বুধবার, ৯ মে, ২০১২

হিলারির মমতা দর্শন





ড. আ বু এন এম ও য়া হি দ

সম্প্রতি কয়েকজন বিশেষ ও গুর“ত্বপূর্ণ বিদেশী অতিথি ঢাকা সফর করে গেলেন। প্রথমে মে মাসের গোড়ার দিকে এলেন জাপানের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী কাতসুই ওকাদা। জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বলতে গেলে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক পর্যায়েই সীমাবদ্ধ। তিনি ফিরে যেতে না যেতে তসরিফ আনলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। হিলারি ঢাকায় থাকতেই দিল্লি থেকে ম্যানিলা হয়ে এলেন ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী, বর্ষীয়ান নেতা প্রণব মুখার্জি। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক জাপানের চেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠ, ব্যাপক ও নিবিড়। এ দুটি দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনীতি ও কূটনীতির বাইরে সামরিক ও কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়, নিজ নিজ দেশে সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশের সহায়তা দাবি করে, বিশ্বরাজনীতিতে তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী চীনকে সংযত ও নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশকে সহযোগী হিসেবে পেতে চায়।
বাংলাদেশের তরফ থেকেও এ তিনটি দেশের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ককেই বিশেষ গুর“ত্ব দিয়ে দেখা হয়। তারা সবাই আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তাদের প্রভাব-প্রতিপত্তির কারণে তারা সবাই এ দেশের কাছে মুরব্বি গোছের। তারা সফরে এসে যেভাবে আদেশ-উপদেশ দিয়েছেন, কথা বলেছেন, দান-দক্ষিণা করেছেন, নসিহত করেছেন, তাতে সেটাই প্রতীয়মান হয়। জনসংখ্যা ১৬ কোটি হলেও নিছক ভৌগোলিক অব¯’ান ও অর্থনৈতিক অব¯’ার কারণে বাংলাদেশকে মুরব্বিদের কথা শুনতে হয়, তাদের বিসদৃশ নসিহত বিনা প্রতিবাদে গিলতে হয়। এ দুই কারণ ছাড়াও আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বাংলাদেশের দুর্বলতার আরেকটি হেতু আমার কাছে ধরা পড়ে। জানি না পাঠক সেটাকে কিভাবে দেখবেন। আমার মতে, জাতীয় বিষয়ে ও জাতীয় রাজনীতিতে বাংলাদেশের জনগণের তিক্ত ও সংঘাতময় বিভক্তিকে বিদেশীরা বাংলাদেশের বির“দ্ধেই ব্যবহার করে থাকেন। করে থাকেন বললে ভুল হয়, আসলে আমরাই তাদের সব সময় সে সুযোগ করে দিই। আমার মতে, বিষয়টাকে কোনভাবেই খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। আশা করি, বাংলাদেশের জনগণ বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাববেন এবং দুই জোটের ওপর আরও বেশি কার্যকর চাপ সৃষ্টি করবেন, যাতে অদূর ভবিষ্যতে অন্তত সব ক’টি জাতীয় ইস্যুতে বিদেশীদের সঙ্গে সবাই এক হয়ে এক সুরে কথা বলতে পারেন।
যা হোক, বিদেশী অতিথিদের এ সফর নিয়ে সঙ্গত কারণেই বাংলাদেশের জনমনে এবং মিডিয়ায়ও দেখা গেছে প্রচুর উৎসাহ-উদ্দীপনা, চাঞ্চল্য। সফর শেষ হয়ে গেছে, কিš‘ এখনও চলছে তার জের, চাওয়া-পাওয়ার হিসাব-নিকাশ ও চুলচেরা বিশ্লেষণ। এ নিয়ে প্রতিদিন খবরের কাগজে ছাপা হ”েছ বিশ্লেষণধর্মী লেখা। এ ধারা হয়তো চলতে থাকবে আরও কিছুদিন। এ সফরের শুর“তে গতানুগতিক চিন্তাভাবনার অতিরিক্ত আরও দুটি প্রশ্ন আমার মনের দুয়ারে উঁকি মেরেছে। প্রথমটি হল, একই সময়ে হিলারি-প্রণবের ঢাকা আগমন কি নিছক কাকতালীয় ব্যাপার, না এর মধ্যে অন্য কোন গভীর তাৎপর্য বা মাজেজা আছে? দ্বিতীয় প্রশ্নটি হল, বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের জন্য দিল্লি যাওয়ার আগে কলকাতায় মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে সাক্ষাৎ করা কেন এত জর“রি হয়ে পড়ল?
প্রথম প্রশ্নটির প্রসঙ্গ কাগজে এসেছে, হয়তো বা এ নিয়ে শেষরাতের টিভি টকশোতেও কথাবার্তা হয়েছে। তবে কোন গভীর ও ব¯‘নিষ্ঠ আলোচনা আমার নজরে আসেনি। দ্বিতীয় প্রশ্নটি নিয়ে মিডিয়ায় বা জনমনে কোন চিন্তাভাবনা আছে বা হয়েছে বলে মনে হয় না। এ বিষয়টিও গুর“ত্বপূর্ণ, তথাপি সবার দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে বলেই আমার বিশ্বাস। এ দুটি প্রশ্ন নিয়ে আমি আমার কিছু বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আলাপ করেছি, নিজেও ভেবেছি কিš‘ কোন হদিস পাইনি। না পেয়ে গুগল সার্চ দিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম ওয়ার্ল্ড মিডিয়ায় এসব নিয়ে কোন সংবাদভাষ্য, নিউজ রিপোর্ট কিংবা কোন পত্রিকার কলামে কোন ক্লু পাওয়া যায় কিনা। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও প্রথম প্রশ্নের কোন উত্তর পাইনি। হয়তো বিষয়টি নিতান্তই কাকতালীয়, হয়তো বা নয়, কিš‘ আমাদের মতো আমজনতার পক্ষে জানারও তো কোন উপায় নেই। কিš‘ দ্বিতীয় প্রশ্ন অর্থাৎ হিলারি কেন কলকাতায় মমতার সঙ্গে দেখা করতে গেলেন, তার একটি যোগসূত্র বের করতে পেরেছি বলেই মনে হয়।
পাঠকের জন্য এর একটি ব্যাখ্যা এবং বাংলাদেশের জন্য তার একটি গূঢ় তাৎপর্যও এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করব। বেশ কয়েক মাস আগে, গত বছরের ৫ ডিসেম্বর বিকাশ বাজাজ নামে একজন ভারতীয় সাংবাদিক ইন্টারনেটে একটি রিপোর্ট পোস্ট করেছেন। এতে দেখা যায়, অনেকদিন ধরে আমেরিকার একটি বড় কোম্পানি ভারতের বাজারে ব্যবসার জন্য প্রবেশাধিকার চেয়ে আসছে। সোনিয়া-মনমোহনের কংগ্রেস রাজি হলেও তাদের কোয়ালিশন পার্টনারদের বিরোধিতায় তা এ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি।
মার্কিন যে কোম্পানি ভারতে ব্যবসা করতে চায় সেটা শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, বরং সারাবিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এতে কাজ করে প্রায় ২২ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী। দুনিয়াজোড়া এর রয়েছে ১ লাখ ১৩০টি স্টোর। বছরে কেনাবেচা হয় ৫০ হাজার কোটি ডলারের। যাবতীয় খরচ বাদে মুনাফা হয় দেড় হাজার কোটি ডলারের ওপরে। এ প্রতিষ্ঠান বছরে যত টাকার ব্যবসা করে তা পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ২৩টি দেশ বাদ দিলে, নরওয়ে থেকে শুর“ করে তুভালু পর্যন্ত ছোট-বড় ১৫৯টি দেশের যে কোনটির পৃথক জিডিপি থেকে বেশি। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও লেনদেনের মাপকাঠিতে একই কথা অন্যভাবে বলতে গেলে, এ ১৫৯টি দেশের যে কোনটি থেকে এ কোম্পানি একাই বেশি শক্তিশালী। এ কোম্পানির হেডকোয়ার্টার আমেরিকার কোন উল্লেখযোগ্য বড় শহরে নয়। প্রতিষ্ঠাতার হোম স্টেট আরকানসাস অঙ্গরাজ্যের অজানা-অখ্যাত ছোট্ট গ্রাম্য শহর বেন্টনভিলে। এটা কোন ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি নয়, মাইনিং কিংবা ফার্মিংও এর কর্মপরিধির আওতাভুক্ত নয়। এ কোম্পানি কোন ধরনের পণ্য তৈরি করে না। শুধু অন্যের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে। এ বিশাল কোম্পানি একটি চেইন রিটেল ব্যবসা বা খুচরা বিক্রেতা। এতক্ষণে অনেকে হয়তো বুঝে গেছেন পৃথিবীর এ সর্ববৃহৎ কোম্পানিটির নাম কী। এর নাম ওয়ালমার্ট, যাকে দুনিয়াজোড়া সবাই এক নামে চেনে। ওয়ালমার্টের নামকরণ হয়েছে তার প্রতিষ্ঠাতা স্যাম ওয়ালটনের নামে।
ওয়ালমার্ট, বোয়িং, মাইক্রোসফট, এক্সন-মোবিল, জেনারেল ইলেকট্রিক, জেনারেল মোটরস, ইন্টেল, আইবিএম, ম্যাকডোনাল্ড, কোকাকোলা, গোল্ডম্যান স্যাক্স, ইউনাইটেড এয়ারলাইনস ইত্যাদি সবই আমেরিকার একেকটি আইকনিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আমেরিকানরা তাদের এসব কোম্পানি নিয়ে রীতিমতো গর্ববোধ করে। তবে এখানে একটা কথা বলে রাখা জর“রি মনে করি। অন্য কোম্পানির বেলায় যা-ই হোক, ওয়ালমার্টের প্রতি সাধারণ আমেরিকানদের কিছু নেতিবাচক ধারণা আছে এবং তার কিছু যুক্তিসঙ্গত কারণও রয়েছে। ব্যবসার ব্যাপারে ওয়ালমার্ট খুবই অ্যাগ্রেসিভ, মারমুখো কিংবা নিষ্ঠুরও বলা চলে। তারা তাদের নাম, টাকা ও লবির জোরে অনেক সময় প্রচলিত আইন-কানুনের তোয়াক্কা করে না। নিয়মবহির্ভূতভাবে কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি থেকে বঞ্চিত করে। তারা যেখানেই যায়, সেই গোটা অঞ্চলের পারিপার্শ্বিক ও অর্থনৈতিক চেহারা পাল্টে দেয়। তাদের ব্যবসার পরিমাণ এতই বেশি যে তারা অতি সামান্য মুনাফায় পণ্য বিক্রি করতে পারে, যা তাদের কোন ছোট প্রতিযোগী পারে না। এভাবে ওয়ালমার্ট যেখানে যায় তার আশপাশে দীর্ঘদিনের পুরনো ব্যবসাকে পাততাড়ি গোটাতে বাধ্য করে। এটা আমেরিকার বেশির ভাগ রক্ষণশীল মানুষ পছন্দ করে না। তাই তারা ওয়ালমার্টের দুয়ারও মাড়ায় না।
এ ওয়ালমার্ট ভারতের ক্রমবিকাশমান ও বর্ধিষ্ণু বিশাল বাজারে প্রবেশাধিকার চায়। এজন্য ওয়ালমার্ট কর্পোরেশন ও যুক্তরাষ্ট্র সরকার অনেকদিন ধরে চেষ্টা করে আসছে। এ ব্যাপারে ওকালতিতে আমেরিকার মিডিয়াও সমানভাবে তৎপর। এ মর্মে বেশ কয়েক মাস আগে সিএনএনের প্রাইম টাইম টকশো হোস্ট ফরিদ জাকারিয়া তার জনপ্রিয় সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান জিপিএসে প্রসঙ্গটি তুলে এনেছিলেন। অনুষ্ঠানটি আমি দেখেছি ও শুনেছি। তখন বুঝিনি কিš‘ এখন বুঝতে পারছি ব্যাপারখানা কী। ফরিদ ওই টকশোয় বলছিলেন, ‘ভারতের কৃষক অনেক পরিশ্রম করে, অনেক বিনিয়োগ করে মাঠে মাঠে ফসল ফলায় কিš‘ তাদের সাপ্লাই চেইন, যোগাযোগ, পরিবহন ও মার্কেটিং ব্যব¯’ায় দুর্বলতার আধিক্যে তারা তাদের পরিশ্রমের সুফল পুরোপুরি ভোগ করতে পারে না। অনেক সময় কৃষি অব্যব¯’ার কারণে পাকা ফসল মাঠেই পড়ে থাকে, রোদে শুকায় এবং বৃষ্টিতে ভিজে পচে যায়।’ এ সুযোগে তিনি আরও বলেছিলেন, ‘ওয়ালমার্টকে ভারতের বাজারে ঢুকতে দিলে রাতারাতি এ অব¯’ার উন্নতি হয়ে যাবে। অর্থাৎ ওয়ালমার্ট তার দক্ষ ব্যব¯’াপনা ও সক্ষম সাপ্লাই চেইনের মাধ্যমে সময়মতো মাঠের ফসল মাঠ থেকে কিনে এনে থরে থরে সাজিয়ে রাখবে ওয়ালমার্ট সুপার সেন্টারের সেলফে। কৃষক ন্যায্যমূল্য পাবে। আর তার চেয়েও বড় কথা, ক্রেতা-ভোক্তারা সুলভ দামে পাবেন যাবতীয় কৃষিদ্রব্য ও অন্যান্য ভোগ্যপণ্য।’
এখন অব¯’াদৃষ্টে মনে হ”েছ ওয়ালমার্ট, মার্কিন মিডিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এ চেষ্টা সফল হয়েছে। ভারতীয় সরকারের মূলধারা অর্থাৎ কংগ্রেস রাজি। শুধু বাদ সেধেছেন সরকারের বামপš’ী শরিকরা এবং মমতা ব্যানার্জি। হিলারি মনে করেন, মমতাকে লাইনআপ করতে পারলে বাকি বিরোধীরা সহজেই রাজি হয়ে যাবেন। আর তাই তার এ প্রচেষ্টা। হিলারি ঢাকা থেকে দিল্লি যাওয়ার পথে মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য কলকাতা থামেন। মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যাতে তিনি ভারতের বাজারে ওয়ালমার্টের প্রবেশাধিকারে তার আপত্তি প্রত্যাহার করেন। ফলাফল কী, তা আমরা এখনও জানি না।
এখানে বাংলাদেশের জন্য তিনটি বিষয় লক্ষণীয় ও শিক্ষণীয় রয়েছে। প্রথমত, ওয়ালমার্টকে ভারতের রিটেল বাজারে প্রবেশাধিকার দিতে কংগ্রেস রাজি, কিš‘ তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি ও বামপš’ীরা এটা তাদের দেশের জন্য ভালো মনে করেন না। তাই বাধা দি”েছন। দ্বিতীয়ত, সরকারে তারা সংখ্যালঘু হলেও এ পর্যন্ত আমেরিকার বির“দ্ধে সরকারের এমন গুর“ত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত ঠেকিয়ে রাখতে পেরেছেন। তৃতীয়ত, আমেরিকার মতো পরাশক্তির পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার দেশের একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে বিদেশের একজন আঞ্চলিক নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দ্বিধাবোধ করেননি। এতে তার আÍসম্মানে বা অহমিকায় একটুও বাঁধল না।
কংগ্রেসের ‘হ্যাঁ’ বলার পরও ভারতের দেশপ্রেমিক সরকারি জোটের শরিক নেতানেত্রীরা গররাজি। এখানে ওয়ালমার্ট ও আমেরিকা তাদের ভয় বা লোভ দেখিয়ে প্রভাবিত করতে পারছে না। অথচ বাংলাদেশের বেলা আমরা অহরহ দেখতে পাই, সরকারের কর্তাব্যক্তিরা ঘুষ-বাণিজ্যের মাধ্যমে সহজেই স্বদেশের স্বার্থের বির“দ্ধে অনেক বিদেশী কোম্পানিকে দেশে প্রবেশাধিকার দিয়ে থাকেন। শুধু তাই নয়, কর রেয়াতিও দিয়ে সরকারের বিরাট অংকের ক্ষতির কারণ হয়ে থাকেন। মমতা ব্যানার্জিসহ ভারতের বাম মোর্চার নেতানেত্রীরা যেখানে একটি গুর“ত্বপূর্ণ সরকারি সিদ্ধান্ত ঠেকিয়ে রাখতে পেরেছেন, বাংলাদেশের জোট শরিকদের বেলা সেটা কোন সময়ই সম্ভব হয় না। অবশেষে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ওয়ালমার্টের জন্য যে সংবেদনশীলতা ও স্পর্শকাতরতা দেখিয়েছেন, আমরা এর চেয়েও বড় ও গুর“ত্বপূর্ণ জাতীয় প্রশ্নে আমাদের নেতানেত্রী কিংবা মন্ত্রীদের আচরণে বা ব্যবহারে তেমনটি দেখতে পাই না। ভেবে দেখুন হিলারি-মমতার কথা, তাদের বিবেচনায় নিজেদের দেশের স্বার্থে তারা দু’জনই নাছোড়বান্দা, অনড়, অটল। দেশের স্বার্থে তারা যে কোন দূরত্ব অতিক্রম করতে রাজি। এতে তাদের কোন ক্লান্তি নেই, হয় না তাদের কোন অপমান, তাদের কোন অহমিকা নেই, নেই আÍম্ভরিতা। নিজ নিজ দেশের স্বার্থ তাদের কাছে সবার ওপরে, সবচেয়ে বড়। আশা করি এ থেকে আমাদের রাজনীতিক ও কর্তাব্যক্তিরা কিছু শিখবেন।
আবু এনএম ওয়াহিদ : অধ্যাপক, টেনেসি স্টেইট ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র
ধধিযরফ২৫৬৯@মসধরষ.পড়স

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন