাজনীতিকে কলঙ্কিত করছেন বহু পূর্ব থেকেই। স্বাধীনতার ঊষালগ্ন থেকে আওয়ামী রাজনীতির বিরোধিতাকারী হাসানুল হক ইনু গণবাহিনীর প্রধান হিসেবে আওয়ামী নিধনযজ্ঞের প্রধান অনুঘটক হিসেবে কাজ করতেন। সমাজতন্ত্রের নামে হত্যাকান্ড, সম্পদলুণ্ঠন, ব্যাংক ডাকাতির মতো সন্ত্রাসী কার্যকলাপ তাদেরকে জনবিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিলো। ১৯৭৫-এর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের দ্বার উন্মোচন করলে আন্ডার গ্রাউন্ডে থাকা ইনু সাহেবরা রাজনৈতিক মুক্ত আলোতে অবগাহনের সুযোগ পেয়েছিলেন। বক্তৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে জিয়াউর রহমানকে অভিনন্দিত করেছিলেন- সে অতীত খুব দূরে নয়। প্রায় অধিকাংশ নির্বাচনে জামানত হারানো এ মহান (?) নেতা এবার আওয়ামী ছত্রছায়ায় ‘মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন' যাদুর স্পর্শে এমপি নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতাসীনদের নেকনজরপ্রাপ্তির কোশেশ্ চালিয়ে যাচ্ছেন। '৭৫-পূর্ব রাজনীতিতে আওয়ামী উচ্ছেদযজ্ঞে যে নেতার দু'হাতই রঞ্জিত ছিলো- মাত্র ৩ যুগের মাথায় সে দু'টো হাত করজোড়ের মূর্ছনায় নগদপ্রাপ্তির জোয়ারে কতখানি নীতিহীনতার সয়লাবে ভেসে যেতে পারে, তা দেখলেও বিস্মিত হতে হয়। ইনু মেনন সাহেবদের রাজনীতি সেভাবেই ঘুরপাক খায় প্রাপ্তির অনৈতিক জোয়ারে। যতোখানি মুখ নয়, ততোখানি কথা'র মতো যে রাজনীতিবিদ সময়ের প্রয়োজনেই ইতিহাসের অাঁস্তাকুড়ে মাইনাস হয়ে যাবেন- তার মুখে বরেণ্য রাজনীতিবিদদের মাইনাস করার হুঙ্কার নিতান্তই বেমানান, হাস্যকর ও অজ্ঞতাপ্রসূত বলে মনে হয়। মহাজোটীয় অপর শরীক, জাপা প্রধান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ মহাজোটের তেলেঝোলে সিক্ত হয়েও সময় সময় ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করছেন সমূহ গণআন্দোলন সৃষ্ট গণবিস্ফোরণ থেকে পিঠ বাঁচাতে। নিজের ব্যাংক-বীমার মালিকানাপ্রাপ্তি, দলীয় নেতাকর্মীদের মন্ত্রিত্ব ও সংদদীয় কমিটি প্রধান করেও ‘বাসায় খুন, বাইরে গুম' তত্ত্বের উদ্ভাবক হয়ে বিরোধী জনমনে আসন গাড়তে যারপরনাই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। জোট না ছেড়ে সামনের নির্বাচন এককভাবে করার ঘোষণা মহাজোটীয় শাসনের ব্যর্থতার দায়ভার থেকে তাকে মুক্তি দেবে না- এ কথা একটি শিশু মাত্রই বুঝে! আগাম আশঙ্কায় আশঙ্কিত এ সাবেক স্বৈরশাসক ক্ষমতার শেষার্ধে এসে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠক শেষে জনমনে আসন গাড়তে একবার ফেনী নদীতে বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে কিংবা তিস্তা নদীর পানি বণ্টন ইস্যুতে লংমার্চের মতো কর্মসূচি দিচ্ছেন! কলুষিত রাজনীতিতে ভোট ডাকাতির প্রবক্তা এবং রজনীতির পবিত্র অঙ্গনে সুন্দরী ললনা তথা , ইভা মরিয়ম বা বিদিশাদের অবতারণার ক্লেদাক্ত রাজনীতির শেষাংশে বোধ হয় শুচিশীলতা তৈরি হচ্ছিল বয়সের ন্যুব্জতার জন্য। কালের বিবর্তনে মানুষ অনেক কিছুই ভুলে যায়। ভুল থেকে শুদ্ধতার চর্চা থাকতে হবে- প্রচেষ্টা থাকবে ভালো কিছু করার। কিন্তু রাজনৈতিক সুবিধাবাদ সে পরিবেশ তৈরি হতে দিচ্ছে না। ইদানীং এরশাদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে ‘অনির্বাচিত সরকার' হিসেবে অভিহিত করে যুদ্ধের ঘোষণা দিচ্ছেন। আন্দোলনের প্রবল জোয়ারে যখন নির্দলীয় সরকারের তত্ত্বাবধানে ‘জাতীয় সংসদ' নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে- তখন তিনি সুরসুর করে নির্বাচনে অংশ নেবেন, এ কথা কিন্তু নির্দ্বিধায় বলা যায়।
বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন এখন আন্তর্জাতিক উদ্বেগে পরিণত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার বিষয়ক বার্ষিক রিপোর্ট, এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসমূহ রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারি মদদে ক্রমাগত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অসংখ্য ঘটনা উল্লেখ করে তা নিরসনের পরামর্শ দিয়েছে। লন্ডন ভিত্তিক প্রভাবশালী সাময়িকী ‘দি ইকোনমিস্ট' বাংলাদেশের ‘‘প্রধানমন্ত্রী দেশকে এক বিপদজনক পথে নিয়ে যাচ্ছেন’’ (দ্য প্রাইম মিনিস্টার সেটস্ দ্য কান্ট্রি) অন এ ডেঞ্জারাস পাথ) শিরোনামে প্রতিবেদন ছেপেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সংসদ নির্বাচনের ১৮ মাস আগে বাংলাদেশের রাজপথে প্রতিবাদ সমাবেশ হচ্ছে। বিরোধী দলের নেতাদের জেলে পাঠানো হয়েছে এবং ক্ষমতার দ্বনেদ্ব গুম ও খুন বেড়েছে। আগামী নির্বাচন কার অধীনে হবে এবং স্বচ্ছ হবে কিনা- তা নিয়ে বিবাদ দেখা গেছে। অনেক পর্যবেক্ষক সন্দিহান হয়ে পড়েছেন যে দেশটিতে আদৌ সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হবে কিনা? এদিকে বাংলদেশে খাদ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, ব্যাপক লোডশেডিং এবং নতুন রাস্তা নির্মাণের প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়া নিয়ে বিক্ষোভ হচ্ছে বলে দি ইকোনমিস্ট জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া সকল ব্যর্থতার জন্য শেখ হাসিনার সরকারকে দায়ী করে বলেছেন যে, সব কিছুর জন্য সরকার দায়ী। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিরোধী দলের একজন তরুণ নেতাকে (ইলিয়াস আলী) এক মাস আগে অপহরণ করা হয়েছে এবং সম্ভবত তাকে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে আরো দু'জনকে হত্যা করা হয়েছে। দি ইকোনমিস্ট আরো জানিয়েছে, বিরোধী দলের শীর্ষস্থানীয় ৩৩ নেতাকে অগ্নি সংযোগের সাজানো মামলায় জেলে পাঠানো হয়েছে। বেগম জিয়া বলেছেন, প্রায় ৩ হাজার নেতাকর্মীকে ইদানীং গ্রেফতার করা হয়েছে। এটা শুধু ভীতি প্রদর্শনের জন্য নয়- আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য করা হয়েছে। সংকটের ঘনঘটা আরো তীব্রতর হচ্ছে। কয়েক মাস পূর্বে আরো অনেক রহস্যজনক হত্যাকান্ড ঘটেছে, সৌদী কূটনীতিককে হত্যা করা হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন নেতা আমিনুল ইসলামকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুরোপুরি আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করছে না। শুরুতে এই বিচার প্রক্রিয়ায় অনেক ত্রুটি ছিল, তার কিছু কিছু সংশোধন করা হলেও এখনো অনেক সমস্যা রয়ে গেছে এবং এই ট্রাইব্যুনাল আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করতে পারছে না। প্রতিবেদনের এ্যামনেস্টির বাংলাদেশ বিষয়ক গবেষক আববাস ফয়েজ বিবিসি বাংলাকে সরাসরি বলেছেন, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এখনো আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হতে পারেনি বলে তারা মনে করেন। এ্যামনেস্টি বাংলাদেশে বিরোধী দলের ওপর সরকারি নির্দেশে পুলিশ ও পেটোয়া বাহিনীর নির্মম নির্যাতন, ক্রস ফায়ার, গুমসহ আইন-শৃক্মখলা বাহিনীর পোশাক পড়া গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের যথেচ্ছ রাজনৈতিক নেতাকর্মী, ট্রেড ইউনিয়ন নেতা ও মানবাধিকার কর্মী অপহরণ এবং পরবর্তীতে র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক অস্বীকার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে মন্তব্য করেছে। গত ২৪ মে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিষয়ক দফতরের ‘বার্ষিক মানবাধিকার রিপোর্ট' ঢাকাস্থ আমেরিকান দূতাবাস প্রকাশ করেছে, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির তীব্র সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছেন যে, সরকার বিরোধী দলসমূহের সমাবেশ করার স্বাধীনতা খর্ব করেছে। এছাড়া রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূর্ণ সহিংসতা সমস্যাকে অধিকতর বাড়িয়ে দিয়েছে। সরকারি পর্যায়ে দুর্নীতি মারাত্মক এক সমস্যা। শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতাও বড় একটি সমস্যা। শ্রমিকদের অধিকার সীমিত করা, শিশুশ্রম, কর্মক্ষেত্রে অনিরাপত্তা রয়েই গেছে। অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ ক্ষমা মারাত্মক এক সমস্যা। নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর বেশির ভাগ সদস্য সাধারণ ক্ষমার অধীনে কাজ করেন। এক্ষেত্রে র্যাবের কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে হত্যাকান্ডের ঘটনার তদন্তে সরকার সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়নি। সরকারি দুর্নীতি ও তার সাথে সম্পৃক্ত সাধারণ ক্ষমা অব্যাহত আছে।' রিপোর্টে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ‘বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করা সত্ত্বেও উচ্চ আদালতে নিয়োগ দিয়েছে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের। অভিযোগ আছে, রাজনৈতিক স্পর্শকাতর অনেক মামলায় তারা বিচার বিভাগীয় সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেন। এতে সমস্যা বেড়েছে বিরোধী দলীয় সদস্যদের ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ সঙ্কুচিত করা হয়েছে।' সরকারি দুর্নীতি প্রসঙ্গে বলা হয়, ‘‘বাংলাদেশে দুর্নীতি বিরোধী আইন ও বিধি বিধান থাকলেও সরকার তার যথাযথ প্রয়োগ করে না। সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকেই দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এখানে দুর্নীতি করলে শাস্তি হয় না। টিআইবি দুর্নীতি দমন কমিশনকে ‘দন্তহীন বাঘ' আখ্যা দিয়েছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার আগে শাসক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যাবতীয় মামলা আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
০ ০ ০
বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর একশ্রেণীর পরজীবী বুদ্ধিজীবী দেশের সকল দলমত নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্যের বিরুদ্ধে ক্রমাগত ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য যেন তাদের ধাঁচে সয় না। স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ ধূয়াতুলে জাতিকে বিভাজিত করে রাখা হয়েছে- সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদী শক্তির ক্রীড়নক হিসেবে। এশিয়া মহাদেশের ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া আগ্রাসী মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সামরিক ধ্বংসযজ্ঞ রুখে দিয়ে একযুগ ও তদুর্ধ সময়ের রক্তাক্ত যুদ্ধ শেষে দেশ পরাধীনতা মুক্ত করেছিল। তারা সব বিভাজন ভুলে দেশ গড়ার মহতি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রবৃদ্ধির সমতালে এগিয়ে যাচ্ছে। এশিয়ার তারা ‘ইমাজিং টাইগার' এ ভূষিত হচ্ছেন। ব্যতিক্রম শুধু বাংলাদেশে। একশ্রেণীর পত্রপত্রিকা, মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবী লেখকের এক বিশাল অংশ বিভেদের এ বীজ রোপণ করেই চলেছেন। গত ২৫ মে'র দৈনিক প্রথম আলোতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল ‘রাজনীতি নিয়ে আমার ভাবনা-১' নিবন্ধে লিখেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী' জামায়াতের ছাত্র সংগঠনের কম বয়সী তরুণেরা ছাত্র সংগঠন কেমন করে করে? তাদের দেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখার কথা, দেশের জন্য লাগাম ছাড়া ভালোবাসার কথা, ২১ ফেব্রুয়ারিতে ফুল দিয়ে শহীদ মিনারে প্রভাত ফেরীর কথা'। নিবন্ধ পড়ে মনে হচ্ছিলো, ছাত্রশিবিরে যোগ দিলে যেন দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখা যায় না, লাগাম ছাড়া দেশকে ভালোবাসা যায় না। অনাদর্শের ঠুলি চোখে দিয়ে বিদ্বেষভাবাপূর্ণ লেখনিতে এর থেকে ভালো (?) মন্তব্য আর কি আশা করা যাবে অধ্যাপক সাহেবের লেখনি থেকে?
পাদটীকা : ২৮ মে, ২০১২ রাত ৯.২০ মিনিট। পঞ্চাশ টাকা ভাড়া চুকিয়ে সস্ত্রীক ফিরছি রিকশায়, শ্যামলী থেকে কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ড গন্তব্যে। একটি কালো ট্যাক্সী ক্যাব মুহূর্তে ছিনিয়ে নিল স্ত্রীর ভ্যানিটি ব্যাগ। ভিতরে ছিল ২টি মোবাইল সেট ও পাঁচশত টাকা। ঘটনার আকস্মিকতায় সকলেই হতভম্ব! মনে পড়লো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অমৃত বচন- ‘আগের যে কোন সময় থেকে এখনকার আইন-শৃক্মখলা পরিস্থিতি উন্নততর।'
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন