॥ মো: মতিউর রহমান ॥
একটি রাষ্ট্রের সূচনা ঘোষণার মাধ্যমে উত্থান সেনাবাহিনীর একজন মেজরের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ও অবদানের মাধ্যমে হয়ে উঠলেন রাষ্ট্রনায়ক জেনারেল জিয়াউর রহমান। জাতীয় জীবনের বিভিন্ন েেত্র তার অসাধারণ অর্জন জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। তার উৎপাদনমুখী রাজনীতি এবং স্বনির্ভরতার অর্থনীতি বাংলাদেশের মানুষের জীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত করেছে।
জেনারেল জিয়া রাষ্ট্রমতায় আসীন হয়ে জাতিকে একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে মুক্ত করলেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করলেন। অথচ রাজনৈতিক সঙ্কীর্ণতা থেকে তাকে বলা হচ্ছে স্বৈরশাসক। সামরিক আইন জারির অপবাদও তাকে দেয়া হচ্ছে, যদিও সামরিক আইন জারি করেছিলেন অন্যতম আওয়ামী লীগ নেতা খোন্দকার মোশতাক আহমদ।
উৎপাদনমুখী রাজনীতি ও স্বনির্ভর অর্থনীতির দর্শনে ব্রতী হয়ে তিনি ধর্ম, বর্ণ, বাঙালি, অবাঙালি, উপজাতি বা ুদ্র নৃগোষ্ঠী নির্বিশেষে সবাইকে একক রাষ্ট্রীয় পরিচয় প্রদানের ল্েয বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ধারণা প্রবর্তন করলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখার জন্য এর কোনো বিকল্প ছিল না। ‘বাংলাদেশী’ পরিচয়ই এখানকার বাঙালি, অবাঙালি সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে। কিন্তু বাঙালি পরিচয় উপজাতি ও ুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ বাংলাদেশের অবাঙালি নাগরিকদের অন্তর্ভুক্ত করে না। তার এই রাজনৈতিক মতবাদ বা দর্শনে একজন রাষ্ট্রনায়কের দূরদর্শিতা ও বিচণতা প্রতিভাত হয়।
এ দেশের লাখো-কোটি মানুষের স্বপ্নপুরুষ মহান রাষ্ট্রনায়ক জেনারেল জিয়াউর রহমান ‘শত ফুল ফুটতে দাও’ এবং ভলতেয়ারের ‘আমি আপনার মতের সাথে একমত নই কিন্তু আপনার মত প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাণ দিতে পারি’ নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। অথচ তার ‘ ÔI shall make politics difficult for the politicians’ ’ কথাটির অপব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে। যারা সৎ, নির্লোভ এবং প্রকৃত অর্থে জনসেবা করেন, তাদেরকে ল করে তিনি এ উক্তি করেননি। শঠ, দুর্নীতিপরায়ণ ও বাকসর্বস্ব রাজনীতিবিদদের প্রতি ইঙ্গিত করেই তিনি এটা বলেছেন। তিনি বিভিন্ন বক্তৃতা-বিবৃতিতে তার এই উক্তির ব্যাখ্যাও করেছেন। অপর দিকে আজকে সরকার বিরোধী দলকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দমন-নিপীড়নের মাধ্যমে রাজনীবিদদের জন্য প্রকৃত রাজনীতি করা দুঃসাধ্য করে ফেলছে।
জেনারেল জিয়া ছিলেন সাদামাটা জীবনযাপনের অধিকারী; একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক। তিনি দেশের ও জনগণের জন্য যা কল্যাণকর মনে করতেন, তা-ই করতেন। শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক এবং মওলানা ভাসানীর অনেক গুণের সমন্বয় তার মধ্যে ঘটেছিল। তিনি খাদ্যে স্বয়ম্ভর হওয়ার ল্েয কৃষি উপকরণ, পানি সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য খাল খনন কর্মসূচি শুরু করেন যা সারা দেশে অভূতপূর্ব জাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনিই প্রথম ‘স্বনির্ভর’ নামক এক বিশেষ কর্মসূচি চালু করেন এবং তা বাস্তবায়নের জন্য একটি ‘বিশেষ সচিব’ পদ সৃজন করেছিলেন। তার সময় থেকে সারা দেশে বৃরোপণ শুরু হয়। তিনি গ্রামীণ জনগণের অবস্থার পরিবর্তনের জন্য হাঁস-মুরগি এবং গরু-ছাগল পালনের ওপর গুরুত্বারোপ করে উৎসাহ দেন। খেটে খাওয়া কৃষাণ, মজদুর তথা উৎপাদনের সাথে সম্পৃক্ত জনগণের জীবনে অর্থবহ পরিবর্তন আনয়নের ল্েয তিনি আরাম ও বিশ্রাম বিসর্জন দিয়ে গ্রামাঞ্চলের পথঘাটে ঘুরে বেরিয়েছেন এবং মানুষকে কর্মে উদ্বুদ্ধ করেছেন। শিল্প েেত্র জিয়া বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনলেন। দ্রুত প্রবৃদ্ধি তথা শিল্পায়নের ল্েয তিনি শিল্পের বিরাষ্ট্রীয়করণ প্রক্রিয়া শুরু এবং ব্যক্তি খাত উন্মুক্ত করে দিলেন। আজকের বেসরকারি খাতের বিকাশ ও বৃদ্ধির সূচনা কিন্তু তার আমলেই হয়। সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী গার্মেন্ট শিল্প খাতের যাত্রা এবং জনশক্তি রফতানি শুরু তখন থেকেই।
জিয়া যুবশক্তিকে সঠিক পথে পরিচালনা এবং উৎপাদনমুখী করার ল্েয যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং যুব-অধিদফতর সৃষ্টি করেন। একইভাবে মহিলা ও শিশুদের উন্নয়নের ল্েয তিনি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং মহিলাবিষয়ক অধিদফতর ও শিশু একাডেমী গঠন করেন। পররাষ্ট্র েেত্র তিনি ছিলেন সফল রাষ্ট্রনায়ক। তিনি পররাষ্ট্রনীতিতে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করেন। এক দিকে তিনি মুসলিম বিশ্বের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে ব্রতী হন; অন্য দিকে আঞ্চলিক শান্তি ও সহযোগিতা প্রতিষ্ঠার রূপরেখা দেন। যা আজকের ‘সার্ক’। তিনি রূপকথার বংশীবাদকের মতো গোটা জাতিকে এক সম্মোহনী মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন। আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা বা রূপকার হলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।
পরিতাপের বিষয় জাতীয়তাবাদী এই মহান নেতা আধিপত্যবাদী ও সম্প্রসারণবাদী শক্তির ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে অকালে প্রাণ হারালেন। আর জাতি হারাল একজন সৎ, সাহসী, নির্লোভ, দেশপ্রেমিক নেতাকে। জনদরদি জাতীয়তাবাদী এই রাষ্ট্রনায়কের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার নীতি ও আদর্শ অনুসরণ করে তার সুযোগ্য উত্তরসূরি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ সঠিক পথে এগিয়ে যাবেÑ এই হোক আমাদের কামনা।
লেখক : সাবেক সচিব, বাংলদেশ সরকার
একটি রাষ্ট্রের সূচনা ঘোষণার মাধ্যমে উত্থান সেনাবাহিনীর একজন মেজরের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ও অবদানের মাধ্যমে হয়ে উঠলেন রাষ্ট্রনায়ক জেনারেল জিয়াউর রহমান। জাতীয় জীবনের বিভিন্ন েেত্র তার অসাধারণ অর্জন জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। তার উৎপাদনমুখী রাজনীতি এবং স্বনির্ভরতার অর্থনীতি বাংলাদেশের মানুষের জীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত করেছে।
জেনারেল জিয়া রাষ্ট্রমতায় আসীন হয়ে জাতিকে একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে মুক্ত করলেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করলেন। অথচ রাজনৈতিক সঙ্কীর্ণতা থেকে তাকে বলা হচ্ছে স্বৈরশাসক। সামরিক আইন জারির অপবাদও তাকে দেয়া হচ্ছে, যদিও সামরিক আইন জারি করেছিলেন অন্যতম আওয়ামী লীগ নেতা খোন্দকার মোশতাক আহমদ।
উৎপাদনমুখী রাজনীতি ও স্বনির্ভর অর্থনীতির দর্শনে ব্রতী হয়ে তিনি ধর্ম, বর্ণ, বাঙালি, অবাঙালি, উপজাতি বা ুদ্র নৃগোষ্ঠী নির্বিশেষে সবাইকে একক রাষ্ট্রীয় পরিচয় প্রদানের ল্েয বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ধারণা প্রবর্তন করলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখার জন্য এর কোনো বিকল্প ছিল না। ‘বাংলাদেশী’ পরিচয়ই এখানকার বাঙালি, অবাঙালি সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে। কিন্তু বাঙালি পরিচয় উপজাতি ও ুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ বাংলাদেশের অবাঙালি নাগরিকদের অন্তর্ভুক্ত করে না। তার এই রাজনৈতিক মতবাদ বা দর্শনে একজন রাষ্ট্রনায়কের দূরদর্শিতা ও বিচণতা প্রতিভাত হয়।
এ দেশের লাখো-কোটি মানুষের স্বপ্নপুরুষ মহান রাষ্ট্রনায়ক জেনারেল জিয়াউর রহমান ‘শত ফুল ফুটতে দাও’ এবং ভলতেয়ারের ‘আমি আপনার মতের সাথে একমত নই কিন্তু আপনার মত প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাণ দিতে পারি’ নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। অথচ তার ‘ ÔI shall make politics difficult for the politicians’ ’ কথাটির অপব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে। যারা সৎ, নির্লোভ এবং প্রকৃত অর্থে জনসেবা করেন, তাদেরকে ল করে তিনি এ উক্তি করেননি। শঠ, দুর্নীতিপরায়ণ ও বাকসর্বস্ব রাজনীতিবিদদের প্রতি ইঙ্গিত করেই তিনি এটা বলেছেন। তিনি বিভিন্ন বক্তৃতা-বিবৃতিতে তার এই উক্তির ব্যাখ্যাও করেছেন। অপর দিকে আজকে সরকার বিরোধী দলকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দমন-নিপীড়নের মাধ্যমে রাজনীবিদদের জন্য প্রকৃত রাজনীতি করা দুঃসাধ্য করে ফেলছে।
জেনারেল জিয়া ছিলেন সাদামাটা জীবনযাপনের অধিকারী; একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক। তিনি দেশের ও জনগণের জন্য যা কল্যাণকর মনে করতেন, তা-ই করতেন। শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক এবং মওলানা ভাসানীর অনেক গুণের সমন্বয় তার মধ্যে ঘটেছিল। তিনি খাদ্যে স্বয়ম্ভর হওয়ার ল্েয কৃষি উপকরণ, পানি সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য খাল খনন কর্মসূচি শুরু করেন যা সারা দেশে অভূতপূর্ব জাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনিই প্রথম ‘স্বনির্ভর’ নামক এক বিশেষ কর্মসূচি চালু করেন এবং তা বাস্তবায়নের জন্য একটি ‘বিশেষ সচিব’ পদ সৃজন করেছিলেন। তার সময় থেকে সারা দেশে বৃরোপণ শুরু হয়। তিনি গ্রামীণ জনগণের অবস্থার পরিবর্তনের জন্য হাঁস-মুরগি এবং গরু-ছাগল পালনের ওপর গুরুত্বারোপ করে উৎসাহ দেন। খেটে খাওয়া কৃষাণ, মজদুর তথা উৎপাদনের সাথে সম্পৃক্ত জনগণের জীবনে অর্থবহ পরিবর্তন আনয়নের ল্েয তিনি আরাম ও বিশ্রাম বিসর্জন দিয়ে গ্রামাঞ্চলের পথঘাটে ঘুরে বেরিয়েছেন এবং মানুষকে কর্মে উদ্বুদ্ধ করেছেন। শিল্প েেত্র জিয়া বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনলেন। দ্রুত প্রবৃদ্ধি তথা শিল্পায়নের ল্েয তিনি শিল্পের বিরাষ্ট্রীয়করণ প্রক্রিয়া শুরু এবং ব্যক্তি খাত উন্মুক্ত করে দিলেন। আজকের বেসরকারি খাতের বিকাশ ও বৃদ্ধির সূচনা কিন্তু তার আমলেই হয়। সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী গার্মেন্ট শিল্প খাতের যাত্রা এবং জনশক্তি রফতানি শুরু তখন থেকেই।
জিয়া যুবশক্তিকে সঠিক পথে পরিচালনা এবং উৎপাদনমুখী করার ল্েয যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং যুব-অধিদফতর সৃষ্টি করেন। একইভাবে মহিলা ও শিশুদের উন্নয়নের ল্েয তিনি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং মহিলাবিষয়ক অধিদফতর ও শিশু একাডেমী গঠন করেন। পররাষ্ট্র েেত্র তিনি ছিলেন সফল রাষ্ট্রনায়ক। তিনি পররাষ্ট্রনীতিতে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করেন। এক দিকে তিনি মুসলিম বিশ্বের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে ব্রতী হন; অন্য দিকে আঞ্চলিক শান্তি ও সহযোগিতা প্রতিষ্ঠার রূপরেখা দেন। যা আজকের ‘সার্ক’। তিনি রূপকথার বংশীবাদকের মতো গোটা জাতিকে এক সম্মোহনী মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন। আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা বা রূপকার হলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।
পরিতাপের বিষয় জাতীয়তাবাদী এই মহান নেতা আধিপত্যবাদী ও সম্প্রসারণবাদী শক্তির ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে অকালে প্রাণ হারালেন। আর জাতি হারাল একজন সৎ, সাহসী, নির্লোভ, দেশপ্রেমিক নেতাকে। জনদরদি জাতীয়তাবাদী এই রাষ্ট্রনায়কের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার নীতি ও আদর্শ অনুসরণ করে তার সুযোগ্য উত্তরসূরি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ সঠিক পথে এগিয়ে যাবেÑ এই হোক আমাদের কামনা।
লেখক : সাবেক সচিব, বাংলদেশ সরকার
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন