বুধবার, ২৭ জুন, ২০১২

শূন্যতার রাজনীতিতে নতুন যোগফল কী দাঁড়াবে?

আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী


বহু বছর আগের কথা। ফিদেল ক্যাস্ট্রো একবার কিউবার রাজধানী হাভানা থেকে কোথাও যাচ্ছিলেন। পথে কলকাতায় তাঁর ঘণ্টা দু’য়েকের যাত্রাবিরতি। খবর পেয়ে কলকাতার অনেক সাংবাদিক দমদমের বিমানবন্দরে গিয়ে হাজির। সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ক্যাস্ট্রো তাঁদের একটা প্রশ্ন করেছিলেন। বলেছিলেন, শুনেছি ভারতে কমিউনিস্ট পার্টির সংখ্যা অনেক। এই সংখ্যা কতটা তা জানতে পারি? সাংবাদিকরা জবাব দিয়েছিল, ছোট বড় মিলিয়ে লেফ্ট পার্টির সংখ্যা সতেরোটির কম হবে না। সতেরোটি? বিস্ময়ে ক্যাস্ট্রো চোখ কপালে তুলেছিলেন? তারপর একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বলেছিলেন, তাহলে ভারতে কমিউনিজম ও কমিউনিস্ট পার্টির ভবিষ্যত কী?
ক্যাস্ট্রো এখন বয়োবৃদ্ধ এবং চলাফেরায় প্রায় অক্ষম। তা না হলে কোন কারণে তিনি এখন ঢাকায় এসে যদি শুনতেন, ক্ষমতাসীন মহাজোটে রাজনৈতিক দলের সংখ্যা হচ্ছে চৌদ্দটি এবং বিরোধী চারদলীয় জোট ফুলেফেঁপে হয়েছে আঠারোটি; নির্ঘাত তিনি তাঁর চোখ আরও বেশি কপালে তুলতেন এবং বলতেন, এ দেশে গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কী?
ভাল কথা, আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে গদগদ। কিন্তু ব্যাঙের ছাতার মতো এত দলের যদি উৎপত্তি হয়, তাহলে কোন্টি আসল এবং কোন্টি নকল দল তা বাছাই করা মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। আসলের বদলে তখন চলে নকল গণতন্ত্রের রাজত্ব। যা বাংলাদেশে বহুকাল চলেছে। এক সময় গ্রামের দিকে হিন্দু মেয়েদের নাম আন্নাকালী রাখা হতো। এই নামের উৎপত্তির কারণ জেনে বাংলাদেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রের সঙ্গে তার তুলনা করেছি। 
এক স্বামী-স্ত্রীর সন্তান হয় না। বহু বছর তারা কালীমন্দিরে একটি সন্তানের আশায় ধর্ণা দিয়েছেন। পাঁঠা শিরনি মানত করেছেন। অবশেষে কালীমাতা সাধনায় তুষ্ট হলেন। দম্পতি একটি কন্যা সন্তান লাভ করলেন। দম্পতি খুব খুশি। কিন্তু পরের বছরও তাদের একটি কন্যা সন্তান হলো। তার পরের বছরও। যখন তাদের কন্যা সন্তানের সংখ্যা দশ অতিক্রম করল তখন ভয় পেয়ে ওই দম্পতি একাদশ কন্যার নাম রাখল ‘আর না কালী’। অর্থাৎ আর সন্তান চাই না কালী। ওই আর না কালীরই সংক্ষেপ হচ্ছে আন্নাকালী।
বাংলাদেশেও সম্প্রতি যেভাবে যদু মধু ছদু দ্বারা রাজনৈতিক দল নাম নিয়ে ব্যাঙের ছাতা গজাতে শুরু করেছে, তাতে সাম্প্রতিক কোন রাজনৈতিক দলের নাম আন্নাকালী হলে মন্দ হয় না। দিন দুই হয় ঢাকা থেকে এক বন্ধু টেলিফোনে জানিয়েছেন, মাহমুদুর রহমান মান্নাও এখন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। ইতোপূর্বেই তাঁর এই পাঁয়তারা শুরু হয়েছিল। তখনই তাঁর এই পাঁয়তারা দেখে আমি লিখেছিলাম, এটা পূর্বরাগ-পর্ব। অনুরাগ-পর্ব হয়ত শীঘ্রই শুরু হবে। আমার বন্ধুর দেয়া খবরটি সঠিক হলে বলতে হবে, অনুরাগ পর্বের পরই মিলনের মালা বদল, অর্থাৎ দল গঠন।
মাহমুদুর রহমান মান্না ও ফেরদৌস আহমদ কোরেশীর রাজনৈতিক চরিত্রের মধ্যে একটা মিল আছে। তাঁরা শুধু পলিটিশিয়ান নন, একাডেমিশিয়ানও। এই দু’য়ের মিলনে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ও কাক্সিক্ষত নেতৃত্বের আবির্ভাব ঘটা উচিত ছিল। কিন্তু তা ঘটেনি। মান্না এবং কোরেশী দু’জনেই বহুবার দল ও মত পরিবর্তন করেছেন। ফেরদৌস কোরেশী তো আওয়ামী লীগ, আতাউর রহমান খানের জাতীয় লীগ, জেনারেল ওসমানীর জনতা পার্টি থেকে জিয়াউর রহমানের বিএনপি- কোন দল পরিভ্রমণই বাকি রাখেননি। শেষ পর্যন্ত এক এগারোর অনুগ্রহে ও আনুকূল্যে হোন্ডাপার্টিও (আসল নামটা ভুলে গেছি) গঠন করেছিলেন। 
মান্না সম্ভবত রাজনীতি শুরু করেছিলেন একটি ইসলামী ছাত্র সংগঠনের মাধ্যমে। তারপর ইউটার্ন দিয়ে জাসদ, পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ এবং কিছুকাল ইন্ডিপেন্ডেন্ট থাকার পর এখন নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ। ড. কামাল হোসেন ও ড. ইউনূসের মতো ইনটেলেকচুয়াল পলিটিশিয়ানদের সঙ্গে এই দুই একাডেমিক পলিটিশিয়ানের বড় মিল এই যে, এদের রাজনৈতিক মত ও পথের কোন স্বচ্ছ স্থির কেন্দ্র নেই। নিজেদের সুবিধার জন্য এরা ডানে বাঁয়ে দুদিকেই হেলতে পারেন।
ঢাকার বন্ধুর মুখে শুনেছি, নয়া দল গঠনের প্রস্তুতি পর্ব হিসেবে মাহমুদুর রহমান মান্না একটি সমাবেশ ঘটিয়েছেন এবং নতুন দল গঠিত হলে প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হক এবং প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মূসা দলটির উপদেষ্টাও হতে পারেন। খবরটি এখনও শোনা কথার পর্যায়ে। তবে এবিএম মূসাকে মান্নার সমাবেশে যোগ দিতে দেখা গেছে। বুড়ো বয়সে ভীমরতি না হলে মূসা কোন ভুঁইফোড় রাজনৈতিক দলে উপদেষ্টা হতে যাবেন আমার তা বিশ্বাস হয় না। ব্যারিস্টার রফিকুল হক যেতে পারেন। তিনি তো এমনিতেই বয়স ও অভিজ্ঞতার সুবাদে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিরোধী দলের নেত্রী পর্যন্ত সকলকে সদুপদেশ দিয়ে থাকেন। সুতরাং নতুন পুরনো যাই হোক একটি রাজনৈতিক দলের প্লাটফরম পেলে তিনি আরও নিয়মিত ভাবে সকলকে সদুপদেশ দিতে পারবেন। দল তাঁর মর্যাদা বাড়াবে না। তিনিই নাম গোত্রহীন দলটিকে কিছু মর্যাদা দিতে পারবেন। ইদানীং মাহমুদুর রহমান মান্নার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগও দেখা যাচ্ছিল।
রাজনীতির সঙ্গে যদি নীতিই না থাকে, তাহলে নতুন দল গঠন করে লাভ কি তা আমি জানি না। কেবলমাত্র নিজেকে স্বঘোষিত নেতা বানানো এবং সঙ্গে কিছু সুযোগ সন্ধানী অনুসারী নিয়ে রাজনীতির জল ঘোলা করা ছাড়া আর কোন লাভ হয় না। এই ধরনের দল বা দলনেতারা সাময়িকভাবে কখনও কখনও সফল হন, নেতা বা মন্ত্রী হন। তারপর জনগণের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে ড্রয়িংরুম রাজনৈতিক নেতায় পরিণত হন। মাহমুদুর রহমান মান্না নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের আগে যদি একবার পেছনে ফিরে তাকান, তাহলে বর্তমানে সাইনবোর্ডসর্বস্ব রাজনৈতিক নেতায় পরিণত হয়েছেন এমন বহু নাম তিনি দেখতে পাবেন। তাঁরা তাঁর চাইতে কম খ্যাতিমান ছিলেন না। এখনও খ্যাতিমান। কেউ কেউ আন্তর্জাতিক খ্যাতির অধিকারী।
এঁদের নামের তালিকাটি দীর্ঘ করব না। কয়েকজন প্রধান ব্যক্তির নাম শুধু উল্লেখ করছি। ড. কামাল হোসেন, ড. ইউনূস, ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কর্নেল (অব) অলি আহমদ, সিরাজুল আলম খান, জেনারেল ইব্রাহিম বীরবিক্রম, কাদের সিদ্দিকী, ফেরদৌস কোরেশী। বাকি অনেক নাম উল্লেখ করার মতো নয়। বিএনপির ১৮ দলীয় জোটের মধ্যে এমন দল আছে, যাদের অস্তিত্ব মাইক্রোস্কোপ দিয়ে আবিষ্কার করতে হয়।
এঁরা সকলেই রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন রাজনীতিতে নীতি ও স্বচ্ছতা সৃষ্টির দোহাই পেড়ে। রাজনৈতিক সততা ও স্বচ্ছতার কথা যিনি সবচাইতে বেশি বলেন, সেই ড. কামাল হোসেন তাঁর গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক পদে বসিয়েছেন এমন এক ব্যক্তিকে, যিনি বঙ্গবন্ধু দ্বারা তিরস্কৃত হয়েছিলেন এবং খুনের অভিযোগে শেখ হাসিনার আমলে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। কর্নেল অলি একবার নিজে রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন, ডা. বি চৌধুরীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন এবং সবশেষে আবার বেগম জিয়ার আশ্রয়ে ফিরে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য কাদের সিদ্দিকীকে বলা হতো বাঘা সিদ্দিকী। এখন তাঁকে কেন ব্রিজ (সেতু) সিদ্দিকী বলা হয়, তার কারণ তিনি কাউকে বলেন না। ডা. বি চৌধুরীর দলে তাঁর পুত্র মাহী চৌধুরী ছাড়া আর কোন প্রকৃত অনুসারী আছে বলে আমার জানা নেই। ফেরদৌস কোরেশীর এক এগারোর আমলে গঠিত দলে মানুষের বদলে হোন্ডাবাইকের সংখ্যা ছিল বেশি।
বাংলাদেশে এখনও কিছু প্রকৃত বাম গণতান্ত্রিক দল আছে। তাদের আগের প্রভাব ও শক্তি নেই তার কারণ, কিছুটা আন্তর্জাতিক (সমাজতান্ত্রিক বিশ্ব শিবিরে বিপর্যয়), কিছুটা তাদের মধ্যে অনৈক্য ও বিভ্রান্তি। বাংলাদেশে যতদিন বাম গণতান্ত্রিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী হতে না পারবে, ততদিন পর্যন্ত কমবেশি ভারতের মতো রাজনৈতিক অবস্থা বিরাজ করবে। অর্থাৎ বড় দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যেই রাজনীতির পালাবদল সীমাবদ্ধ থাকবে। ভারতে এ দুটি দলের একটি সেকুলারিস্ট কংগ্রেস এবং অন্যটি সাম্প্রদায়িক হিন্দুত্ববাদী বিজেপি। এ দুটি দলও এখন জোট রাজনীতির ওপর নির্ভরশীল।
বাংলাদেশে অনুরূপ দুটি প্রধান দল হলো, একটি সেকুলারিস্ট আওয়ামী লীগ এবং অন্যটি সাম্প্রদায়িক অথবা সাম্প্রদায়িকতা-ঘেঁষা বিএনপি। এই দুটি দলও রাজনীতিতে জোটনির্ভর। একটি চৌদ্দ দলীয় মহাজোট এবং অন্যটি আঠারো দলীয় জোট। মহাজোটে যেমন অন্যান্য শরিক দলের তেমন কোন প্রভাব ও ভূমিকা নেই, তেমনি আঠারো দলীয় জোটেও একমাত্র জামায়াত ছাড়া বাকিদের ভূমিকা এবগেন্টি ল্যান্ডমর্ডের মতো।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে সততা ও স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে হলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এই দুটি দলেই রিফর্ম ও রিঅর্গানাইজেশন দরকার। এই দুটি দলের মধ্যেই দেশের দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের গডফাদার নব্যধনীরা আশ্রয় নিয়েছে এবং প্রভাব বিস্তার করে রেখেছে। এই দুই প্রভাববলয় ভাঙ্গা কারো পক্ষেই সম্ভব হচ্ছে না। বরং যারা রাজনীতিতে সততা, স্বচ্ছতা ও অসাম্প্রদায়িকতা এবং দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশের কথা বলছেন, তাঁরা সকলেই কেউ পরোক্ষভাবে কেউ প্রত্যক্ষভাবে এই দুই জোটের সঙ্গে জড়িত। অনেকে রাজনীতিতে তৃতীয় ধারা সৃষ্টির কথা বলেন। কিন্তু বহমান দুই ধারার স্রোতেই তাঁরা সকলে সাঁতার কাটছেন।
আওয়ামী লীগকে শোধরাতে হলে তার ভেতরে বসেই কঠোর প্রতিজ্ঞা নিয়ে বর্তমানের দক্ষিণপন্থী ও সুবিধাবাদী কায়েমী নেতৃত্বের বিরুদ্ধে লড়তে হবে। সুযোগ সন্ধানী মনোভাব নিয়ে নিশ্চুপ ঘরে বসে সুযোগের অপেক্ষায় থাকলে চলবে না। বিএনপির বেলাতেও একই কথা। খালেদা জিয়াকে জামায়াতীদের কোলে আরও ঠেলে না দিয়ে, তারেক রহমানের মতো দুর্বৃত্ত নেতৃত্বের জন্য দলের দরজা খুলে না রেখে দলের ভেতরে বসেই ডা. বি চৌধুরী বা অলি আহমদের মতো নেতাদের উচিত ছিল দলটিকে জামায়াত ও সাম্প্রদায়িকতাবাদীদের খপ্পর থেকে মুক্ত করার জন্য ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। তাঁরা তা করেননি। ক্ষমতার লোভে বেগম জিয়া এবং তাঁর পুত্রের প্রতিটি ‘হুইমের’ কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন এবং আত্মসমর্পণ করেও যখন কোন লাভ হয়নি, তখন দল ত্যাগ করেছেন অথবা দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন।
আওয়ামী লীগেও দলের ভেতরে এসেই তার আগেকার স্বচ্ছ ও প্রগতিশীল রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে হবে। হাসিনা-নেতৃত্বকে সঠিক পথে ধরে রাখতে হবে। কারণ এই নেতৃত্বের বিকল্প দেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে এখনও তৈরি হয়নি। যাঁরা স্বচ্ছ ও সুস্থ রাজনীতির নামে এই নেতৃত্বকে আঘাত করতে চাইছেন, নতুন দল গঠন করছেন, তাঁরা নিজেরা অস্বচ্ছ ও অসুস্থ রাজনীতির মধ্যে ডুবে যাচ্ছেন এবং দেশের সেকুলার ও গণতান্ত্রিক শিবিরকেই বিভক্ত ও দুর্বল করার চেষ্টা করছেন। ড. কামাল হোসেন এই স্বচ্ছ ও সুস্থ রাজনীতির ধুয়ো তুলে দেশের রাজনীতিকে আরও বেশি অস্বচ্ছ ও অসুস্থ পরিবেশে ঠেলে দিয়েছেন। নিজেও বিতর্কিত হয়ে গেছেন। বয়সে তরুণ মাহমুদুর রহমান মান্নাও এর ব্যতিক্রম হবেন না।
আমার ধারণা, মাহমুদুর রহমান মান্না যদি সত্যই নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করে, তাহলে বিএনপিরই হয় তো আখেরে লাভ হবে। তাদের জোটে সদস্য সংখ্যা বাড়বে এবং ১৮ দলীয় জোটের বদলে উনিশ দলীয় জোট তৈরি হবে। শূন্য+শূন্য+শূন্য, যোগফল শূন্য। মান্নার দলও এই শূন্যতার রাজনীতিতে যুক্ত হবে।
ল-ন ২৬ জুন, মঙ্গলবার, ২০১২ ॥

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন