অধ্যাপক ড. শামসুল আলম
বৃ হস্পতিবার ৭ জুন বাজেট ২০১২-১৩ জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হয়েছে। মোট আকার ১ লক্ষ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা; উন্নয়ন ব্যয়, রাজস্ব ব্যয়, ভর্তুকি ও থোক বরাদ্দ সমেত। উন্নয়ন ব্যয় যা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে প্রতিফলিত তা হচ্ছে ৫৫ হাজার কোটি টাকা। বাজেটের বাদ-বাকি রাজস্ব ব্যয়, বেতন-ভাতা, থোক বরাদ্দ ভর্তুকি, সামাজিক নিরাপত্তা ও বার্ষিক উন্নয়ন বহির্ভূত প্রকল্প ব্যয় ইত্যাদি। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ব্যয়কে মূল উন্নয়ন ব্যয় হিসেবে গণ্য করা হয়। বার্ষিক উন্নয়ন ব্যয়, ভর্তুকি, বিভিন্ন থোক বরাদ্দ ব্যয় প্রাক্কলন থেকে বাজেটে কোন লক্ষ্যকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে তা ধরা পড়ে। অর্থনীতিকে সরকার কোন অভিষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে নিতে চায় তা প্রতিফলিত হয়ে থাকে। বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার বাজেট ব্যয় দ্বারা প্রভাবিত হয়। অর্থনীতিতে বিনিয়োগ কি হবে, সঞ্চয় বাড়বে কিনা, মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে কিনা, তা বাজেটে ঘোষিত করনীতির মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা যায়। রাজনীতিবিদ ও অর্থনীতিবিদদের বছরের এই একটি সময়ে (সংসদে বাজেট উত্থাপনের পর তা গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত) তর্ক-বিতর্ক ও আলোচনার মুখ্য ইস্যু থাকে বাজেট। প্রায়শঃ রাজনৈতিক প্রয়োজনে এনিয়ে অতিকথন কিংবা বিভ্রান্তিকর নেতিবাচক অনেক বক্তব্যই আসতে থাকে। বাজেট বিষয়টিতে কিছুটা অংকের জটিলতা থাকে, অর্থনীতির তত্ত্ব থাকে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও নিহিত থাকে। এতসব কারণে বাজেটের প্রাক্কলনও বরাদ্দের প্রতিক্রিয়া সাধারণ জনগণ সহজেই বুঝে উঠতে পারে না। এ কারণেই নানামুখি নেতিবাচক, ইতিবাচক (যা প্রায়শঃ কম) ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ আসতে থাকে। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় সরকার পরিচালিত হয় বিধায়, সাংবিধানিক বাধ্য-বাধকতায় সরকারকে বার্ষিক আয় ও ব্যয়কে সংসদে জন প্রতিনিধিদের মাধ্যমে পাস করিয়ে নিতে হয়। এবং এ কারণেই বাজেটের ঘোষণা।
বহুল আলোচিত/সমালোচিত, দুটি বক্তব্য বিশ্লেষণ করে, বাজেট বরাদ্দ বন্টনে-কোন্ কোন্ বিষয়গুলো প্রাধান্য পেয়েছে এবং তাতে অর্থনীতিতে প্রতিক্রিয়া কি হতে পারে সে আলোচনায় যাব। প্রথমত বাজেটটি কি খুব উচ্চাভিলাষী? গত বছর বাজেট ঘোষিত হয়েছিল ১ লক্ষ ৬৩ হাজার কোটি টাকা, এ বছর ১ লক্ষ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। নীট বৃদ্ধি ১৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আমাদের বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতির পরিমাণ বাদ দিলে এ বৃদ্ধি প্রকৃত অর্থে ৬ শতাংশ। যেখানে প্রকৃত জিডিপি (আয়) বৃদ্ধির হার গড়ে এই সময়ে সাড়ে ছয় শতাংশ। অর্থাত্ আমাদের আয় বৃদ্ধি যতটুকু বাজেটে অংকের পরিমাণ বৃদ্ধি প্রায় সেটুকুই। তাই এই বাজেট আমাদের আয় বৃদ্ধির চেয়ে যেহেতু অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়নি, তাকে উচ্চভিলাষী বাজেট বলবো কোন পরিমাপে? এই বাজেট মাথাপিছু ব্যয় পড়েছে (১৬ কোটি লোকের) ১১ হাজার ৯ শত টাকা বছরে। মাসে প্রতিজনে ব্যয় ১ হাজার টাকার নিচে। এই মাথাপিছু ব্যয় আফগানিস্তান বাদে দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে জনগণের যত চাহিদা, যত অবকাঠামো ও স্থাপনা দরকার, সে হিসাবে আমাদের সম্পদ ও বাস্তবায়ন ক্ষমতা থাকলে, বাজেট ব্যয় দ্বিগুণ বেশি হলেও বিশাল হত না। কাজেই একে ‘বিশাল বাজেট’ বলার কোন যুক্তি নেই। এই বাজেটে আমাদের রাজস্ব আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৩৯ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা, মোট বাজেট ব্যয় ১ লক্ষ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। ঘাটতি ৫২ হাজার ৬৮ কোটি টাকা। এটাকে কি বলবো ‘বিশাল ঘাটতি বাজেট’। এই ঘাটতির পরিমাণ আমাদের জাতীয় স্থূল উত্পাদনের (জিডিপি) ৫ শতাংশ। ভারতে চলতি বাজেটে ঘাটতি সে দেশের জিডিপির সাড়ে ৯ শতাংশ। আমাদের অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি ও সরকারের সক্ষমতার প্রেক্ষাপটে ৫ শতাংশ ঘাটতি ‘সেফ লিমিটের’ মধ্যেই পড়ে। উচ্চ প্রবৃদ্ধির আকাঙ্খা থাকলে ৫-৭ শতাংশ বাজেট ঘাটতির ঝুঁকি অবশ্যই নিতে হবে। এই বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ যা এ যাবত্কালের সর্বোচ্চ।
এবারে উন্নয়ন বাজেটে ব্যয় বরাদ্দে সরকারের লক্ষ্য/ প্রাধান্য কি তা বিবেচনায় নিচ্ছি। উন্নয়ন বাজেটে (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) এবার বরাদ্দ ৫৫ হাজার কোটি টাকা যা আমাদের বিদায়ী অর্থ বছরের জিডিপির ৬ শতাংশ এবং রাজস্ব ব্যয় বাজেটে জিডিপির ২১ শতাংশ, মানে সমুদয় বাজেট জিডিপির ২৭ শতাংশ। গত বছরের প্রাথমিক বাজেটের উন্নয়ন বাজেট থেকে এবারের উন্নয়ন বাজেট ৯ হাজার কোটি টাকা বেশি, বাড়লো সাড়ে ১৯ শতাংশ, মূল্যস্ফীতি বাদে প্রকৃত ব্যয় বৃদ্ধি হল ৯ শতাংশ। আমাদের গড়ে সাড়ে ৬ শতাংশ আয় বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ৯ শতাংশ বৃদ্ধি অবশ্যই সন্তোষজনক এবং উন্নয়ন চাহিদা মিটাতে সরকারের আগ্রহেরই বহি: প্রকাশ। সরকারের অনুন্নয়ন রাজস্ব ব্যয় (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ব্যতীত বেড়েছে) ১৫ শতাংশ, বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি বাদ দিয়ে প্রকৃত ব্যয় বেড়েছে সাড়ে ৪ শতাংশ মাত্র। বেতন-ভাতা অন্যান্য ব্যয় সাড়ে ৪ শতাংশ বাড়ানো, বলবো কমই বেড়েছে। সরকারের মিতব্যয়ী হবার প্রচেষ্টা এখানে লক্ষণীয়। উন্নয়ন ব্যয় বাড়ানোর লক্ষ্য অবশ্যই কাঙ্ক্ষিত, এই ব্যয় বৃদ্ধিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হলেও, এমন উদ্দেশ্য অর্থনীতি বিবেচনায় অবশ্যই কাম্য। কাজেই, এ বছরের বাজেটকে ‘খুবই উচ্চাভিলাষী, কিংবা বিশাল ঘাটতি বাজেট’ বলে আতংক সৃষ্টি করাই বরং অসত্ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে সংশয় প্রকাশ করা যায়। বাজেট বৃদ্ধির সংযত হার ও সম্পদের যোগান নিশ্চিত করে ঘাটতি বাজেট ব্যবস্থাপনার ফলে এই বাজেট হয়েছে অত্যন্ত ভারসাম্যপূর্ণ।
উন্নয়ন বাজেট ১৭টি খাতে বন্টন করা হয়। এই ১৭টি খাতেই রয়েছে সব উন্নয়ন বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয়গুলো। এই ১৭টি খাতে উন্নয়ন বরাদ্দ রয়েছে ৫১,৯৪২ দশমিক ৮৯ কোটি টাকা যা উন্নয়ন বরাদ্দের ৯৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ। বাদ-বাকি ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ অর্থাত্ ৩০৫৭ দশমিক ১১ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে স্থানীয় সরকার (উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদ), পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন ও জেলা পরিষদ এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য। ১৭টি খাতে বিভক্তভাবে দেখলে যথাক্রমে পরিবহন খাত পেয়েছে সর্বোচ্চ ৮১১ দশমিক ৯৭ কোটি টাকা, বিদ্যুত্ খাত ৭৯০১ দশমিক ২৬ কোটি টাকা, শিক্ষা খাত ৭৩৮৫ দশমিক ০৫ কোটি টাকা এবং চতুর্থ পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান ৬২৪৩ দশমিক ৩৬ কোটি টাকা। এ হলো ১৭টি উন্নয়ন খাতের সর্বাধিক বরাদ্দপ্রাপ্ত খাতগুলো। এখন এই ১৭টি খাতের, পরস্পর সম্পর্কযুক্ত প্রধান ৪টি ব্লকে দেখা যাক কি বরাদ্দ রয়েছে (ক) শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণ (খ) কৃষি, পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান এবং পানি সম্পদ (গ) বিদ্যুত্, তৈল, গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদ (ঘ) পরিবহন ও যোগাযোগ। এখন এই চারটি ব্লকে বরাদ্দ হচ্ছে যথাক্রমে (ক) মানব সম্পদ উন্নয়ন ব্যয় ১১,৫৩০ দশমিক ৮৬ কোটি টাকা, উন্নয়ন বরাদ্দের ২০ দশমিক ৯৭ শতাংশ; (খ) কৃষি উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান, পানি সম্পদ ১১,৩৬৭ দশমিক ৯৮ কোটি টাকা, উন্নয়ন বরাদ্দের ২০ দশমিক ৬৭ শতাংশ; (গ) বিদ্যুত্, তৈল, গ্যাস, জ্বালানি সম্পদ ব্লকে ৯,৫০৯ দশমিক ৬৭ কোটি টাকা, উন্নয়ন বরাদ্দের ১৭ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং (ঘ) পরিবহন ও যোগাযোগ যুক্তভাবে ৯,৪৭১ দশমিক ১৩ কোটি টাকা অর্থাত্ উন্নয়ন বরাদ্দের ১৭ দশমিক ২২ শতাংশ। তাহলে উন্নয়ন বরাদ্দে প্রাধান্য পেয়েছে যথাক্রমে মানব সম্পদ, সামগ্রিক কৃষি, ও পল্লী উন্নয়ন বিদ্যুত্ ও জ্বালানি এবং পরিবহন ও যোগাযোগ। এই চারটি প্রধান ব্লকে উন্নয়ন বাজেটের মোট বরাদ্দ হচ্ছে ৭৬ দশমিক ১৫ শতাংশ। এই চারটি ব্লক উন্নয়ন অর্থনীতির প্রধান স্তম্ভ বিবেচিত হবে এবং উন্নয়ন বরাদ্দের বিন্যাস এমনভাবেই করা হয়েছে যা বাস্তব প্রয়োজনের নিরিখে অবশ্যই যুুক্তিযুক্ত। কাজেই কোন সংখ্যাকে এগিয়ে পিছিয়ে বাজেটকে যারা তুলাধুনো করতে চায়, খুব সতর্কতার সঙ্গেই তা বিবেচনা করতে হবে।
এবার উন্নয়ন বরাদ্দ ব্যতীত বাজেটের অন্যান্য ব্যয়ের যে বরাদ্দ রয়েছে সেসবের প্রধান কয়েকটি ব্যয়ের বরাদ্দ দেখা যেতে পারে। বেতন-ভাতা-পেনশন ব্যতীত রাজস্ব বড় ব্যয় হল সামাজিক নিরাপত্তা ও ক্ষমতায়ন ব্যয়, বরাদ্দ রয়েছে ২২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। অতি দরিদ্রদের জন্য বিশেষ কর্মসংস্থান কর্মসূচির জন্য রয়েছে পৃথক বরাদ্দ ১২০০ কোটি টাকা। রয়েছে সামাজিক ক্ষমতায়ন ছাত্র বৃত্তি, ক্ষুদ্র ঋণ, পল্লী জনপথ সংরক্ষণে বরাদ্দ। এ সরকার আসার পূর্বে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ১৩ শতাংশ পরিবার এ সুবিধা পেত, এখন তা উন্নীত হয়েছে ২৪ শতাংশ পরিবারে। সামাজিক নিরাপত্তা এ ব্যয় দুঃস্থ জনগণ, গরীব প্রান্তিক চাষীরা সুবিধা পেয়ে থাকে। দেশের আয় বৈষম্য কমিয়ে রাখতে সামাজিক নিরাপত্তা ব্যয় বড় ভূমিকা রাখে। গত বছরের চেয়ে এ ব্যয় টাকার অংকে খুব বাড়ছে না, তবে সামাজিক নিরাপত্তা ব্যয়ের বণ্টন যথাযোগ্যদের কাছে যাতে পৌঁছে সে বিষয় সরকার কেবিনেট সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করেছেন, এ কর্মসূচি পর্যালোচনা ও যথাযথ ব্যবহারে পদক্ষেপ জোরদারকরণ নিমিত্ত। কাজের বিনিময়ে খাদ্যের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৩৬১ কোটি টাকা, স্থানীয় গণপূর্ত মেরামত সংরক্ষণের জন্য এ বছর বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২১৪৮ কোটি টাকা এবং এ ছাড়াও এ বছর গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো গড়ে তোলায় বিশেষ বরাদ্দ রয়েছে ১৫০০ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে কৃষি ও পল্লী অর্থনীতিকে প্রাধান্য দেয়া এবং সড়ক-অবকাঠামো মেরামত ও সংরক্ষণে বরাদ্দ বৃদ্ধির মূল লক্ষ্য হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি উজ্জীবিত ও সচল রাখা। বাজেটে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন ব্যয়ের বিন্যাসের ধরন দেখে বোঝা যায় মানব সম্পদ সৃষ্টি, দরিদ্র জনগণ ও পল্লী অর্থনীতির দিকে সরকারের বিশেষ সহানুভূতি রয়েছে যা প্রশংসনীয়। এটি আরো স্পষ্ট যে, বিগত কয়েক বছর কৃষকের সার নিয়ে কোথাও কোন অভিযোগ উঠেনি বা দাবি পেশ করতে হয়নি। কৃষির ভর্তুকি এ বছর রাখা হয়েছে ৬ হাজার কোটি টাকা যা গত বছরের চেয়ে ১ হাজার কোটি টাকা বেশি। গত বছরের সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ভর্তুকি এ বছর মিটাতে হবে এবং মোট কৃষি ভর্তুকি দাঁড়াবে ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কৃষিও মানব সম্পদ সৃষ্টি, বিশেষভাবে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্য কৃষি ক্ষেত্রে সফলতার চেয়েও কম নয়। পঞ্চম, অষ্টম, এসএসসি, এইচএসসি এসব পাবলিক পরীক্ষাগুলো যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কোন গণ টোকাটুকি ছাড়াই এবং যথা সময়ে ফলও প্রকাশিত হচ্ছে। এত বড় শৃঙ্খলা অতীতে দেখা যায়নি। ১ জানুয়ারির পূর্বেই সকল ছাত্র-ছাত্রী বই পেয়ে যাচ্ছে। এ নিয়েও গত তিন বছরে কোন অভিযোগ উঠেনি।
সর্বশেষ, বাজেট ঘাটতি নিয়ে কিছু বক্তব্য রেখে এ নিবন্ধ শেষ করবো। ঘাটতি ৫২ হাজার ৬৮ কোটি টাকা। কিভাবে মিটানো হবে টাকা? ব্যাংকিং খাত থেকে সরকার ঋণ নেবে ২৩ হাজার কোটি টাকা, ব্যাংকিং বহির্ভূত ঋণ (সেভিংস সার্টিফিকেট) ৯ হাজার ৫০০ কোটি, মোট ৩২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক প্রতিশ্রুত ঋণ, অনুদান ২৬ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। যার অর্থ হচ্ছে, ঘাটতি বাজেট মোকাবেলায় সরকারকে ব্যাপকভাবে ব্যাংক ঋণে যেতে হচ্ছে না। সেফ লিমিটেই থাকছে সব কিছু। তবে ঘাটতি বেড়ে যেতে পারে জ্বালানি তেলের যদি অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি ঘটে ও ভর্তুকি বেড়ে যায়। বাজেট বাস্তবায়নে এটি হবে সম্ভাব্য বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন খাতে ভর্তুকি ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা, পিডিবির জন্য ৫ হাজার ৬০০ কোটি, টাকা বিজেএমসি ১৭০০ কোটি টাকা। এসব অসহনীয় ভর্তুকি অর্থনীতি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বড় ঝুঁকি হয়েই আছে। এগুলো কমানোর পথ-পদ্ধতিই জাতিকে বের করতে হবে। অর্থনীতির জন্য এসব ভর্তুকি বড় রকমের রক্তক্ষরণ।
n লেখক: অর্থনীতিবিদ ও
সভাপতি, বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতি সমিতি
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন