ড. আ নো য়া র উ ল্লা হ চৌ ধু রী
সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামের অধস্তন শ্রেণীর তথা গরিব জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য গবেষণা শুর“ করেন। তবে তার এ গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসর“ম ও লাইব্রেরির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। যে জনগোষ্ঠীর ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য তিনি সচেষ্ট হন, তাদের মধ্যে গিয়ে তাদেরই একজন হয়ে তিনি তার গবেষণা পরিচালনা করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অদূরে ‘জোবরা’ নামক গ্রামে তিনি তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুর“ করেন। এরই ফলে কৃষি ব্যাংকের একটি প্রকল্প হিসেবে আজকের গ্রামীণ ব্যাংকের যাত্রা শুর“ হয়। এরপর এ প্রকল্প সম্প্রসারিত হয় টাঙ্গাইল ও অন্য কয়েকটি জেলায়। এ প্রকল্পের সফলতার ধারাবাহিকতায় আশির দশকের প্রথমদিকে গ্রামীণ ব্যাংক প্রকল্প ‘গ্রামীণ ব্যাংকে’ রূপান্তরিত হয়।
এরপর থেকে নিরব”িছন্নভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে। প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর ইউনূস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দিয়ে এর হাল ধরেন। দক্ষ নাবিকের পরিচালনায় সুসংগঠিত সংগঠনটি তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে সমর্থ হয়। ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে গ্রামের গরিব মানুষ বিশেষ করে গরিব মহিলারা চরম দারিদ্র্যকে জয় করে স্বাবলম্বী হওয়ার সংগ্রাম শুর“ করে। অর্থনৈতিক মুক্তির পাশাপাশি শিক্ষা, স্বা¯ে’্যর উন্নতির সংগ্রামও চলতে থাকে।
ধীরে ধীরে এ কর্মসূচির কাহিনী দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি বিশ্বব্যাপী ইতিবাচক সাড়া জাগায়। বহু দেশী-বিদেশী গবেষণা সং¯’া, গবেষকের ওপর স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা পরিচালনা করেন, তুলে ধরেন এর সফলতা ও সীমাবদ্ধতার কথা। এর ওপর গবেষণা পরিচালনা করে কোন কোন গবেষক বিদেশী (পশ্চিমা) বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমফিল, পিএইচডি ডিগ্রিও অর্জন করেন। যে কোন প্রতিষ্ঠানের সফলতার পাশাপাশি সীমাবদ্ধতা থাকাও অস্বাভাবিক নয়। গ্রামীণ ব্যাংকের সফলতার কাহিনী তার ছোটখাটো ব্যর্থতাকে ম্লান করে দিয়েছে। তাই ২০০৬ সালে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। নোবেল পুরস্কার অর্জন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংককে দিয়েছে বিশ্বজোড়া খ্যাতি এবং এ অর্জন বাংলাদেশের জন্য বয়ে এনেছে বিরল সম্মান।
আজ গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণগ্রহীতার সংখ্যা ৮৪ লাখ এবং বছরে ঋণের পরিমাণ প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। ঋণগ্রহীতার প্রায় সবাই গ্রামের দু¯’ মহিলা। গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ নিয়ে তারা উপার্জনক্ষম অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত আছে। দারিদ্র্যকে জয় করার সংগ্রামে অবতীর্ণ আছে। তাই একে খাটো করে দেখার কোন উপায় নেই। আজকের বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে গ্রামীণ ব্যাংকের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
অতি সম্প্রতি বর্তমান সরকার গ্রামীণ ব্যাংকের শুর“ থেকে এ পর্যন্ত নানা বিষয়ে তদন্ত করে সুপারিশ প্রদানের জন্য চার সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেছে। তিন মাসের মধ্যে তদন্ত কমিশনকে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করতে হবে। ড. ইউনূস এ কমিশন গঠনের প্রেক্ষাপটে গ্রামীণ ব্যাংকের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ড. ইউনূসের মতো আমাদেরও মনে প্রশ্ন জেগেছে, এ তদন্ত কমিশন কেন করা হয়েছে? কার স্বার্থে করা হয়েছে? গ্রামীণ ব্যাংকে এমন কী ঘটেছে বা এমন কী পরি¯ি’তির উদ্ভব হয়েছে যে সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় এমন একটি তদন্ত কমিশন গঠন করার প্রয়াস পেল?
সাধারণত বড় ধরনের কোন অনিয়ম, দুর্নীতি, অপকর্ম, বিধি-লঙ্ঘন, চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র কিংবা সহিংস ঘটনার প্রেক্ষাপটে কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা সংগঠনের ক্ষেত্রে এ ধরনের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়; ঘটনা তদন্ত করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের কর্মজীবনে আমি নিজেও ছাত্রহত্যা, প্রশ্ন ফাঁসসহ বহুবিধ ঘটনা তদন্তের জন্য গঠিত কমিটিতে কাজ করেছি। ওইসব তদন্ত কমিটি গঠনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিবিধানকে সমুন্নত রাখা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত দোষীদের শাস্তি বিধান করা।
গ্রামীণ ব্যাংক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হলেও এর ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। প্রতি বছর বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রামীণ ব্যাংক অডিট ও পরিদর্শন করে। গ্রামীণ ব্যাংকে কোন বড় ধরনের অনিয়ম হয়েছে কিংবা এমন কোন চাঞ্চল্যকর নেতিবাচক ঘটনা ঘটেছেÑ সাম্প্রতিককালে বা দূরঅতীতে, এমন কোন সংবাদ আমাদের চোখে পড়েনি। তাহলে এ তদন্ত কমিশন কেন গঠন করা হল? হঠাৎ করে গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকাণ্ড বা এর বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে তদন্ত কমিশন গঠনের এহেন উদ্যোগ জনমনে প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। এহেন উদ্যোগে একথা প্রতীয়মান হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে যে, এ তদন্ত কমিশন গঠন অবশ্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
আজ বাংলাদেশের বহু সরকারি প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দলীয়করণ, সুশাসনের অভাবসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ সম্পর্কে নানা সমালোচনা হ”েছ। হত্যা, গুমসহ কত অপরাধই না সংঘটিত হ”েছ। কিš‘ এসবের তেমন কোন কার্যকর তদন্ত হয়েছে বলে মনে হয় না। সেক্ষেত্রে গ্রামীণ ব্যাংকের বিভিন্ন বিষয়ের তদন্তের প্রয়োজন হল কেন?
গ্রামীণ ব্যাংক ও ড. ইউনূসকে নিয়ে বর্তমান সরকারের কার্যকলাপ পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে যে, নোবেল বিজয়ী বাংলাদেশের গর্ব প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি যেন সরকার অসš‘ষ্ট। এ অসন্তোষের কারণ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইতিমধ্যে সরকারের একটি মহল প্রকাশ করেছে। দুষ্ট লোক বলে, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয় প্রফেসর ইউনূসের জন্য কাল হয়েছে। নোবেল পুরস্কার প্রফেসর ইউনূসকে দিয়েছে বিশ্বজোড়া খ্যাতি, গ্রামীণ ব্যাংক পেয়েছে জগৎজোড়া স্বীকৃতি আর বাংলাদেশ বিশ্বদরবারে পেয়েছে সম্মান ও সুখ্যাতি। কিš‘ এতে বর্তমান সরকারের একটি অংশের হয়েছে গাত্রদাহ। গত বছরের শুর“ থেকেই এ মহলটি প্রফেসর ইউনূস এবং তারই সৃষ্ট এ প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিষোদগার করে আসছে। এমনও বলতে শুনেছি যে, ‘হোয়াইট ওয়াইন আর স্যান্ডউইচ খেলে’ নোবেল পুরস্কার পাওয়া যায়। এ মহলটি এও বলেছে যে, তিনি কোন যুদ্ধে জয়লাভ করে শান্তি এনেছেন, যে নোবেল পুরস্কার পেলেন?
ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে গ্রামের অধস্তন শ্রেণী বিশেষ করে গ্রামীণ মহিলাদের জীবনযুদ্ধ জয়ের যে কাহিনীÑ সে সম্পর্কে এ মহলটি হয় ওয়াকিবহাল নয় অথবা জেনেও না জানার ভান করছে। সারা বিশ্ব যখন এর জয়গানে মুখরিতÑ আমাদের দেশের এ বিশেষ মহলটি তখন শুধু এর প্রতি মুখ ফিরিয়ে নেয়নি, নানা অপবাদে একে তু”ছ-তা”িছল্য করার প্রয়াস পেয়েছে। আমি মনে করি, এরই ধারাবাহিকতায় এ তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। কিš‘ দেশের এমন একটি পরীক্ষিত, কার্যকর প্রতিষ্ঠানকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে না দিয়ে তার গতিরোধ করা কোনক্রমেই সঙ্গত হবে না। দারিদ্র্য ও দুর্যোগের দেশ বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী একটি ইতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হয় ড. ইউনূসের নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির মাধ্যমে। নানা সীমাবদ্ধতা ও সমালোচনা সত্ত্বেও ড. ইউনূস এবং গ্রামীণ ব্যাংকের অবদান অস্বীকার করার মতো বিষয় নয়। স্বভাবতই তিনি আমাদের কাছ থেকে ন্যায্য সম্মান ও মর্যাদা প্রত্যাশা করেন এবং কৃতজ্ঞ জাতি ইতিমধ্যে তাকে যথাযথ সম্মানের আসনেই অধিষ্ঠিত করেছে। কিš‘ সম্মানহানি করার রাজনৈতিক সংস্কৃতির ধারাবাহিকতায় আজ তিনিও আক্রান্ত হয়েছেন। ড. ইউনূসের প্রতি অসম্মান জাতির জন্য বেদনাদায়ক। কেননা, সামগ্রিক বিবেচনায় ড. ইউনূসের অবদানকে কোনক্রমেই খাটো করে দেখার উপায় নেই। গত বছর নানা অজুহাতে প্রফেসর ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অপসারণ করা হয়েছে। মনে রাখা দরকার, ড. ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক একে অপরের অবি”েছদ্য অংশ। এর প্রতিষ্ঠাতাকে তার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান থেকে অপসারণ প্রতিষ্ঠানটির ওপর অত্যন্ত ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে এবং এ ধরনের অপসারণের উদাহরণ জাতির জন্য কখনোই মঙ্গলজনক হতে পারে না। ড. ইউনূসকে ঘিরে যেসব ঘটনা ঘটানো হ”েছ, তা খুবই দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত।
গ্রামীণ ব্যাংক লাখ লাখ দরিদ্র মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে সাহায্য করেছে। ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি আজ শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ কর্মসূচির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমাদের দেশসহ বিভিন্ন দেশে এ কর্মসূচি আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে সফল হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংক এ আন্দোলনের পথিকৃৎ হিসেবে প্রচুর প্রশংসা অর্জন করেছে। আর এর প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর ইউনূস বিশ্বব্যাপী অর্জন করেছেন বিরল সম্মান। তাই তিনি আমাদের গর্ব।
অতএব বর্তমান সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, দয়া করে গ্রামীণ ব্যাংককে সরকারের অধীন¯’ একটি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকুন। সরকারি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হলে গ্রামীণ ব্যাংক কোন পথে অগ্রসর হবে, সেটা অনুমান করতেই ভয় হয়। গ্রামীণ ব্যাংক একটি নিয়ম-শৃংখলার ব্যাংক। সরকারি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হলে নানারকম সংঘাত এর ভেতর দ্র“ত প্রবেশ করার সম্ভাবনা দেখা দেবে। আমাদের দেশে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্দশার খবর কে না জানে? সরকারি প্রতিষ্ঠানের অন্তর্নিহিত দুর্বলতা এবং তার ভাইসেস (ারপবং) যদি গ্রামীণ ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠানকে গ্রাস করে, তাহলে তা হবে অত্যন্ত মর্মান্তিক ও দুর্ভাগ্যজনক। গ্রামীণ ব্যাংকের বর্তমান আইন কাঠামোর পরিবর্তন করে সরকারের নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো হলে এর ভবিষ্যৎ যে বিপন্ন হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক গ্রামের ঋণগ্রহীতা দরিদ্র মহিলারা। তারা তাদের মালিকানা ছেড়ে দেবেন না। এ ব্যাংকের যে আইন-কানুন, বিধিবিধান রয়েছে এবং যেভাবে এর কার্যক্রম পরিচালিত হ”েছ, তা সন্তোষজনক প্রতীয়মান হয়েছে। এগুলো নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এ পর্যায়ে এসেছে। অতএব কমিশনের দোহাই দিয়ে এর বিধিবিধান ও কাঠামো পরিবর্তন করে একে দুর্বল করার কোন অর্থ হয় না। এটি সরকারের তথা কারও জন্য মঙ্গলকর হবে না।
গ্রামীণ ব্যাংক গত তিন দশক ধরে এর বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের সংগ্রামে লিপ্ত আছে। বিশ্বের বহু দেশ এতে অনুপ্রাণিত হয়ে তাদের দেশেও এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে কাক্সিক্ষত সাফল্য অর্জন করেছে। অতএব কোন অজুহাতেই গ্রামীণ ব্যাংকের বর্তমান কাঠামো পরিবর্তন করে এর কর্মকাণ্ডকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা ঠিক হবে না।
ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং সমাজবিজ্ঞানী ও নৃ-বিজ্ঞানী
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন