আবুল কাসেম হায়দার
অবশেষে ২০১২-১৩ জাতীয় বাজেট অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদে গত ৭ জুন পেশ করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে বাজেট নিয়ে আলোচনা, পর্যালোচনা, গোলটেবিল বৈঠক ও মতবিনিময় প্রভৃতি কার্যক্রম তিনি চালিয়ে এসেছিলেন। ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকার এই বাজেটকে বিরাট বলা যাবে না। তবে আয় অনুযায়ী কিছুটা বিরাট বলা চলে। বাজেটে আয়ের টার্গেট দেয়া হয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। ঘাটতি রয়েছে ৫২ হাজার ৬৮ কোটি টাকা।
বর্তমান বাজেট মহাজোট সরকারের চতুর্থ বাজেট। এই বাজেটে তাই রাজনৈতিক ইচ্ছাগুলোকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। সামাজিক বেষ্টনীর সীমা বাড়িয়ে রাজনৈতিক সুযোগ-সুবিধা দলীয় লোকদের দেয়ার বেশ চমত্কার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিষয়টি ভালো। তবে দলীয় না করে সর্বজন কল্যাণে সামাজিক খাতের ব্যয়টি স্বচ্ছতার সঙ্গে, দুর্নীতিমুক্তভাবে করতে পারাটা সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ। এই খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা, যা উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন বাজেটের ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ। বিগত বছরে যা ছিল ২০ হাজার ৫৫৬ কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরের তুলনায় জিডিপি আরও বৃদ্ধি পাবে, এই আশায় ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। এই লক্ষ্যমাত্রা বেশ ভালো। এ বছর প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৬ দশমিক ৩২ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা খুবই কঠিন হবে। বিদ্যুত্ খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে। যদিও বিদ্যুতের সমস্যার সমাধান বাজেটে দৃশ্যমান নয়। আগামী বছরগুলোতে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কোনো নির্দেশনাও তেমন নেই। গ্যাসের ব্যবহারে তেমন কোনো পদক্ষেপ মন্ত্রী দেখাতে পারেননি। বিগত চার বছর গ্যাস সংক্রান্ত উন্নতি তেমন সাড়া জাগানো নয়।
বিশাল বাজেটের সব দিক নিয়ে এই নিবন্ধে আলোচনা করা যাবে না। তবে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু খাতের আলোচনা ২৮ জুন, ২০১২ বাজেট পাসের আগে সমন্বয়, সংযোজন ও বিয়োজন করার পরামর্শ রেখে পাঠক, অর্থমন্ত্রী ও সরকারপ্রধানের উদ্দেশে পেশ করব।
রফতানি খাত : দেশের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন বৃদ্ধির একমাত্র উপায় রফতানিমুখী শিল্প স্থাপন করা। জনশক্তি রফতানি ও বস্ত্র খাত আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের প্রধানতম দুটি বড় খাত। বর্তমান প্রস্তাবিত ২০১২-১৩ বাজেটে সব রফতানি খাতের ওপর উেস কর ১.২ শতাংশ প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। বর্তমানে যা রয়েছে .৬ শতাংশ। দ্বিগুণ অগ্রিম কর কর্তন রফতানি খাতকে বাধাগ্রস্ত করবে। এমনিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নে অর্থনৈতিক মন্দা বিরাজমান, অন্যদিকে ইউএসএতে বাংলাদেশে শ্রমিক হত্যা নিয়ে চলছে নীরব বাংলাদেশ-বিরোধী প্রচারণা। এই অবস্থায় রফতানি হ্রাস পেয়েছে। উত্পাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। সব কিছুর উপর অগ্রিম কর ১.২ শতাংশ মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দেবে। উল্লেখিত ৩টি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে রফতানিতে অগ্রিম কর .৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হোক। এমনিতে সব শিল্পকারখানা কর দিয়ে থাকে। অতিরিক্ত আয় হলে নিয়ম অনুযায়ী সব রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান আয়কর দিবে। অতিরিক্ত অগ্রিম কর কর্তন করে শিল্পের উপর চাপ সৃষ্টি কোনোক্রমেই উচিত হবে না।
শিক্ষা খাত : এবার শিক্ষা খাতের বরাদ্দ কমানো হয়েছে। অথচ দাবি ছিল মোট বাজেটের ২০ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দেয়া হোক। কিন্তু দেয়া হয়েছে ১১.৫ শতাংশ। তাও শিক্ষা ও প্রযুক্তি দুই খাত মিলিয়ে এই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতিকে কার্যকরী করতে হলে শিক্ষা খাতের বাজেট বৃদ্ধি করতে হবে।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির জন্য এবারও কোনো বরাদ্দ নেই। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর মাত্র ১৬শ’ প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করেছে। এখন দেশে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাসহ প্রায় ৭ হাজারের অধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে অর্থাভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। মহাজোট সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্ত করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করে এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় ৭ হাজার প্রতিষ্ঠানের দাবি পূরণ করা উচিত।
শিক্ষা খাতে কোথাও কর নেয়ার বিধান নেই। কিন্তু রাজস্ব বোর্ড এসআরও জারি করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৫ শতাংশ হারে কর আদায় করেছে। ২০১২-১৩ বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৫ শতাংশ কর আরোপ প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেখছি না। বাজেট পাসের আগে অবশ্যই সরকারের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৫ শতাংশ কর কর্তন বিধান প্রত্যাহার করা উচিত। শিক্ষা খাতে কোনো সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে করারোপ নেই। আইনেও বিধান নেই। অন্যদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনুমোদন প্রাপ্ত। অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে কর নেয়া হয় না। এটি সরকারের একটি ভুল ও দ্বৈত নীতি। অন্যদিকে বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে ছাত্রছাত্রীদের টিউশনির ওপর ৪.৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় করা হয়। এটি নিয়মের বরখেলাপ। এই ভ্যাট আদায়ও বন্ধ করা উচিত। বাড়িভাড়ার ওপর ৯ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায়ের বিধান বাজেটে প্রত্যাহার করা হয়েছে শুধু যেসব বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হয়েছে। বাকিদের ৯ শতাংশ হারে বাড়িভাড়ার ওপর ভ্যাট দিতে হবে। সম্পূর্ণ ভ্যাট প্রত্যাহার করা উচিত।
ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া কমাতে হবে : বর্তমান বাজেটে ঘাটতি রয়েছে ৫২ হাজার ৬৮ কোটি টাকা। এই ঘাটতি পূরণের জন্য সরাসরি ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার প্রস্তাব রেখেছে। ব্যাংক থেকে এই অধিক হারে ঋণ নিলে তারল্য সঙ্কট সৃষ্টি হবে এবং ব্যাংকের সুদের হার আরও বৃদ্ধি পাবে। তাতে বেসরকারি খাত দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই সরকারকে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া কমাতে হবে। বিদেশি ঋণ ও অনুদান নেয়ার চেষ্টা করতে হবে। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সুসম্পর্ক বাড়াতে হবে। বিশ্বব্যাংকের দাবি পূরণ করে বিশ্বব্যাংক থেকে পদ্মা সেতুর ঋণসহ অন্যান্য ঋণ নেয়ার চেষ্টা করতে হবে। এই ক্ষেত্রে অভিযোগ হচ্ছে দুর্নীতি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারকে সোচ্চার হতে হবে। দুর্নীতি কমানোর চেষ্টা করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের বিচার করতে হবে।
বর্তমান বাজেটে ঘাটতি নিরূপণে সরকার অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেয়ার প্রস্তাব রেখেছে ৩৩ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। এর পরিমাণ কমাতে হবে। বিদেশি অনুদান ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৪৪ কোটি টাকা। বিদেশি ঋণ ও অনুদান বৃদ্ধি করার জোর চেষ্টা চালাতে হবে। সরকারকে ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেয়া বন্ধ করতে হবে।
কালো টাকা সাদা : এ বিষয়টি আজ দিবালোকের মতো সত্য যে, সরকার দুর্নীতিবাজদের সুবিধা করে দেয়ার জন্য অবাধ সুযোগের প্রস্তাব রেখেছে। মহাজোট সরকারের অঙ্গীকার ছিল কালো টাকা সাদা করার সুযোগ কখনও দেবে না। এখন সুবিধা আরও বেশি রেখেছে যে, যে কোনো সময়ে যে কোনো পরিমাণ টাকা মাত্র ১০ শতাংশ জরিমানা দিয়ে সাদা করা যাবে। অথচ আমি একজন ট্যাক্সপেয়ী প্রতিনিয়ত ২৫ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। এই কাজটি সম্পূর্ণ অনৈতিক। সব ব্যবসায়ী সংগঠন, নেতারা কালো টাকা সাদা করার বিষয়টি না রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন। আশাকরি অর্থমন্ত্রী বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন।
করমুক্ত আয়ের সীমা ও ন্যূনতম আয়কর : সরকার কর বৃদ্ধি করার জন্য সহজ পথ গ্রহণ করেছে। নতুন নতুন করদাতা সৃষ্টি না করে সরাসরি টিন গ্রহণ করাদের কাছ থেকে তিন হাজার টাকার কর আরোপ করেছে। যেটি কমানোর কথা সেটি এক হাজার টাকা বৃদ্ধি করেছে। অন্যদিকে আয়কর সীমা কমপক্ষে ২ লাখ টাকা করার প্রস্তাব ছিল ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে যা বিবেচনা করা হয়নি। তা বিবেচনায় নিয়ে কমপক্ষে আড়াই লাখ টাকা ন্যূনতম কর সীমা নির্ধারণ করা হোক।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ : সরকারের মূল্য ঘাটতি কমাতে বাজেটে অনেক কথার উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবে দ্রব্যমূল্য বাজেট ঘোষণার আগেই বৃদ্ধি পেয়ে আসছে। বাজেট পাসের পর তা আবার বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদ্যুত্ ও তেলের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দ্রব্যমূল্য আবারও বৃদ্ধি পাবে। সরকারের বিশেষ সহযোগী কিছু ব্যবসায়ী সব সময় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। সরকার এই ব্যাপারে ভীষণভাবে অসহায় মনে হয়। ২০০০ সালের দ্রব্যমূল্যের তালিকা আর ২০১২ সালের দ্রব্যমূল্যের তালিকা তুলনা করলে বিষয়টি সবার কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা : এই বিশাল ও প্রয়োজনীয় বাজেট বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অপরিহার্য। দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজমান। বিরোধী দলের ওপর দমন, নিপীড়ন, মামলা-হামলা অবিরাম চলছে। এ অবস্থার উন্নতি না হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না এলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে না। বিনিয়োগ বৃদ্ধি না পেলে কর্মসংস্থানও হবে না। কর্মসংস্থান বৃদ্ধি না হলে ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন শুধু কাগজে রয়ে যাবে। তাই বিরোধী দলের সঙ্গে সমঝোতায় গিয়ে দেশে রাজনৈতিক স্থিতি নিয়ে আসা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে অতি জরুরি। বিভেদের রাজনীতি, বিভক্তির রাজনীতি সবাইকে পরিহার করতে হবে। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী কিছুটা হলেও উল্লেখ করেছেন। তবে এই ক্ষেত্রে তার বক্তৃতায় বিষয়টি আরও বেশি জোর দেয়া প্রয়োজন ছিল। তাতে সরকারের নীতি-নির্ধারকরা রাজনৈতিক ইস্যুগুলো নিয়ে আরও বেশি যত্নশীল হতেন ও গুরুত্ব দিতেন।
বাজেট বাস্তবায়ন ক্ষমতা বৃদ্ধি : এই বাজেটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাজেট বাস্তবায়নের জন্য সরকারের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। কিন্তু বাজেট বক্তৃতায় সক্ষমতা বৃদ্ধির কল্প-পরিকল্পনা তেমন নেই। ২০১২-১৩ বাজেটে উন্নয়ন (এডিপি) ধরা হয়েছে ৫৫ হাজার কোটি টাকা। বিগত বছরে এডিপি পুরো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। সক্ষমতা বৃদ্ধি না করতে পারলে কোনোক্রমেই এডিপি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। অন্যদিকে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দলীয়প্রীতি সম্পূর্ণ পরিহার না করলে এডিপির উপকার জনগণ পাবে না। এ জন্য সরকারের সক্ষমতা, সততা, নিষ্ঠা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। দুর্নীতি, অনিয়মের বিরুদ্ধে নিয়মিত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে এডিপি কোনোক্রমেই ৫৫ হাজার কোটি টাকা ব্যবহার করা যাবে না।
মোবাইল ফোন বিলে উেস কর : সরকার ২০১২-১৩ বাজেটে মোবাইল ফোনের বিলের ওপর ২ শতাংশ হারে উেস কর আরোপ করেছে। অর্থাত্ সবার কলের ওপর ২ শতাংশ আয়কর চাচ্ছে। কীভাবে সম্ভব। খরচের ওপর আয়কর হয় না। অন্যদিকে আইজিডব্লিউ সার্ভিসগুলোর ওপর ১ শতাংশ এবং অন্যক্ষেত্রে আইজিডব্লিউ সার্ভিস দেয়া আয়ের ওপর ৫ শতাংশ উেস আয়কর নির্ধারণ করেছে। কথা বলার ওপর ট্যাক্স এই প্রথম বাংলাদেশে ও পৃথিবীতে। তাই আজব এই ট্যাক্স প্রস্তাব সবাইকে অবাক করেছে। বিষয়টি অবশ্যই প্রত্যাহার করা উচিত।
দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতির জন্য প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস। দেশ আজ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এই কাজটি ঠিক নয়, ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে নিয়ে জাতীয় অর্থনীতি বিন্যাসে অগ্রসর হতে হবে। তাই সরকারের উচিত হবে ঐক্যের রাজনীতির আহ্বান জানানো। বিরোধী দল তেমনি সরকারের সঙ্গে একযোগে অবশ্যই সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করবে। তা না হলে বেসরকারি খাতে ব্যাংক বিনিয়োগ করতে পারবে না। সুদের হার ১৬ শতাংশ। তা বৃদ্ধি পেয়ে ব্যবসায়ীদের ঋণ খেলাপি করার পথ তৈরি হবে।
লেখক : প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ও সাবেক সহ-সভাপতি, এফবিসিসিআই, লেখক ও কলামিস্ট
বর্তমান বাজেট মহাজোট সরকারের চতুর্থ বাজেট। এই বাজেটে তাই রাজনৈতিক ইচ্ছাগুলোকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। সামাজিক বেষ্টনীর সীমা বাড়িয়ে রাজনৈতিক সুযোগ-সুবিধা দলীয় লোকদের দেয়ার বেশ চমত্কার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিষয়টি ভালো। তবে দলীয় না করে সর্বজন কল্যাণে সামাজিক খাতের ব্যয়টি স্বচ্ছতার সঙ্গে, দুর্নীতিমুক্তভাবে করতে পারাটা সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ। এই খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা, যা উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন বাজেটের ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ। বিগত বছরে যা ছিল ২০ হাজার ৫৫৬ কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরের তুলনায় জিডিপি আরও বৃদ্ধি পাবে, এই আশায় ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। এই লক্ষ্যমাত্রা বেশ ভালো। এ বছর প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৬ দশমিক ৩২ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা খুবই কঠিন হবে। বিদ্যুত্ খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে। যদিও বিদ্যুতের সমস্যার সমাধান বাজেটে দৃশ্যমান নয়। আগামী বছরগুলোতে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কোনো নির্দেশনাও তেমন নেই। গ্যাসের ব্যবহারে তেমন কোনো পদক্ষেপ মন্ত্রী দেখাতে পারেননি। বিগত চার বছর গ্যাস সংক্রান্ত উন্নতি তেমন সাড়া জাগানো নয়।
বিশাল বাজেটের সব দিক নিয়ে এই নিবন্ধে আলোচনা করা যাবে না। তবে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু খাতের আলোচনা ২৮ জুন, ২০১২ বাজেট পাসের আগে সমন্বয়, সংযোজন ও বিয়োজন করার পরামর্শ রেখে পাঠক, অর্থমন্ত্রী ও সরকারপ্রধানের উদ্দেশে পেশ করব।
রফতানি খাত : দেশের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন বৃদ্ধির একমাত্র উপায় রফতানিমুখী শিল্প স্থাপন করা। জনশক্তি রফতানি ও বস্ত্র খাত আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের প্রধানতম দুটি বড় খাত। বর্তমান প্রস্তাবিত ২০১২-১৩ বাজেটে সব রফতানি খাতের ওপর উেস কর ১.২ শতাংশ প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। বর্তমানে যা রয়েছে .৬ শতাংশ। দ্বিগুণ অগ্রিম কর কর্তন রফতানি খাতকে বাধাগ্রস্ত করবে। এমনিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নে অর্থনৈতিক মন্দা বিরাজমান, অন্যদিকে ইউএসএতে বাংলাদেশে শ্রমিক হত্যা নিয়ে চলছে নীরব বাংলাদেশ-বিরোধী প্রচারণা। এই অবস্থায় রফতানি হ্রাস পেয়েছে। উত্পাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। সব কিছুর উপর অগ্রিম কর ১.২ শতাংশ মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দেবে। উল্লেখিত ৩টি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে রফতানিতে অগ্রিম কর .৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হোক। এমনিতে সব শিল্পকারখানা কর দিয়ে থাকে। অতিরিক্ত আয় হলে নিয়ম অনুযায়ী সব রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান আয়কর দিবে। অতিরিক্ত অগ্রিম কর কর্তন করে শিল্পের উপর চাপ সৃষ্টি কোনোক্রমেই উচিত হবে না।
শিক্ষা খাত : এবার শিক্ষা খাতের বরাদ্দ কমানো হয়েছে। অথচ দাবি ছিল মোট বাজেটের ২০ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দেয়া হোক। কিন্তু দেয়া হয়েছে ১১.৫ শতাংশ। তাও শিক্ষা ও প্রযুক্তি দুই খাত মিলিয়ে এই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতিকে কার্যকরী করতে হলে শিক্ষা খাতের বাজেট বৃদ্ধি করতে হবে।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির জন্য এবারও কোনো বরাদ্দ নেই। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর মাত্র ১৬শ’ প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করেছে। এখন দেশে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাসহ প্রায় ৭ হাজারের অধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে অর্থাভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। মহাজোট সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্ত করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করে এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় ৭ হাজার প্রতিষ্ঠানের দাবি পূরণ করা উচিত।
শিক্ষা খাতে কোথাও কর নেয়ার বিধান নেই। কিন্তু রাজস্ব বোর্ড এসআরও জারি করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৫ শতাংশ হারে কর আদায় করেছে। ২০১২-১৩ বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৫ শতাংশ কর আরোপ প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেখছি না। বাজেট পাসের আগে অবশ্যই সরকারের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৫ শতাংশ কর কর্তন বিধান প্রত্যাহার করা উচিত। শিক্ষা খাতে কোনো সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে করারোপ নেই। আইনেও বিধান নেই। অন্যদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনুমোদন প্রাপ্ত। অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে কর নেয়া হয় না। এটি সরকারের একটি ভুল ও দ্বৈত নীতি। অন্যদিকে বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে ছাত্রছাত্রীদের টিউশনির ওপর ৪.৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় করা হয়। এটি নিয়মের বরখেলাপ। এই ভ্যাট আদায়ও বন্ধ করা উচিত। বাড়িভাড়ার ওপর ৯ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায়ের বিধান বাজেটে প্রত্যাহার করা হয়েছে শুধু যেসব বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হয়েছে। বাকিদের ৯ শতাংশ হারে বাড়িভাড়ার ওপর ভ্যাট দিতে হবে। সম্পূর্ণ ভ্যাট প্রত্যাহার করা উচিত।
ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া কমাতে হবে : বর্তমান বাজেটে ঘাটতি রয়েছে ৫২ হাজার ৬৮ কোটি টাকা। এই ঘাটতি পূরণের জন্য সরাসরি ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার প্রস্তাব রেখেছে। ব্যাংক থেকে এই অধিক হারে ঋণ নিলে তারল্য সঙ্কট সৃষ্টি হবে এবং ব্যাংকের সুদের হার আরও বৃদ্ধি পাবে। তাতে বেসরকারি খাত দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই সরকারকে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া কমাতে হবে। বিদেশি ঋণ ও অনুদান নেয়ার চেষ্টা করতে হবে। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সুসম্পর্ক বাড়াতে হবে। বিশ্বব্যাংকের দাবি পূরণ করে বিশ্বব্যাংক থেকে পদ্মা সেতুর ঋণসহ অন্যান্য ঋণ নেয়ার চেষ্টা করতে হবে। এই ক্ষেত্রে অভিযোগ হচ্ছে দুর্নীতি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারকে সোচ্চার হতে হবে। দুর্নীতি কমানোর চেষ্টা করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের বিচার করতে হবে।
বর্তমান বাজেটে ঘাটতি নিরূপণে সরকার অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেয়ার প্রস্তাব রেখেছে ৩৩ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। এর পরিমাণ কমাতে হবে। বিদেশি অনুদান ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৪৪ কোটি টাকা। বিদেশি ঋণ ও অনুদান বৃদ্ধি করার জোর চেষ্টা চালাতে হবে। সরকারকে ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেয়া বন্ধ করতে হবে।
কালো টাকা সাদা : এ বিষয়টি আজ দিবালোকের মতো সত্য যে, সরকার দুর্নীতিবাজদের সুবিধা করে দেয়ার জন্য অবাধ সুযোগের প্রস্তাব রেখেছে। মহাজোট সরকারের অঙ্গীকার ছিল কালো টাকা সাদা করার সুযোগ কখনও দেবে না। এখন সুবিধা আরও বেশি রেখেছে যে, যে কোনো সময়ে যে কোনো পরিমাণ টাকা মাত্র ১০ শতাংশ জরিমানা দিয়ে সাদা করা যাবে। অথচ আমি একজন ট্যাক্সপেয়ী প্রতিনিয়ত ২৫ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। এই কাজটি সম্পূর্ণ অনৈতিক। সব ব্যবসায়ী সংগঠন, নেতারা কালো টাকা সাদা করার বিষয়টি না রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন। আশাকরি অর্থমন্ত্রী বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন।
করমুক্ত আয়ের সীমা ও ন্যূনতম আয়কর : সরকার কর বৃদ্ধি করার জন্য সহজ পথ গ্রহণ করেছে। নতুন নতুন করদাতা সৃষ্টি না করে সরাসরি টিন গ্রহণ করাদের কাছ থেকে তিন হাজার টাকার কর আরোপ করেছে। যেটি কমানোর কথা সেটি এক হাজার টাকা বৃদ্ধি করেছে। অন্যদিকে আয়কর সীমা কমপক্ষে ২ লাখ টাকা করার প্রস্তাব ছিল ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে যা বিবেচনা করা হয়নি। তা বিবেচনায় নিয়ে কমপক্ষে আড়াই লাখ টাকা ন্যূনতম কর সীমা নির্ধারণ করা হোক।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ : সরকারের মূল্য ঘাটতি কমাতে বাজেটে অনেক কথার উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবে দ্রব্যমূল্য বাজেট ঘোষণার আগেই বৃদ্ধি পেয়ে আসছে। বাজেট পাসের পর তা আবার বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদ্যুত্ ও তেলের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দ্রব্যমূল্য আবারও বৃদ্ধি পাবে। সরকারের বিশেষ সহযোগী কিছু ব্যবসায়ী সব সময় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। সরকার এই ব্যাপারে ভীষণভাবে অসহায় মনে হয়। ২০০০ সালের দ্রব্যমূল্যের তালিকা আর ২০১২ সালের দ্রব্যমূল্যের তালিকা তুলনা করলে বিষয়টি সবার কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা : এই বিশাল ও প্রয়োজনীয় বাজেট বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অপরিহার্য। দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজমান। বিরোধী দলের ওপর দমন, নিপীড়ন, মামলা-হামলা অবিরাম চলছে। এ অবস্থার উন্নতি না হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না এলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে না। বিনিয়োগ বৃদ্ধি না পেলে কর্মসংস্থানও হবে না। কর্মসংস্থান বৃদ্ধি না হলে ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন শুধু কাগজে রয়ে যাবে। তাই বিরোধী দলের সঙ্গে সমঝোতায় গিয়ে দেশে রাজনৈতিক স্থিতি নিয়ে আসা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে অতি জরুরি। বিভেদের রাজনীতি, বিভক্তির রাজনীতি সবাইকে পরিহার করতে হবে। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী কিছুটা হলেও উল্লেখ করেছেন। তবে এই ক্ষেত্রে তার বক্তৃতায় বিষয়টি আরও বেশি জোর দেয়া প্রয়োজন ছিল। তাতে সরকারের নীতি-নির্ধারকরা রাজনৈতিক ইস্যুগুলো নিয়ে আরও বেশি যত্নশীল হতেন ও গুরুত্ব দিতেন।
বাজেট বাস্তবায়ন ক্ষমতা বৃদ্ধি : এই বাজেটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাজেট বাস্তবায়নের জন্য সরকারের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। কিন্তু বাজেট বক্তৃতায় সক্ষমতা বৃদ্ধির কল্প-পরিকল্পনা তেমন নেই। ২০১২-১৩ বাজেটে উন্নয়ন (এডিপি) ধরা হয়েছে ৫৫ হাজার কোটি টাকা। বিগত বছরে এডিপি পুরো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। সক্ষমতা বৃদ্ধি না করতে পারলে কোনোক্রমেই এডিপি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। অন্যদিকে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দলীয়প্রীতি সম্পূর্ণ পরিহার না করলে এডিপির উপকার জনগণ পাবে না। এ জন্য সরকারের সক্ষমতা, সততা, নিষ্ঠা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। দুর্নীতি, অনিয়মের বিরুদ্ধে নিয়মিত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে এডিপি কোনোক্রমেই ৫৫ হাজার কোটি টাকা ব্যবহার করা যাবে না।
মোবাইল ফোন বিলে উেস কর : সরকার ২০১২-১৩ বাজেটে মোবাইল ফোনের বিলের ওপর ২ শতাংশ হারে উেস কর আরোপ করেছে। অর্থাত্ সবার কলের ওপর ২ শতাংশ আয়কর চাচ্ছে। কীভাবে সম্ভব। খরচের ওপর আয়কর হয় না। অন্যদিকে আইজিডব্লিউ সার্ভিসগুলোর ওপর ১ শতাংশ এবং অন্যক্ষেত্রে আইজিডব্লিউ সার্ভিস দেয়া আয়ের ওপর ৫ শতাংশ উেস আয়কর নির্ধারণ করেছে। কথা বলার ওপর ট্যাক্স এই প্রথম বাংলাদেশে ও পৃথিবীতে। তাই আজব এই ট্যাক্স প্রস্তাব সবাইকে অবাক করেছে। বিষয়টি অবশ্যই প্রত্যাহার করা উচিত।
দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতির জন্য প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস। দেশ আজ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এই কাজটি ঠিক নয়, ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে নিয়ে জাতীয় অর্থনীতি বিন্যাসে অগ্রসর হতে হবে। তাই সরকারের উচিত হবে ঐক্যের রাজনীতির আহ্বান জানানো। বিরোধী দল তেমনি সরকারের সঙ্গে একযোগে অবশ্যই সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করবে। তা না হলে বেসরকারি খাতে ব্যাংক বিনিয়োগ করতে পারবে না। সুদের হার ১৬ শতাংশ। তা বৃদ্ধি পেয়ে ব্যবসায়ীদের ঋণ খেলাপি করার পথ তৈরি হবে।
লেখক : প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ও সাবেক সহ-সভাপতি, এফবিসিসিআই, লেখক ও কলামিস্ট
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন