সোমবার, ২১ মে, ২০১২

সুশীল সমাজের নেতৃত্বে পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকার


॥আহমাদ সালাহউদ্দীন॥
ব্র্যাকের চেয়ারপার্সন ‘স্যার’ ফজলে হাসান আবেদ বাংলাদেশের আগামী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকা সফরে এসে এই বার্তা দিয়ে গেছেন এবং তাকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতেও পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাকে প্রয়োজনীয় সমর্থন যোগাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। হিলারি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন অবশ্যই একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে। তবে সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিচারপতিদের নেতৃত্বে না হয়ে এবার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নেতৃত্বে গঠিত হবে। ড. ইউনূস ও আবেদের ঘনিষ্ঠ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। হিলারি ক্লিনটন নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস ও ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ফজলে হাসান আবেদের সঙ্গে বারিধারায় সাক্ষাত করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন। সেখানে ড. ইউনূস ও আবেদ উভয়েই হিলারিকে জানান, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বাংলাদেশের পরবর্তী সংসদ টেকসই হবে না। এই নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দলগুলো অংশও নেবে না। কিন্তু বর্তমান সরকার একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যেখানে শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওই সরকারের প্রধান হবেন। এজন্য শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের শেষার্ধে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করবেন এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানকে পদত্যাগ করিয়ে সংসদের মাধ্যমে হাসিনা নিজেই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হবেন। আর অল্প সময়ের জন্য কোনো উপ-নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হয়ে এসে শেখ রেহানা থাকবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের পূর্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হবে, যেখানে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শেখ হাসিনাই থাকবেন প্রধান। কিন্তু প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল এটা মানবে না বলে হিলারি সুশীল সমাজের নেতৃত্বাধীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়কের পক্ষেই মত দিয়ে গেছেন। জানা গেছে, হিলারির সাথে ওই আলোচনার একটি অন্যতম বিষয় ছিল বাংলাদেশে সমাজতন্ত্র ও মাওবাদের উত্থান সম্পর্কিত। যে সমাজতন্ত্র ও মাওবাদের উত্থান ঠেকাতে পশ্চিমবঙ্গে কাজ করছে মমতা ব্যানার্জী এবং বাংলাদেশে এনজিওগুলো। তারপরেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ তৎপরতা নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। কারণ বাংলাদেশের চারদিকেই সমাজতন্ত্র তথা মাওবাদের শিকড় দিন দিনই প্রসারিত ও শক্তিশালী হচ্ছে এবং বাংলাদেশের দিকেও তা ধাবমান বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে খবর রয়েছে। নেপাল থেকে শুরু করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, আসাম ও সেভেন সিস্টার্সসহ আশেপাশের অন্তত ১২টি রাজ্যে মাওবাদী সমাজতন্ত্রীরা সক্রিয়। অপরপাশে মায়ানমারেও রয়েছে সমাজতান্ত্রিক সরকার। আর সর্বোপরি চীন তো রয়েছেই। বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকেও যুক্তরাষ্ট্র ‘সমাজতন্ত্রী’ বলে মনে করছে। কারণ তারা এবার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নেপথ্যে সমাজতান্ত্রিক নীতি-আদর্শ অনুসরণ করছে এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন তথা রাশিয়ার সাথে নতুন করে সম্পর্ক শক্তিশালী করছে। তাদের এ আর্থিক ও পররাষ্ট্র নীতির কারণে বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য বহুজাতিক সংস্থাগুলোর সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। বিদেশী বিনিয়োগও তেমন আসছে না। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের বর্তমান সরকার রাশিয়ার তেল-গ্যাস কোম্পানী ‘গ্যাজপ্রমে’র সাথে ৫টি গ্যাসকূপ খনন চুক্তি করেছে, রাশিয়ার সাথে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে চলেছে এবং সেনাবাহিনীর জন্য রাশিয়া থেকে কিছু নতুন অস্ত্র কেনার ব্যাপারেও কথাবার্তা বলছে। এ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খুশী নয়। পশ্চিবঙ্গে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে মমতা ব্যানার্জীকে মার্কিনীরা ক্ষমতায় আনতে পারলেও মমতা জনগণকে তেমন কোনো ক্যারিশমা দেখাতে ব্যর্থ হয়ে এখন পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশ-বিরোধী সস্তা প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। আবার আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের বর্তমান মহাজোট সরকারের নীতি-আদর্শের সাথেও মমতার সাম্প্রতিক নীতি-আদর্শের টানাপোড়েন চলছে। সব মিলিয়ে মার্কিনীরা চীন, মাওবাদ ও সমাজতন্ত্র প্রভাবিত এ অঞ্চলে বাংলাদেশের ‘গণতান্ত্রিক’ ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। এ অবস্থায় তারা এমন বিশ্বস্ত প্রতিনিধি খুঁজছেন যারা সমাজতন্ত্রের বলয় থেকে বাংলাদেশকে আলাদা রাখতে পারেন। সে উদ্দেশ্যে তারা এবার অনুগত এনজিওদের নেতৃত্বের প্রতি জোর দিচ্ছেন। আর বর্তমান সরকার বিষয়টি সম্পর্কে পূর্ণ ওয়াকেবহাল বলেই এনজিও নেতৃত্বকে সুকৌশলে বিতর্কিত করে দেয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে।       
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুই মেয়াদের সাবেক ফার্স্টলেডি ও বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন মাত্র ২০ ঘন্টার সফরে বাংলাদেশে আসেন গত ৫ মে বিকেলে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর বিশেষ বিমানটি গত ৫ মে বিকেল চারটায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে স্পর্শ করে। কিন্তু তিনি বিমান থেকে বের হন প্রায় ৫০ মিনিট পর। এ বিষয়ে অর্থাৎ বিমান থেকে ৫০ মিনিট দেরিতে হিলারির নেমে আসা নিয়ে এখন পর্যন্ত কেউ টু শব্দটি করেননি। কূটনৈতিক সূত্রসমূহ জানায়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের সফরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায়। বিশেষ করে রাজনৈতিক উত্তেজনা, আগামী সংসদীয় নির্বাচন, রাজনীতিবিদসহ নাগরিকদের গুমের ঘটনা, মানবাধিকার পরিস্থিতি, গার্মেন্টস খাত ও গ্রামীণ ব্যাংকের অবস্থা, গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের চিন্তাভাবনাসহ অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিই প্রাধান্য পায় বাংলাদেশী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনায়। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় ও কিছু আঞ্চলিক ইস্যুও আলোচ্য সূচিতে ছিল। এক্ষেত্রে কৌশলগত অংশীদারিত্বের রূপরেখা, প্রস্তাবিত ‘ট্রেড এ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম এগ্রিমেন্ট (টিকফা)’, সন্ত্রাস দমনসহ নিরাপত্তা সহযোগিতা, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার মতো ইস্যুও আলোচনায় উঠে আসে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির আমন্ত্রণে হিলারির এ সফর অনুষ্ঠিত হয়। হিলারি ক্লিনটন চীনে কৌশলগত সংলাপে অংশগ্রহণের পর বাংলাদেশে আসেন। এখান থেকে তিনি যান ভারতের কলকাতা ও নয়াদিল্লিতে।
আলোচনায় বাংলাদেশের পরিবর্তন ও সম্ভাবনা    
ঢাকা সফরের দ্বিতীয় দিনে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের চেয়ারপার্সন ‘স্যার’ ফজলে হাসান আবেদ ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যৌথ বৈঠক করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। গত ১৭ বছরে বাংলাদেশের পরিবর্তন, সম্ভাবনা এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারসহ নানা বিষয় এই বৈঠকে স্থান পায় বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন আবেদ ও ইউনূস। ৬ মে রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় বারিধারায় এ বৈঠক শুরু হয়। শেষ হয় সোয়া ১০টার পর। বৈঠকশেষে বেরিয়ে ফজলে হাসান আবেদ সাংবাদিকদের বলেন, “বৈঠকে বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে কথা হয়েছে। কি করলে আমাদের উন্নয়ন হবে, নারীর ক্ষমতা বাড়বে সেসব বিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আলোচনার মূল কেন্দ্র ছিল বাংলাদেশের উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়ন। ফজলে হাসান আবেদ বলেন, বাংলাদেশি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শিগগিরই শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে বলে তিনি আশাবাদী। ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও এ পর্যন্ত অর্জনগুলো নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ১৭ বছর আগে (১৯৯৫ সালে) প্রথম বাংলাদেশে এসেছিলেন হিলারি ক্লিনটন। আমরা সে সময় তাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি, কথাবার্তা হয়েছে। এখন তাদের সন্তানরা আছে, নতুন প্রজন্ম এসেছে। উনি যদি সময় নিয়ে এসে আমাদের গ্রামে যেতে পারতেন, নতুন প্রজন্মর সঙ্গে কথা বলতেন, আমরা আরো খুশি হতাম। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছেন জানিয়ে ইউনূস বলেন, এটা হলে নারীর ক্ষমতায়ন হবে, বাংলাদেশের উন্নয়ন আরো ত্বরান্বিত হবে। আমরা তাকে এটা বলেছি। গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ ইউনূস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও তার স্ত্রী হিলারির পারিবারিক বন্ধু হিসাবে পরিচিত। বয়স উত্তীর্ণ হওয়ার কারণ দেখিয়ে গত বছরের ২ মার্চ গ্রামীণ ব্যাংকের পদ থেকে ইউনূসকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। হিলারির সঙ্গে বৈঠকে গ্রামীণ ব্যাংক প্রসঙ্গ এসেছে কি না জানতে চাইলে ইউনূস বলেন, মাইক্রো ক্রেডিট নিয়ে, গ্রামীণ ব্যাংকের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে আর বিস্তারিত বলতে চাননি তিনি। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সংকটের বিষয়টিও বৈঠকে এসেছে জানিয়ে ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ-নেপাল-মিয়ানমার মিলে একটি ‘এনার্জি নেটওয়ার্ক’ করা গেলে তা একটি বড় ব্যাপার হবে।
১৯৭২ সালে ফজলে হাসান আবেদ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা- বাংলাদেশ রুরাল এ্যাডভান্সমেন্ট কমিটি (ব্র্যাক) প্রতিষ্ঠা করেন, যা বর্তমানে বিশ্বের সর্ববৃহৎ এনজিও হিসেবে স্বীকৃত। আফ্রিকার দক্ষিণ সুদান থেকে দক্ষিণ আমেরিকার হাইতি পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে শিক্ষা, কর্মসংস্থান, ক্ষুদ্রঋণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম রয়েছে ব্র্যাকের। দুই দিনের সফরে শনিবার বিকালে ঢাকায় পৌঁছান হিলারি ক্লিনটন। রাতেই তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি ও বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ওই অনুষ্ঠানে হিলারি ক্লিনটন বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকে ড. ইউনূসের পদ নিয়ে ‘বিরোধের’ বিষয়টি তিনি ওয়াশিংটন থেকে লক্ষ্য করেছেন। তিনি আশা করেন, সরকার এমন কিছু করবে না যাতে গ্রামীণ ব্যাংকের উন্নতি বাধাগ্রস্ত হয়।   
এদিকে দুই দেশের মধ্যে প্রথমবারের মতো গত মাসে অনুষ্ঠিত সামরিক অংশীদারিত্বের সংলাপের পর ৫ মে বাংলাদেশ সফরে আসেন আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। নয় বছরের মধ্যে প্রথম আমেরিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে হিলারির ঢাকা সফরের পর এ অঞ্চলে দেশটির ‘চীন ঠেকাও’ নীতির অনুকূলে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন যুক্ত হতে যাচ্ছে। দুই দেশ একটি যৌথ কৌশলগত ফোরাম গঠনের উদ্যোগ এবং আমেরিকার বিনিয়োগের বিশেষ সুরক্ষায় একটি চুক্তি চূড়ান্ত করেছে। এ দুই উদ্যোগের মাধ্যমে ভবিষ্যতে চীনের আমদানিকৃত জ্বালানির প্রধান সরবরাহ পথে নজরদারি ও বঙ্গোপসাগরে জ্বালানি ব্যবসায়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে চায় আমেরিকা। আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের ‘কৌশলগত সংলাপ ফোরাম’ গঠনের লক্ষ্যে একটি যৌথ দলিল স্বাক্ষর করেছে দুই দেশ। তবে বাংলাদেশে আমেরিকার বিনিয়োগের বিশেষ সুরক্ষায় টিফা’র আদলে প্রণীত ‘বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সহযোগিতা রূপরেখা চুক্তি’ বা টিকফা স্বাক্ষর হয়নি। চুক্তিটি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা তারা নাকচ করেও দেননি।
হিলারি ক্লিনটনের এ সফর বর্তমান সরকারের জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ছিল। বিএনপির গত মেয়াদ থেকে আমেরিকার সঙ্গে শুরু হওয়া ক্রমবর্ধমান কৌশলগত সম্পর্কের আভাস বাস্তবে রূপ দিতে আগ্রহী বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার এ ক্ষেত্রে দুটি ক্ষেত্রে বাধার মুখে পড়ে। একদিকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরিয়ে দেয়া, অন্যদিকে পদ্মা সেতু প্রকল্পে যোগাযোগমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগ। এই নিয়ে দৃশ্যত দুই দেশের মধ্যে নানা কথা চালাচালি দেখা গেলেও হিলারির সফর থেমে যায়নি। বিনিয়োগের বিশেষ সুরক্ষার চুক্তি এবং কৌশলগত অংশীদারিত্বের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর পথে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ও সামরিক সংলাপ ও প্রস্তুতিশেষে সফরে আসেন আমেরিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এর আগে ২০০৩-এর জুন মাসে কলিন পাওয়েল হচ্ছেন দেশটির সর্বশেষ পররাষ্ট্রমন্ত্রী, যিনি বাংলাদেশ সফর করেন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন