র“ হু ল কু দ্দু স
বিশ্বব্যাপী অভিবাসনের মাত্রা এখন সম্ভবত সর্বকালের সর্বো”চ। একদিকে উন্নত বিশ্বে জš§হারের ক্রমবর্ধমান নিুগতি, শ্রমিক বিশেষ করে কায়িক শ্রমনির্ভর সেবা খাতে শ্রমিক ঘাটতি; অপরদিকে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল বিশ্বে ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং কর্মসং¯’ানের ঘাটতি এ প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করছে। তেলসমৃদ্ধ দেশে অবকাঠামো নির্মাণের ঘনঘটাও এই অভিবাসন জোয়ারে সহযোগিতা করছে।
বাংলাদেশীদের অভিবাসন তৎপরতা শুর“ হয় গত শতাব্দীর মাঝামাঝি। এরপর থেকে এর মাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে। এক সময় গন্তব্য ছিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি। এখন বলতে গেলে গন্তব্য সারা বিশ্বে; বিদেশ হলেই হল, যেতে হবে। সম্ভবত বিশ্বের এমন কোন দেশ নেই যেখানে বাংলাদেশী অভিবাসী নেই।
অধিকাংশ বাংলাদেশী বিদেশে যায় দেশে ফিরে আসার জন্য। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিদেশী সরকার অভিবাসী গ্রহণ করে ফিরে যাওয়ার শর্তে। তাদের বিবেচনটা এমনÑ তার“ণ্যের সোনালি সময়টুকু কাজে লাগাও, এরপর ফেরত পাঠিয়ে দাও।
বাংলাদেশের অভিবাসীদের একটা বিরাট অংশ শিক্ষিত ও নিপুণ (দক্ষ) শ্রম খাতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। এদের এক অংশ বিদেশে যায় উ”চশিক্ষা লাভের জন্য এবং সেই সুবাদে দীর্ঘদিন বিদেশে অব¯’ানের সুযোগ ঘটে। ইতিপূর্বে এই শ্রেণীর বিদেশে ¯’ায়ীভাবে অব¯’ানের সুযোগ ছিল। সম্প্রতি তা সীমিত হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন দেশে জাতীয়তাবাদের উত্থান, বেকার সমস্যা বৃদ্ধি এবং প্রবৃদ্ধির ¯’বিরতা এর অন্যতম কারণ। ভারত ও চীন উন্নত বিশ্বের নিপুণ শ্রমিকের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী। সম্প্রতি স্বদেশের উ”চ প্রবৃদ্ধি অনেক ভারতীয় ও চীনা নিপুণ শ্রমিককে দেশে ফেরায় প্রলুব্ধ করেছে। এর ফলও হয়েছে ইতিবাচক। কারণ বিদেশে প্রতিনিয়ত বৈষম্যের শিকার নিপুণ শ্রমিকরা স্বদেশে প্রত্যাবর্তনে সর্বদাই আগ্রহী। বাংলাদেশী নিপুণ শ্রমিকরাও এর বাইরে নন।
বাংলাদেশ তার নিপুণ অভিবাসী শ্রমিকদের একটা বিরাট অংশকে ফেরত পেতে পারত। কারণ বাঙালি চিরকাল ঘরমুখো। নিপুণ শ্রমিকদের দেশে ফেরা যে কোন বিবেচনায়ই দেশের জন্য মঙ্গলজনক। কিš‘ দেশের পরি¯ি’তি তার অনুকূলে নয়। দেশে অভিবাসীরা এবং তাদের পরিবার-পরিজন প্রতিনিয়ত অপরাধী কর্তৃক অত্যাচারিত হ”েছ। অথচ এ অভিবাসীরাই দেশের প্রধান বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহকারী।
এ মুহূর্তে দেশের স্বার্থে সরকার ও জণগণের উচিত অভিবাসী এবং তাদের পরিবার ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এতে অভিবাসীরা দেশে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগে আরও আগ্রহী হবে, যা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।
২.
বিজ্ঞানীরা হিসাব করে দেখেছেন, যদি লোকজন সাধারণভাবে জীবনযাপন করে গড় আয়ুষ্কাল পর্যন্ত বেঁচে থাকে তাহলে প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন ক্যান্সারে আক্রান্ত হবে। ঢাকা নগরীর অধিবাসীরা সাধারণ জীবনযাপন করে না। এখানে বাতাস, পানি ও খাদ্যে ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে। জনসংখ্যার একটা বিরাট অংশ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তামাক এবং অন্যান্য নেশাজাতীয় পদার্থের সংস্পর্শে আসছে। সর্বোপরি সব বয়সের মানুষ রয়েছে প্রচুর মানসিক চাপে। এছাড়া নগরে চিত্তবিনোদনের তেমন কোন ব্যব¯’া নেই বললেই চলে। এই ক্রমাগত মানসিক চাপ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ফলে শরীর সংক্রামক রোগ ও ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার জন্য আরও বেশি উপযুক্ত হয়ে পড়ে। উল্লেখ্য, প্রতি ছয়টি ক্যান্সারের একটি হয় সংক্রামক রোগ থেকে। ঢাকা নগরীতে যারা টানা দশ বছর বসবাস করছেন, তাদের জীবদ্দশায় ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ৩৩ শতাংশ নয়, বরং ৫০ শতাংশ বা তার উপরে। এসব সমস্যার সমাধানে কার্যকর ব্যব¯’া না নিলে অভিবাসীরা দেশে ফিরতে আগ্রহী হবে না।
পশ্চিমা বিশ্বে ক্যান্সার ধরা পড়ে অনেক আগে। বাংলাদেশে ক্যান্সার ধরা পড়ে অনেক বিলম্বে, ক্যান্সার শরীরে ছড়িয়ে পড়ার পর। এর কারণ সাধারণ মানুষ নিয়মিত বার্ষিক চেকআপ করে না এবং এখানকার পারিবারিক বা অভ্যন্তরীণ চিকিৎসকগণ (ভধসরষু ধহফ রহঃবৎহধষ সবফরপরহব ঢ়ৎধপঃরঃরড়হবৎ) ক্যান্সার সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখেন না। সর্বোপরি বাংলাদেশে ক্যান্সার চিকিৎসারও খুবই দৈন্যদশা। ফলে ক্যান্সার শনাক্ত হওয়ার পর রোগীর মৃত্যু হয় অতি দ্র“ত।
দেশে আসন্ন ক্যান্সার আধিক্যের সম্ভাবনাকে কোনভাবেই খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। এ সমস্যার সমাধানে অর্থ ও জনবল বৃদ্ধির প্রয়োজন এ মুহূর্তেই। প্রথমত, ঢাকা নগরীর বায়ু, জল ও খাদ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। খাদ্যে ভেজাল মেশানো হত্যার সমতুল্য। অতএব, এর শাস্তিতেও হত্যার বিধান রাখা প্রয়োজন। ধূমপান, তামাক ও জর্দার ব্যবহার কমানোর জন্য কঠোর ব্যব¯’া নেয়া দরকার। ঢাকার জনসংখ্যা যাতে আর বৃদ্ধি না পায় সেজন্য মহাপরিকল্পনা করা দরকার। দেশের প্রান্তিক চিকিৎসকদের ক্যান্সার শনাক্ত করার জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া প্রয়োজন এবং সর্বোপরি মানুষকে ক্যান্সার বিষয়ে জনশিক্ষা প্রদান করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে আমাদের গণমাধ্যম গুর“ত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
র“হুল কুদ্দুস : জীববিদ্যার সহযোগী অধ্যাপক, ইউটা ভ্যালি ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র
বিশ্বব্যাপী অভিবাসনের মাত্রা এখন সম্ভবত সর্বকালের সর্বো”চ। একদিকে উন্নত বিশ্বে জš§হারের ক্রমবর্ধমান নিুগতি, শ্রমিক বিশেষ করে কায়িক শ্রমনির্ভর সেবা খাতে শ্রমিক ঘাটতি; অপরদিকে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল বিশ্বে ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং কর্মসং¯’ানের ঘাটতি এ প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করছে। তেলসমৃদ্ধ দেশে অবকাঠামো নির্মাণের ঘনঘটাও এই অভিবাসন জোয়ারে সহযোগিতা করছে।
বাংলাদেশীদের অভিবাসন তৎপরতা শুর“ হয় গত শতাব্দীর মাঝামাঝি। এরপর থেকে এর মাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে। এক সময় গন্তব্য ছিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি। এখন বলতে গেলে গন্তব্য সারা বিশ্বে; বিদেশ হলেই হল, যেতে হবে। সম্ভবত বিশ্বের এমন কোন দেশ নেই যেখানে বাংলাদেশী অভিবাসী নেই।
অধিকাংশ বাংলাদেশী বিদেশে যায় দেশে ফিরে আসার জন্য। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিদেশী সরকার অভিবাসী গ্রহণ করে ফিরে যাওয়ার শর্তে। তাদের বিবেচনটা এমনÑ তার“ণ্যের সোনালি সময়টুকু কাজে লাগাও, এরপর ফেরত পাঠিয়ে দাও।
বাংলাদেশের অভিবাসীদের একটা বিরাট অংশ শিক্ষিত ও নিপুণ (দক্ষ) শ্রম খাতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। এদের এক অংশ বিদেশে যায় উ”চশিক্ষা লাভের জন্য এবং সেই সুবাদে দীর্ঘদিন বিদেশে অব¯’ানের সুযোগ ঘটে। ইতিপূর্বে এই শ্রেণীর বিদেশে ¯’ায়ীভাবে অব¯’ানের সুযোগ ছিল। সম্প্রতি তা সীমিত হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন দেশে জাতীয়তাবাদের উত্থান, বেকার সমস্যা বৃদ্ধি এবং প্রবৃদ্ধির ¯’বিরতা এর অন্যতম কারণ। ভারত ও চীন উন্নত বিশ্বের নিপুণ শ্রমিকের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী। সম্প্রতি স্বদেশের উ”চ প্রবৃদ্ধি অনেক ভারতীয় ও চীনা নিপুণ শ্রমিককে দেশে ফেরায় প্রলুব্ধ করেছে। এর ফলও হয়েছে ইতিবাচক। কারণ বিদেশে প্রতিনিয়ত বৈষম্যের শিকার নিপুণ শ্রমিকরা স্বদেশে প্রত্যাবর্তনে সর্বদাই আগ্রহী। বাংলাদেশী নিপুণ শ্রমিকরাও এর বাইরে নন।
বাংলাদেশ তার নিপুণ অভিবাসী শ্রমিকদের একটা বিরাট অংশকে ফেরত পেতে পারত। কারণ বাঙালি চিরকাল ঘরমুখো। নিপুণ শ্রমিকদের দেশে ফেরা যে কোন বিবেচনায়ই দেশের জন্য মঙ্গলজনক। কিš‘ দেশের পরি¯ি’তি তার অনুকূলে নয়। দেশে অভিবাসীরা এবং তাদের পরিবার-পরিজন প্রতিনিয়ত অপরাধী কর্তৃক অত্যাচারিত হ”েছ। অথচ এ অভিবাসীরাই দেশের প্রধান বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহকারী।
এ মুহূর্তে দেশের স্বার্থে সরকার ও জণগণের উচিত অভিবাসী এবং তাদের পরিবার ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এতে অভিবাসীরা দেশে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগে আরও আগ্রহী হবে, যা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।
২.
বিজ্ঞানীরা হিসাব করে দেখেছেন, যদি লোকজন সাধারণভাবে জীবনযাপন করে গড় আয়ুষ্কাল পর্যন্ত বেঁচে থাকে তাহলে প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন ক্যান্সারে আক্রান্ত হবে। ঢাকা নগরীর অধিবাসীরা সাধারণ জীবনযাপন করে না। এখানে বাতাস, পানি ও খাদ্যে ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে। জনসংখ্যার একটা বিরাট অংশ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তামাক এবং অন্যান্য নেশাজাতীয় পদার্থের সংস্পর্শে আসছে। সর্বোপরি সব বয়সের মানুষ রয়েছে প্রচুর মানসিক চাপে। এছাড়া নগরে চিত্তবিনোদনের তেমন কোন ব্যব¯’া নেই বললেই চলে। এই ক্রমাগত মানসিক চাপ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ফলে শরীর সংক্রামক রোগ ও ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার জন্য আরও বেশি উপযুক্ত হয়ে পড়ে। উল্লেখ্য, প্রতি ছয়টি ক্যান্সারের একটি হয় সংক্রামক রোগ থেকে। ঢাকা নগরীতে যারা টানা দশ বছর বসবাস করছেন, তাদের জীবদ্দশায় ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ৩৩ শতাংশ নয়, বরং ৫০ শতাংশ বা তার উপরে। এসব সমস্যার সমাধানে কার্যকর ব্যব¯’া না নিলে অভিবাসীরা দেশে ফিরতে আগ্রহী হবে না।
পশ্চিমা বিশ্বে ক্যান্সার ধরা পড়ে অনেক আগে। বাংলাদেশে ক্যান্সার ধরা পড়ে অনেক বিলম্বে, ক্যান্সার শরীরে ছড়িয়ে পড়ার পর। এর কারণ সাধারণ মানুষ নিয়মিত বার্ষিক চেকআপ করে না এবং এখানকার পারিবারিক বা অভ্যন্তরীণ চিকিৎসকগণ (ভধসরষু ধহফ রহঃবৎহধষ সবফরপরহব ঢ়ৎধপঃরঃরড়হবৎ) ক্যান্সার সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখেন না। সর্বোপরি বাংলাদেশে ক্যান্সার চিকিৎসারও খুবই দৈন্যদশা। ফলে ক্যান্সার শনাক্ত হওয়ার পর রোগীর মৃত্যু হয় অতি দ্র“ত।
দেশে আসন্ন ক্যান্সার আধিক্যের সম্ভাবনাকে কোনভাবেই খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। এ সমস্যার সমাধানে অর্থ ও জনবল বৃদ্ধির প্রয়োজন এ মুহূর্তেই। প্রথমত, ঢাকা নগরীর বায়ু, জল ও খাদ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। খাদ্যে ভেজাল মেশানো হত্যার সমতুল্য। অতএব, এর শাস্তিতেও হত্যার বিধান রাখা প্রয়োজন। ধূমপান, তামাক ও জর্দার ব্যবহার কমানোর জন্য কঠোর ব্যব¯’া নেয়া দরকার। ঢাকার জনসংখ্যা যাতে আর বৃদ্ধি না পায় সেজন্য মহাপরিকল্পনা করা দরকার। দেশের প্রান্তিক চিকিৎসকদের ক্যান্সার শনাক্ত করার জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া প্রয়োজন এবং সর্বোপরি মানুষকে ক্যান্সার বিষয়ে জনশিক্ষা প্রদান করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে আমাদের গণমাধ্যম গুর“ত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
র“হুল কুদ্দুস : জীববিদ্যার সহযোগী অধ্যাপক, ইউটা ভ্যালি ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন