রবিবার, ২৪ জুন, ২০১২

বিএনপির আন্দোলন ও আওয়ামী লীগের কটাক্ষ


ড. আ বু এন এম ও য়া হি দ
ফখর“দ্দীন-মইন উদ্দিন সরকারের সময়ে বহুবিধ চাপের মুখে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি রীতিমতো ক্ষতবিক্ষত ও লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। দুই বছর নির্যাতন ভোগের পর দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজমান ব্যাপক বিশৃংখলা, আন্তঃকোন্দল, পারস্পরিক সন্দেহ ও অবিশ্বাসসহ পরাজয়ের সমূহ আশংকা নিয়েই শেষ পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের মাঠে নামতে হয়। কারণ এর বিকল্প কোন পথ খোলা ছিল না। খালেদা জিয়া হয়তো আরেকটু ভালো ফল আশা করেছিলেন। কিš‘ আশারও তো একটা যুক্তিযুক্ত ভিত্তি থাকতে হয়। আমার মতে, অব¯’ার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনে তার ফলাফল এতটা খারাপ হয়নি, যদিও তিনি সংসদীয় সিট পেয়েছেন মাত্র ৩২টি। এখানে একটি কথা অবশ্যই বলা প্রয়োজন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভোট ও সিটের অংকের মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক। সংসদে সিট ১০ শতাংশ পেলেও নির্বাচনে বিএনপি ভোট পেয়েছে এক-তৃতীয়াংশের ওপরে। সেই হিসেবে ওই নির্বাচনে খালেদা জিয়ার পরাজয়কে যত বড় করে দেখানো হয়, আসলে তা তত বড় নয়। 
বাস্তবতার বিচারে এ পরাজয়কে শোচনীয়ই বলতে হয়। সে যা হোক, পরাজয়ের পরও প্রথম থেকে বিএনপি নবনির্বাচিত সরকারের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। মহাজোট সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে তারা প্রতিনিধি পাঠায় এবং সংসদের প্রথম অধিবেশনেও যথারীতি যোগ দেয়। কিš‘ এতদিনের শত্র“ শত্র“ খেলা কি আর সহজে ভোলা যায়? প্রতিশ্র“তি দিয়েও শেখ হাসিনা বিরোধী দলকে ডেপুটি স্পিকারের পদটি ছেড়ে দিলেন না। বিটিভিতে তাদের শপথ অনুষ্ঠান প্রচার করতে দিলেন না। বিএনপিও সামনের কাতারে সিট বণ্টনের অজুহাতে সংসদ থেকে বেরিয়ে এলো। রাজনীতি আবার এসে পুরনো ঘেরাটপে বন্দি হল। ফখর“দ্দীন-মইন উদ্দিন সরকারের প্রচেষ্টা, কলাম লেখকদের লেখা ও সুশীল সমাজের সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, গোলটেবিল বৈঠক, আলোচনা-সমালোচনা, বক্তৃতা-বিবৃতি, শেষ রাতের টকশোÑ কোন কিছুতেই কিছু হল না। দেশের রাজনীতি যে তিমিরে ছিল সে তিমিরেই রয়ে গেল। 
হামলা, মামলা, উ”েছদ, দলীয়করণ, নাম বদলের ম”ছব চলতে থাকল। আর বাগাড়ম্বরের কথা নাই বা বললাম। এসব কারণে দু’দলের মধ্যে গতানুগতিক প্রক্রিয়ায় আবার শুর“ হল নিত্যনৈমিত্তিক ঠেলাঠেলি, টানাহ্যাঁচড়া। সংসদ অকার্যকর ছিল, তা-ই রইল। জনগণ সš‘ষ্ট না হলেও এ অব¯’াকে কবুল করা ছাড়া তাদেরই বা করার কী আছে। শত্র“-শত্র“, আন্দোলন-আন্দোলন খেলা আবার শুর“ হল। এ বিরোধিতা ও সংঘাত নতুন মাত্রা পেল যখন পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ একতরফাভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যব¯’া রহিত করল। এবার সরকারবিরোধী প্লাটফরমে জনগণ এসে বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে শুর“ করল। 
এ পরি¯ি’তিতে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে আন্দোলন বেগবান করা ছাড়া বিএনপির সামনে আর কোন পথ খোলা রইল না। আন্দোলন নরম-গরম গতিতে চলতে লাগল। এক পর্যায়ে এসে বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরা বলতে লাগলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটাব।’ সরকারদলীয় নেতা-নেত্রীরা কথার খেলায় পিছিয়ে রইলেন না। তারা বলতে লাগলেন, ‘বিএনপি তো আন্দোলন জমাতে পারছে না, পারবে কেমন করে? ইস্যু থাকলে তো?’ কেউ আবার বললেন, ‘গণঅভ্যুত্থান করবে কী করে? বিএনপি তো আন্দোলনেরই গ্রামার জানে না।’ আওয়ামী লীগের কোন কোন নেতা আরও আগ বাড়িয়ে বললেন, ‘আমাদের আন্দোলনের ভয় দেখাবেন না, আন্দোলন কেমন করে করতে হয় তা আমরা জানি। আপনারা হালুয়া-র“টির ভাগাভাগি ছাড়া আর কিছুই জানেন না’ ইত্যাদি, ইত্যাদি। 
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস আন্দোলন, সংঘাত, সংগ্রাম ও যুদ্ধের ইতিহাস। এ দেশের মানুষ তাদের ন্যায্য রাজনৈতিক অধিকারটুকু বারবার কিনেছে চড়া দামে, অর্জন করেছে রক্ত দিয়েই। এরই ধারাবাহিকতায় তারা চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকার করেছে ১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে। ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের রাজনীতি যেসব সময়ে এসে বড় বড় বাঁক নিয়েছে তা হলÑ ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের ভূমিধস বিজয়, ১৯৬৯ সালের আইয়ুব-মোনায়েমবিরোধী গণআন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ, ১৯৭৫ সালের শোকাবহ পটপরিবর্তন, ১৯৯০ সালের এরশাদবিরোধী গণআন্দোলন, ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন, ২০০৬ সালের মহাজোটের প্রাকনির্বাচনী আন্দোলন ইত্যাদি। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় আমার জš§ হয়নি। দু’বছর পর যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনের সময় আমি মায়ের কোলে ছোট্ট শিশু। তার পরের সব আন্দোলনই আমার চোখে দেখাÑ কিছু দেশে আন্দোলনের মাঝে থেকে, কিছু বিদেশে থেকে খবরের কাগজ পড়ে যতটা সম্ভব বোঝার চেষ্টা করেছি। ওই সব ঐতিহাসিক আন্দোলন ও অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির বর্তমান কৌশলের পরিণতি কী হবে বা হতে পারে সে সম্পর্কে আমার কিছু ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ ও মতামত পাঠকদের সঙ্গে শেয়ার করতে চাই। 
বাংলাদেশের রাজনীতির সব বাঁক ও তার তাৎপর্য আমার এ নিবন্ধের জন্য প্রাসঙ্গিক নয়। তাই আমি দু’একটির বিশ্লেষণ দিয়ে উপসংহার টানব। ১৯৬৯ সালের আইয়ুব-মোনায়েমবিরোধী গণআন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থান স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্র প্র¯‘ত করে দেয়। এর সঙ্গে মোটামুটি সমানভাবেই সম্পৃক্ত ছিল সারাদেশের গ্রাম ও শহরের মানুষ। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে হলেও এ আন্দোলনে মওলানা ভাসানী ও তার দল, ন্যাপ (মোজাফ্ফর) এবং ছাত্র-যুব সমাজের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুর“ত্বপূর্ণ। ১৯৭৫ সালের পটপরিবর্তন একটি জাতীয় শোকের বিষয়। এত বড় বিয়োগান্ত ঘটনার পরও আওয়ামী লীগের পক্ষে সারাদেশের কোথাও কোন প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। এখানে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তমের কথা প্রসঙ্গক্রমে এসেই যায়। তিনি একা যা করার চেষ্টা করেছেন, আজকের আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতার কাউকে তার এক আনাও করতে দেখা যায়নি। বরং বাস্তবতা হল এই যে, খন্দকার মোশতাকের সহযোগীদের বেশির ভাগই ছিলেন বাকশাল তথা আওয়ামী লীগেরই নেতা-নেত্রী। তাদের অনেকে আবার আওয়ামী লীগে ফিরেও এসেছিলেন এবং কেউ কেউ হয়তো এখনও রীতিমতো বুক ফুলিয়ে দলীয় রাজনীতিতে দাপিয়ে বেড়া”েছন। ১৯৭৫ সালে বাকশাল তথা আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে ছিটকে পড়লেও বাংলাদেশের মানুষের স্মৃতি বা মন থেকে একেবারে মুছে যায়নি। দীর্ঘ ২১ বছর পর হলেও প্রাচীন এ দলটি আবার ফিরে আসে ক্ষমতায়। এখানে শেখ হাসিনার সাহস, ধৈর্য, আÍপ্রত্যয়, সাংগঠনিক দক্ষতা, নেতৃত্ব, নিরলস পরিশ্রম ইত্যাদির প্রশংসা না করে উপায় নেই।
১৯৯০ সালের গোড়ার দিকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনকেও গণঅভ্যুত্থানই বলা যায়। ওই সময় আমি দেশে ছিলাম না। তখনকার রাজনীতিকে বিদেশ থেকে যতটা দেখেছি ও বুঝেছি তাতে আমার কাছে মনে হয়েছে, পরবর্তী পর্যায়ে আরও অনেকে লিখেছেনও, সেটা ছিল শহরভিত্তিক। শহরভিত্তিক কিংবা গ্রামভিত্তিক যাই হোক, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জনতার আন্দোলনে ক্ষমতা হারালেন। সংসদে তার সদস্য সংখ্যা নেমে এলো ৩০-এর কোঠায়। রাজনীতিতে তিনি টিকে আছেন এবং যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিনই হয়তো টিকে থাকবেন, তবে এভাবেই। এককভাবে ক্ষমতায় আসার কোন সম্ভাবনা নেই। 
এবার আসি ১৯৯৬ সালের বিএনপিবিরোধী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন প্রসঙ্গে। এটাও ছিল একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক আন্দোলন। দেশের রাজনীতিতে আরেকটি মাইলফলক এবং একেও একটি গণঅভ্যুত্থানই বলা যায়। তৎকালীন ঢাকার মেয়র মোহাম্মদ হানিফের নেতৃত্বে ওই আন্দোলনে জনতার মঞ্চ একটি অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। সরকারি সার্ভিস র“লের তোয়াক্কা না করে ড. ম খা আলমগীর তার দলবল নিয়ে যখন ওই মঞ্চে গিয়ে উঠলেন, তখন আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ হয়। আন্দোলন সফলতার মুখ দেখে এবং এক লাফে ড. ম খা আলমগীর আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়ে শেখ হাসিনার অনেক কাছে চলে এলেন। ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক আন্দোলনের মুখে গোয়ার্তুমি করে বিএনপির কোন লাভ হয়নি। কিš‘ বিষয়টি যখন তারা বুঝতে পারে, তখন বড্ড দেরি হয়ে গেছে। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্র“য়ারির নির্বাচনে বিএনপি পুরোপুরি জনবি”িছন্ন হয়ে পড়ে। নির্বাচনে ১৫ শতাংশ লোককেও তারা ভোট কেন্দ্রে নিতে পারেনি। নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। তাই খালেদা জিয়াকে অবশেষে তত্ত্বাবধায়কের তেতো বড়ি অনি”ছাতেই গিলতে হল। এখানে একটি মজার ব্যাপার হল, ১৫ ফেব্র“য়ারির নির্বাচনে বিএনপি ১৫ শতাংশ লোকও আনতে পারেনি, তথাপি কয়েক মাসের ব্যবধানে তত্ত্বাবধায়ক পরবর্তী নির্বাচনে জনগণ খালেদা জিয়া ও তার দলকে শাস্তি দিয়েছে কিš‘ প্রত্যাখ্যান করেনি। নির্বাচনের পরে দেখা গেল, বিএনপি ১১৬টি সিট পেয়ে সংসদে সর্বকালের সর্ববৃহৎ বিরোধী দল গঠন করেছে। 
২০০১ সালে বিএনপি ফের ক্ষমতায় এসে বেশকিছু কঠিন ও মারাÍক অভিযোগের মুখোমুখি হয়। তার মধ্যে ধর্মীয় জঙ্গিবাদ দমনে ব্যর্থ হওয়া, হাওয়া ভবনের বাড়াবাড়ি, হত্যা মামলার আসামিদের বিদেশ যেতে সহায়তা দেয়া সর্বোপরি ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার পরে যথাযথ ব্যব¯’া নিতে ব্যর্থ হওয়া ইত্যাদি। এতদসত্ত্বেও আওয়ামী লীগ কার্যকরভাবে কোন ধারাবাহিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। গণঅভ্যুত্থান করে চারদলীয় জোট সরকারকে ফেলে দেয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না। তবে জনগণ সব দেখেছে, খেয়াল করেছে, সেই সঙ্গে খাতায় টুকে রেখেছে। সময়মতো যা করার তা-ই করেছে। নির্বাচনের আগেই আলামত পাওয়া যা”িছল বিএনপির ভাগ্যলিপির। দু’বছর পর সুযোগ যখন এলো, তখন জনগণ আওয়ামী লীগের বাক্স ভরে ভোট দিল। বিএনপি এক ঐতিহাসিক পরাজয় বরণ করে এক চাপ উতরিয়ে নতুন করে আরও কঠিন চাপের মুখে পড়ল। খালেদা জিয়া ভাঙবেন, মচকাবেন না। তিনি সাহসের সঙ্গে শক্ত হাতে ধানের শীষ আঁকড়ে ধরলেন; কিš‘ আন্দোলন জমাতে পারলেন না। তাই বলে কি তিনি ব্যর্থ? আমি তা মনে করি না।
আন্দোলন করতে পারছে না বলে এখন আওয়ামী লীগ নেতা-নেত্রীরা অনবরত বিএনপিকে নিয়ে যে কৌতুক ও কটাক্ষ করছেন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার পর একই কটাক্ষ যে নিজেদেরও পাওনা ছিল, তা তারা বেমালুম ভুলে গেছেন। চারদলীয় জোটের অন্যায়, অবিচার ও দুঃশাসনের বির“দ্ধে তখন তারা কোন জোর প্রতিবাদ গড়ে তুলতে পারেননি। নির্বাচনের পথ চেয়ে তাদেরও বসে থাকতে হয়েছিল। বিএনপিও এখন তাই করছে। জনগণ যেখানে সচেতন, সেখানে ক্ষমতায় যাওয়ার সহজ কোন পথ নেই। কঠিন পথে ধীরে ধীরেই যেতে হয়। তবে এখানে একটি কথা বলা প্রয়োজন। একতরফাভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যব¯’া বাতিল করে দিয়ে আজ আওয়ামী লীগ যে গ্যাঁড়াকলে পড়ল, নির্বাচন এলে তার ফল কড়ায়-গণ্ডায় গুনে নেবে। 
প্রধানমন্ত্রী মাত্র সেদিন স্বীকার করেছেন, আগামী নির্বাচনে তার দল ১৭০টি সিট পাবে। বর্ষীয়ান কলাম লেখক বদর“দ্দীন উমর বলছেন ২৫টি। প্রথম আলোয় সোহরাব হাসান সরাসরি বলেননি, তবে ইঙ্গিতে যা বলতে চেয়েছেন তার মানে এই দাঁড়ায়, জনস্বার্থের প্রতি আগামী দেড় বছর আওয়ামী লীগের সেনসিটিভিটি যদি এ রকমই থাকে, তবে আসছে সাধারণ নির্বাচনে দলটির সিট সংখ্যা ৭৫-এ নেমে আসা অসম্ভব নয়। আমার ব্যক্তিগত ধারণা, বিএনপি আন্দোলন জমাতে পার“ক আর না পার“ক, আওয়ামী লীগ যদি শান্তিপূর্ণভাবে বিএপির সঙ্গে বোঝাপড়ার মাধ্যমে সময়মতো একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে পারে, তাহলে তার প্রাপ্ত সিট সংখ্যা হবে সোহরাব হাসানের কাছাকাছি অর্থাৎ ৭৫। আর যদি নিরপেক্ষ নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে ১৯৯৬ সালে বিএপির মতো গোয়ার্তুমি করে, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রাপ্ত সিট সংখ্যা দ্র“তগতিতে ছুটবে বদর“দ্দীন উমরের কাছাকাছি অর্থাৎ ২৫-এর দিকে। 
অনেকেই বলাবলি করছেন, জনগণ বিএনপিকে হয়তো শেষবারের মতো আরেকটি চান্স দিতে পারে। আমার ধারণাও তাই। তবে এটা আমার মনগড়া কথা নয়। আলামত তাই বলছে। চট্টগ্রামের মেয়র নির্বাচন, হবিগঞ্জের উপনির্বাচন ও কুমিল্লার মেয়র নির্বাচনের ফলাফল এর সাক্ষী। তবে এতে বিএনপির উৎফুল্ল হওয়ারও কিছু নেই। কারণ যে ভোটের ব্যবধানে তারা জিতবে সেটা তাদের বাঁধা ভোট নয়। এটা সুইং ভোট বা নেগেটিভ ভোট। এ ভোট পাঁচ বছর ধরে রাখতে হলে তাদের সুশাসন দিতে হবে, দলীয় এজেন্ডার পরিবর্তে শুর“ থেকেই জনগণের এজেন্ডা নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবতে হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, দলীয় মাস্তানদের লাগাম টেনে ধরতে হবে, ঢাকার যানজট সমস্যা সমাধানে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখাতে হবে, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি সমস্যার সুরাহা করতে হবে। আর তা করতে না পারলে তাদের পরিণতিও আওয়ামী লীগের মতোই হবে। এভাবে দ্বিদলীয় রাজনীতি বাংলাদেশে আর কতদিন চলবে সেটা আল্লাহ মালুম। 
ড. আবু এনএম ওয়াহিদ : অধ্যাপক, টেনেসি স্টেইট ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র
ধধিযরফ২৫৬৯@মসধরষ.পড়স 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন