বেগম খালেদা জিয়া
বিগত দুই বছরের মতো আজ যখন আপনাদের সামনে আসন্ন আর্থিক বছরের বাজেট ভাবনা নিয়ে উপস্থিত হয়েছি, তখন দেশের অবস্থা কি দাঁড়িয়েছে আপনারা জানেন। বিএনপি’র অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সিলেট জেলা কমিটির সভাপতি ইলিয়াস আলী ও তার ড্রাইভার আনসার আলীকে গত ১৭ এপ্রিল রাজধানী ঢাকায় তার বাসভবনের কাছ থেকে মধ্যরাতের দিকে ধরে নিয়ে গিয়ে গুম করা হয়েছে। আজও তার সন্ধান মিলেনি। তাদের পরিবারের সদস্যবর্গ এবং সহকর্মীরা নিদারুণ উত্কণ্ঠার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। শুধু ইলিয়াস আলীই নন, পোশাক শিল্প শ্রমিক নেতা এম আমিনুল ইসলাম একইভাবে গুম হওয়ার পর তার ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার হয়েছে। কমিশনার চৌধুরী আলম গুম হয়েছেন ২ বছর হতে চলল। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী বিগত এক বছরে দেশের বিভিন্ন স্থানে গুম হওয়া মানুষের সংখ্যা শতাধিক। অতি সাম্প্রতিক এক তথ্যে দেখা যায় এ সংখ্যা ১২২। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বিএনপি নেতা-কর্মী। এসব গুমের ঘটনায় দেশে এবং বিদেশে প্রচণ্ড উদ্বেগ ও উত্কণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। আজ প্রতিটি নাগরিক শঙ্কিত, ঘর থেকে বেরুলে তিনি আর ফিরে আসবেন কিনা। দেশব্যাপী সৃষ্টি হয়েছে এক মারাত্মক ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ। এ রকম ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতায় সুষ্ঠুভাবে উত্পাদনমুখী ও সৃজনশীল কাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এই ভীতি ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদ করতে গিয়ে সরকারের করা মামলায় কারাগারে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ দল ও জোটের ৩৩ জন শীর্ষস্থানীয় নেতা। এছাড়া সম্প্রতি সারা দেশে মামলা হামলা ও গ্রেফতারের শিকার হয়েছেন আরও তিন সহস্রাধিক নেতা-কর্মী। বাংলাদেশের ইতিহাসে একসঙ্গে এত বিরাটসংখ্যক শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতা গ্রেফতারের ঘটনা নজিরবিহীন।
প্রিয় সুধী,
আজ আমরা বাজেট ভাবনা পেশ করছি এমন এক অবর্ণনীয় পরিস্থিতিতে যখন—
ক্স দেশের মানুষ পানি, গ্যাস, বিদ্যুতের তীব্র সঙ্কটে অসহনীয় জীবনযাপন করছেন।
ক্স জ্যৈষ্ঠের খরতাপে অসহনীয় লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত।
ক্স নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের বলগাহীন মূল্যস্ফীতিতে জনজীবন পর্যুদস্ত ও অর্থনীতি বিপন্ন।
ক্স উত্পাদনমুখী কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ স্থবির।
ক্স খোদ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতেই প্রতি তিন দিনে এক জনকে প্রাণ হারাতে হচ্ছে।
ক্স সাগর-রুনী ও সৌদি কূটনীতিক খালাফ আলী হত্যাসহ চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডগুলোর কোনো কূল-কিনারা হচ্ছে না।
ক্স সরকারের প্রশ্রয়ে সারাদেশে নির্বিচারে সাংবাদিক নির্যাতন চলছে।
ক্স নজিরবিহীন যানজট নগর জীবনকে করে তুলেছে বাসের অযোগ্য।
ক্স ৬৯ টাকার ডলার কিনতে হচ্ছে ৮২ টাকায়।
ক্স ছাত্রলীগের টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজি উন্নয়ন-উদ্যোগ ও ব্যবসায়-বাণিজ্যকে জিম্মি ও ভীতসন্ত্রস্ত করে রেখেছে।
ক্স শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারীতে ৩৩ লাখ মানুষ সর্বস্বান্ত এবং প্রায় লখো-কোটি টাকার ঊর্ধ্বে হাতিয়ে নেয়া চিহ্নিত অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে।
ক্স সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশীদের হত্যাকাণ্ড চলছেই।
ক্স সর্বব্যাপী দলীয়করণের কারণে প্রশাসন হয়ে পড়েছে দুর্নীতিপরায়ণ, মেধাহীন আর গতিহীন।
ক্স অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে ক্রমাগত ব্যর্থ হচ্ছে সরকার।
ক্স বিভিন্ন জাতীয় স্বার্থের ইস্যুতে সরকার গ্রহণ করছে নতজানু নীতি।
ক্স চুক্তির বিষয়বস্তুু সম্পর্কে সংসদ ও জনগণকে অন্ধকারে রেখে করিডোর সুবিধা প্রদান ও ভারতকে বন্দর ব্যবহার করতে দেয়ার গোপন চুক্তি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
ক্স জনগণকে চুক্তির শর্তাবলী না জানিয়ে নতুন গ্যাস ও তেলকূপ খননের জন্য বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে সরকার চুক্তি সম্পাদন করছে।
ক্স রাষ্ট্রপ্রধান সংবিধানে প্রদত্ত ক্ষমতা অপব্যবহার করে আওয়ামী লীগের লোক হওয়ার কারণে বিচারাধীন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খুনের আসামিদের পর্যন্ত মুক্ত করে দিচ্ছেন।
ক্স সরকারদলীয় সব ব্যক্তির দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়, অথচ বিরোধীদলীয় ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে অসাংবিধানিক জরুরি সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলাগুলো আদালতে দ্বিগুণ উত্সাহে পরিচালিত করে ইনসাফের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করা হচ্ছে।
ক্স দুর্নীতিতে সরকারের উচ্চ পর্যায়সহ সরকারদলীয় পেটোয়া বাহিনী আকণ্ঠ নিমজ্জিত।
ক্স নিয়োগ বাণিজ্যসহ ঘুষের অর্থ লেনদেন হয় বস্তায় বস্তায়।
ক্স বিরোধী দলের জন্য রাজনৈতিক সমাবেশের স্থান বরাদ্দ দেয়া হয় না, অপরদিকে সরকারি দল নিজেদের সমাবেশ করছে স্টেডিয়ামে কিংবা সংসদ ভবন চত্বরে। সমাবেশ স্থলে ১৪৪ ধারা জারি করে রাজনৈতিক সভাসমাবেশ পণ্ড, ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের তাত্ক্ষণিকভাবে কারারুদ্ধ করা এবং নির্মম হিংস্রতার সঙ্গে সব গণতান্ত্রিক প্রতিবাদকে স্তব্ধ করছে বাকশালী আদলের সরকার।
ক্স ফ্যাসিবাদী কায়দায় গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে স্তব্ধ করার জন্য বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ মিছিলে বর্বর পুলিশি নির্যাতন চালানো হচ্ছে, এমনকি দলীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রাখা হচ্ছে।
ক্স জনজীবনের অসহনীয় সমস্যা সমাধানের মৌলিক ইস্যুগুলোকে পাশ কাটিয়ে বর্তমান সরকার ১৯৯৬ সালে মীমাংসিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে পুরো জাতিকে এক অনিশ্চিত ও ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
প্রিয় সুধী,
বাংলাদেশে আমরা জাতীয় অর্থনীতির মৌল-কাঠামো হিসেবে মুক্তবাজার অর্থনীতির প্রক্রিয়া অনুসরণ করছি। কিন্তু আমাদের মুক্তবাজার অর্থনীতি জনকল্যাণকে অগ্রাহ্য করে নয়। মুক্তবাজার অর্থনীতি তখনই সঠিকভাবে কাজ করতে পারে যখন প্রতিযোগিতা থাকে অবারিত। আর এজন্য প্রয়োজন গণতন্ত্র ও ব্যক্তিস্বাধীনতা। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান তথাকথিত মহাজোট সরকার দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ এবং ফ্যাসিস্ট কায়দায় দমন-পীড়ন চালিয়ে ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমূলে বিনাশ করছে। এরকম পরিস্থিতিতে জাতীয় অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবে স্বেচ্ছাচারিতাই এখন শাসকগোষ্ঠীর একমাত্র অবলম্বন।
মুক্ত প্রতিযোগিতাকে অবরুদ্ধ করে দলানুগত্য এবং আত্মীয়তন্ত্র হচ্ছে সম্পদ ব্যবহার ও বন্টনের মাপকাঠি। এর ফলে দক্ষতা নির্বাসিত, উত্পাদনশীলতা রুদ্ধ, অপচয় অনিবার্য। এক কথায় তারা পুঁজিবাদের এক বিকৃত পন্থা অনুসরণ করছে। এর ফলে সত্যিকারের বিনিয়োগকারীরা হচ্ছে নিরুত্সাহিত, উন্নয়নের অংশীদারদের কাছে বাংলাদেশ পরিণত হয়েছে অবহেলার পাত্রে। অপশাসন, দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন এবং মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করছে। এ প্রসঙ্গে গত ৮ মে তারিখে বাংলাদেশে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতগণ এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে বর্তমানে বিরাজমান পরিস্থিতিতে উত্কণ্ঠা প্রকাশ করে বলেছেন যে, বর্তমানে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ ইমেজ সঙ্কটে ভুগছে। তারা বলেছেন, এই ইমেজ ভালো করা না গেলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না।
বাংলাদেশের সর্ববৃহত্ উন্নয়ন সহযোগী জাপানের উপপ্রধানমন্ত্রী তাঁর সাম্প্রতিক ঢাকা সফরের সময় দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারের ব্যর্থতা চলতে থাকলে জাপানের সাহায্য প্রাপ্তিতে বিরূপ প্রভাবের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন।
প্রিয় সুধী,
সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিশাল অঙ্কের দুর্নীতির মাধ্যমে বর্তমান সরকারের নির্লজ্জ ক্রনি ক্যাপিটালিজমের নীতি একের পর এক জনসমক্ষে উন্মোচিত হচ্ছে। পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির কারণে শুধু বিশ্বব্যাংকই নয়, বিশ্বব্যাংকের পদাঙ্ক অনুসরণ করে জাইকা, এডিবি, আইডিবিও পদ্মা সেতু প্রকল্পে সহায়তা স্থগিত করে দিয়েছে। এর ফলে দাতা সংস্থাগুলোর কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত হয়েছে। যতই দিন যাচ্ছে, পদ্মা সেতুর জন্য বিশাল অঙ্কের সাশ্রয়ী সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংকের তরফ থেকে পদ্মা সেতু সংক্রান্ত দুর্নীতির বিষয়ে সরকারকে দুই দফা চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানা যায়।
এ সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগের পর সরকার তত্কালীন যোগাযোগমন্ত্রীকে ভিন্ন একটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রতি পরিহাস করেছে মাত্র। অপরদিকে পদ্মা সেতুর অর্থায়নের জন্য বিকল্প উত্স হিসেবে সরকার অপর একটি দেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। অথচ এতে কারা অর্থায়ন করবে, কত সুদে কি শর্তে এই অর্থায়ন হবে তা আজ পর্যন্ত দেশবাসীকে জানানো হয়নি। বলা হচ্ছে এটি BOT ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হবে। সে ক্ষেত্রে সেতুটি কত বছরের জন্য ওই কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং দেশীয় যানবাহনগুলোকে কি হারে টোল প্রদান করতে হবে সেটাও স্পষ্ট করে বলা হচ্ছে না। পুরো ব্যাপারটাই অস্বচ্ছ ও সন্দেহজনক। ইতোমধ্যে বর্তমান যোগাযোগমন্ত্রী দাবি করেছেন, সরকারের বর্তমান মেয়াদেই পদ্মা সেতুর কাজ শুরু হবে। আবার শোনা যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের সঙ্গেও পদ্মা সেতুর অর্থায়নের ব্যাপারে কথা হচ্ছে।
সহজ শর্তে সহায়তা আমরা স্বাগত জানাই। তবে পদ্মা সেতু নির্মাণে কোনো প্রকার অস্বচ্ছতা ও আর্থিক দুর্নীতির দায় জনগণ বহন করবে না।
পদ্মা সেতুর জন্য মাত্র শূন্য দশমিক ৭৫ সুদে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার সহায়তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ১০ বছরের গ্রেইস পিরিয়ডসহ ওই টাকা পরিশোধের সময়সীমা ৪০ বছর। বিকল্প যে কোনো চুক্তি স্বাক্ষরের পূর্বে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির শর্তাবলীর সঙ্গে বিকল্প চুক্তির তুলনামূলক চিত্র জনগণের সামনে প্রকাশ করার দাবি করছি। কেননা, জনগণের প্রদত্ত করের টাকা দিয়েই এ ঋণের অর্থ পরিশোধ করা হবে। আমরা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চাই। সেইসঙ্গে আগামীতে সরকার গঠনের সুযোগ পেলে দুটি পদ্মা সেতু নির্মাণের অঙ্গীকার আমরা পুনর্ব্যক্ত করছি।
পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারির পর বিশ্বব্যাংক যোগাযোগ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আরও ৬টি প্রকল্পে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত জানতে চেয়েছে। এ প্রকল্পগুলো হলো, ঢাকা আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট, ঢাকা বাইপাস প্রকল্প, দেবগ্রাম-প্রগতি সরণি সংযোগ সড়ক প্রকল্প, পোস্ট-লিটারেসি অ্যান্ড কনটিনিউইং এডুকেশন ফর হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট, মেঘনা ও মেঘনা-গোমতী টোলপ্লাজা, নকলা-হাটিকুমরুল-বনপাড়া সড়ক প্রকল্প এবং ঢাকা মহানগরী ৩য় সড়ক প্রকল্প। এছাড়াও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্পের ব্যাপারে জানতে চেয়েছে বিশ্বব্যাংক।
প্রিয় সুধী,
সম্প্রতি সরকার ৯টি নতুন ব্যাংক স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে। যাদেরকে ব্যাংক স্থাপনের অনুমতি দেয়া হয়েছে তারা সবাই শাসক দলের পরিচিত মুখ।
প্রতিটি ব্যাংক স্থাপনের জন্য ৪শ’ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধনের প্রয়োজন। যারা ব্যাংক করবেন তাদের অর্থের উত্স কি তা আজ পর্যন্ত অস্বচ্ছ রয়েছে। আগামী বাজেটেও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে। সঙ্গতভাবেই প্রশ্ন করা যায়, তথাকথিত ব্যাংক উদ্যোক্তাদের কালো টাকা সাদা করে পরিশোধিত মূলধন জোগান দেয়ার সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে কিনা?
বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন ব্যাংক স্থাপনের অর্থনৈতিক যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ গত দুই বছর ধরে তফসিলি ব্যাংকগুলো নিদারুণ তারল্য সঙ্কটে ভুগছে। এর ফলে সুদের হার বাড়িয়ে দিয়ে তাদের আমানত সংগ্রহ করতে হচ্ছে। নতুন ব্যাংকগুলো বাজারে এলে তারা কী করে প্রয়োজনীয় আমানত সংগ্রহ করে বাজারে টিকে থাকবে সেটাই প্রশ্ন।
অপরদিকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এই নতুন বাাংকগুলো বিদ্যমান ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ব্যবসা ছিনিয়ে নিয়ে আর্থিক বাজারে নিদারুণ অস্থিরতা সৃষ্টি করবে বলেও আশঙ্কা রয়েছে।
প্রিয় সুধী,
কুইক রেন্টাল ও রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনে বিদ্যুত্ খাতে ২০ হাজার কোটি টাকার ঊর্ধ্বে লুটপাট হওয়া এবং ওই টাকার সিংহভাগ ডলারে রূপান্তর করে বিদেশে পাচারের ব্যাপারটি আজ একটি open secret।
রেলওয়ের ‘কালো বিড়ালের’ কাহিনীটি আজ আর কারো অজানা নেই। একসময়কার রেলমন্ত্রীর এপিএসের গাড়ি থেকে বস্তাভরা টাকা উদ্ধারের মধ্য দিয়ে রেলে কোটি কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য জাতির নজরে এসেছে।
এখন হাস্যকর নাটক আর কায়দা-কৌশল করে এবং লোকদেখানো অর্থহীন সাজানো তদন্তের মাধ্যমে কালো বিড়ালকে আড়াল করার ব্যর্থ প্রয়াস চালানো হচ্ছে। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির নৃশংস হত্যাকাণ্ডের অন্তরালেও বিশাল অঙ্কের দুর্নীতি ধামাচাপা দেয়ার প্রয়াস আছে বলে অনেকেই মনে করেন। শেয়ারবাজারে ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারীকে সর্বস্বান্ত করে এবং এদের কারো কারোর আত্মহননের পরিণতির মাধ্যমে প্রায় লক্ষ-কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তের জন্য গঠিত কমিটির রিপোর্টে চিহ্নিত দোষীদের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত শাস্তিমূলক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে বরং তাদের অনেককে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেয়ায় শেয়ারবাজারে আস্থা ফিরে আসছে না। অপরদিকে, শেয়ার মার্কেট থেকে লুণ্ঠিত অর্থ ডলারে রূপান্তরিত করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলে জনমনে সাধারণ ধারণা।
আমরা লক্ষ্য করেছি, শেয়ার মার্কেট বিপর্যয়ের পরেই ডলার দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছে। ফলে আমদানি ব্যয় ও মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।
প্রিয় সুধী,
২০১২-১৩ অর্থবছরে খাতওয়ারি বরাদ্দের বাইরে ১ হাজার ৫১৭ কোটি টাকা উন্নয়ন সহায়তার নামে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে বলে জানা যায়। এই অর্থ সিটি করপোরেশন, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন করা হবে মর্মে কাগজে-পত্রে উল্লেখ থাকলেও মূলত এ অর্থ দলীয় ব্যক্তিদের অর্থক্ষুধা মেটানোর জন্যই ব্যয় হবে। এর বাইরেও ১ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ হিসেবে রাখা হয়েছে বলে জানা যায়। সুনির্দিষ্ট প্রকল্প বহির্ভূত এ বরাদ্দ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক স্বার্থেই ব্যবহার করা হবে বলে আমাদের আশঙ্কা। জনগণের করের অর্থ এভাবে নয়-ছয় করার অধিকার কারোর নেই।
প্রিয় সুধী ও সাংবাদিক ভাই-বোনেরা,
সম্প্রতি ভারতের সাহারা গ্রুপের সঙ্গে ঢাকা শহরের আশেপাশে আবাসন প্রকল্পের জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। শুধুমাত্র একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে বিনা টেন্ডারে ও বিনা প্রতিযোগিতায় কোন্ শর্তে এই প্রকল্পের জন্য নির্বাচিত করা হলো তা সম্পূর্ণ অস্বচ্ছ। ইতোমধ্যে টিআইবি’র পক্ষ থেকে এই অস্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বাংলাদেশী আবাসন কোম্পানিগুলোর স্বার্থ এ চুক্তি করার সময় সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করা হয়েছে। সরকারি ক্রয়নীতিকে পাশ কাটিয়ে এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে মহাদুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি হবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এক আত্মীয়কে আর্থিক আনুকূল্য পাইয়ে দিতে সাহারার সঙ্গে এ চুক্তি করা হয়েছে।
সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, শেখ ফজলে ফাহিমকে পরিচালক নিয়োগ করে ‘সাহারা মাতৃভূমি উন্নয়ন করপোরেশন লি.’ নামে সাহারা বাংলাদেশ সাবসিডিয়ারি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
প্রিয় সুধী,
সরকারের এসব দুর্নীতি প্রসঙ্গে বিশিষ্ট সমাজচিন্তক বদরুদ্দীন উমর একটি পত্রিকাকে তার মন্তব্য জানাতে গিয়ে বলেছেন—‘দুর্নীতির রাহুগ্রাসে বন্দি হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে সরকারের তৃণমূল—সর্বত্রই দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। দুর্নীতির কারণে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি স্থবির হয়ে পড়েছে। দাতা সংস্থাগুলো সরকারের ক্রমবর্ধমান দুর্নীতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দুর্নীতিবাজ ও অপরাধীদের শাস্তি দেয়ার পরিবর্তে রাষ্ট্র তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে। এতে ক্রমান্বয়ে দুর্নীতি ও অপরাধের মাত্রা আরও ব্যাপক হচ্ছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় দুর্নীতির বিষয়টি এখন আর বিদেশিদের মুখে সীমাবদ্ধ নেই, খোদ অর্থমন্ত্রীও বাংলাদেশের অগ্রগ্রতি, উন্নতি ও সুশাসনের পথে প্রধান অন্তরায় হিসেবে দুর্নীতিকে চিহ্নিত করেছেন।’
দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থ এভাবে ক্ষমতাসীনদের পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের গোত্রভুক্ত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেয়ার প্রক্রিয়াটিই হলো ‘ক্রনি ক্যাপিটালিজম’-এর মূল বৈশিষ্ট্য।
প্রিয় সুধী,
১৯৯১ সাল থেকে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় যে শৃঙ্খলা ও গতিশীলতা অর্জিত হয়েছিল, বাংলাদেশ যেভাবে সম্মানজনক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নজির সৃষ্টি করেছিল—সেসব আজ সরকারের অব্যবস্থাপনা, আনাড়িপনা, অযোগ্যতা, পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি, লুটপাট ও অপশাসনের ফলে সম্পূর্ণ ভেস্তে যেতে বসেছে। ১৯৭৫-এর পূর্বে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের পরিচিতি হয়েছিল ‘Bottomless Basket’ হিসেবে। আর আমাদের সময় দেশটি পরিচিত হয়েছে ‘Emerging Tiger’ হিসেবে। Goldman Sachs বাংলাদেশকে উন্নয়ন সম্ভাবনাময় Next Eleven-এর অন্তর্ভুক্ত করেছিল। যে উজ্জ্বল ভাবমূর্তি আমাদের সময় সৃষ্টি হয়েছিল, তা আজ কেবল ধূলিসাত্ই হতে বসেছে তাই নয়, ভবিষ্যতে যে কোনো সরকারের পক্ষে স্বাভাবিকভাবে সরকার পরিচালনা দুঃসাধ্য ও দুরূহ করে রেখে যাচ্ছে তারা। তারা রাষ্ট্রের সব institutions ধ্বংস করে দিচ্ছে।
প্রিয় সাংবাদিক ভাই-বোনেরা,
আমি এখন খুব দুঃখজনক একটি বিষয়ের দিকে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করব। আপনারা জানেন, ক্ষুদ্র ঋণের প্রবর্তক গ্রামীণ ব্যাংক ও ড. মুহাম্মদ ইউনূস নোবেল পুরস্কার অর্জনের মাধ্যমে জাতির মুখ উজ্জ্বল হয়েছে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, ব্যক্তি ঈর্ষা ও হিংসার বশবর্তী হয়ে সরকার গ্রামীণ ব্যাংক ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের খেলায় মেতেছে। সবাই জানেন, দারিদ্র্য মোচন ও নারীর ক্ষমতায়নে ক্ষুদ্রঋণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে ৮৫ লাখ পরিবার জড়িত। এই ৮৫ লাখ দরিদ্র সদস্যের শতকরা ৯০ ভাগই নারী। তারাই এই ব্যাংকের শতকরা ৯৭ ভাগের মালিক।
গ্রামীণ ব্যাংককে নিয়ন্ত্রণ ও দলীয়করণের সরকারি উদ্যোগ শতকরা ৯৭ ভাগ দরিদ্র মালিকের ভাগ্য অনিশ্চিত করে ফেলেছে। আমরা এর নিন্দা জানানোর পাশাপাশি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, ভবিষ্যতে সরকারে গেলে গ্রামীণ ব্যাংককে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে যথাযথ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করব।
প্রিয় সুধী ও সাংবাদিক ভাই-বোনেরা,
২০১১-১২ অর্থবছরের জন্য অর্থমন্ত্রী ১ লাখ ৬৩ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকার ব্যয় লক্ষ্যমাত্রা নিরূপণ করে যে বাজেট পেশ করেছিলেন, তাতে মোট ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছিল ৪৫ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতির জন্য দেশি উত্স থেকে প্রাপ্তি ধরা হয়েছিল ২৭ হাজার ২০৮ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক সূত্র থেকে ১৭ হাজার ৯৯৬ কোটি টাকা। এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারি ঋণের পরিমাণ প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা।
এর মধ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়া হয়েছে। অনুমান করা যায় যে, বছর শেষে এর পরিমাণ আরও বেশি দাঁড়াবে।
ভর্তুকি ব্যয় বাড়ার ফলে ২০১১-১২ অর্থবছরে অতিমাত্রায় সরকারি ব্যয় বেড়েছে। ভর্তুকির প্রাক্কলন ছিল ভয়ানক ত্রুটিপূর্ণ। এই অর্থবছরের বাজেট পেশের তিন মাসের মধ্যেই দেখা গেল ভর্তুকি প্রাক্কলন অত্যন্ত অপ্রতুল। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১১ সংশোধিত প্রাক্কলনে দেখা গেল, মূল বাজেটে প্রাক্কলনের তুলনায় ভর্তুকি ব্যয় ২ দশমিক ৭৫ গুণ। টাকার অংকে এটি দাঁড়াল ৪৭ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা; অথচ প্রাথমিকভাবে এর পরিমাণ ধরা হয়েছিল ১৭ হাজার ২৬১ কোটি টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের দায়ের বিপরীতে সরকার ২ হাজার ৭শ’ কোটি টাকার বন্ড ইস্যু করেছে।
সব মিলিয়ে বর্তমান অর্থবছরে সরকারের ভর্তুকি ব্যয় দাঁড়াবে ৪০ হাজার কোটি টাকার ওপর। এর মধ্যে বর্তমান অর্থবছরের বাজেট থেকে ২৯ হাজার কোটি টাকা দেয়া হবে এবং অবশিষ্ট ১১ হাজার কোটি টাকা আসন্ন অর্থবছরের বাজেটের ওপর চাপিয়ে দেয়া হবে। বল্গাহীন ভর্তুকি সরকারের অপরিণামদর্শিতা ও দেউলিয়াত্বেরই বহিঃপ্রকাশ। ভর্তুকির জন্য ব্যয়িত অর্থের কত অংশ উত্পাদনের কাজে লেগেছে, আর কত অংশ সরকারের পেটোয়া গোষ্ঠীর উদরপূর্তি করেছে—সেটাই আজ জনগণের জিজ্ঞাসা। সরকারের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় মারাত্মক ত্রুটির চিত্রই ফুটে উঠেছে ভর্তুকির এই হিসাব থেকে। ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগের চাহিদা পূরণ না করে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির নীতি চরম আত্মঘাতী। এর ফলে বেড়েছে মূল্যস্ফীতি, ভেঙে পড়েছে সামষ্টিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য। ভবিষ্যত্ প্রজন্মকে জর্জরিত করা হয়েছে ভর্তুকি দায়ের চাপে।
প্রিয় সুধী,
চলতি অর্থবছরের প্রথম সাড়ে চার মাসে সরকার পুরো বছরের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার যে প্রাক্কলন করেছিল, তার ৯৮ শতাংশ নিয়ে ফেলেছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এত অল্প সময়ের মধ্যে সরকারের এত বিরাট অংকের ঋণ নেয়ার ঘটনা নজিরবিহীন। নির্বিচারে কাগুজে নোট ছাপিয়ে ঋণ সরবরাহ করা হয়েছে। সরকারের প্রথম চার মাসেই বাজারে অতিরিক্ত মুদ্রা সরবরাহ হয়েছে প্রায় ৫৩ হাজার কোটি টাকা। বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে এত অধিক পরিমাণ ঋণ নেয়ার ফলে বেসরকারি খাতে সৃষ্টি হয়েছে ঋণ দুর্ভিক্ষের। ব্যাংকগুলোতে মারাত্মক তারল্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কলমানি মার্কেটে সুদের হার অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তারল্য সঙ্কটের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলো সরকারকে ঋণ দিতে অনীহা প্রকাশ করছে।
রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলো ঐতিহ্যগতভাবে কলমানি মার্কেটে অর্থ সরবরাহ করত। এখন তারা নিজেরাই কলমানি মার্কেটের শরণাপন্ন হচ্ছে। সেখানে সুদের হার আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে—যা বাংলাদেশের আর্থিক ইতিহাসে নজিরবিহীন।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে কলমানির গড় সুদের হার ছিল সর্বোচ্চ ১৯ দশমিক ৬৬।
(চলবে)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন