শনিবার, ৯ জুন, ২০১২

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীর বিচার : সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিল কি গঠিত হবে?


আসিফ আরসালান

বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিকের ব্যাপারে জাতীয় সংসদের স্পিকার আবদুল হামিদ চৌধুরী নাকি আগামীকাল সোমবার জাতীয় সংসদের তরফ থেকে রুলিং দেবেন। অবশ্য তাঁর এই প্রস্তাবিত রুলিং দেয়ার ব্যাপারে খোদ মহাজোট সরকারের মধ্যেই মতদ্বৈধতা রয়েছে। মহাজোটের তরফ থেকে আওয়ামী লীগের তোফায়েল আহমদ, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ওয়ারকার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাসদের মইন উদ্দিন খান বাদল এবং জাতীয় পার্টির তরফ থেকে মুজিবুল হক চুন্ন প্রমুখ সংসদ সদস্য মনে করেন যে এখানে রুলিং দেয়ার কিছু নাই। তাদের মধ্যে কয়েকজন গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর স্পিকারের সাথে দেখা করেছেন। তারা তাঁকে বলেছেন যে এটি আসলে আইন সভা অর্থাৎ পার্লামেন্ট এবং বিচার বিভাগের মধ্যে কোনো সংঘর্ষ নয়। এটি হাইকোর্টের একজন বিচারপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়। এই বিচারপতির নাম শামসুদ্দিন মানিক চৌধুরী। তিনি স্পিকারকে অপমান করেছেন। স্পিকারের মন্তব্যকে রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক অপরাধ বলে বর্ণনা করেছেন। ঐ বিচারপতি আরো বলেছেন যে, স্পিকার নাকি সুপ্রীম কোর্টের আইন কানুন সম্পর্কে অজ্ঞ। তাই জনাব আবদুল হামিদ চৌধুরীর আইনজীবীর সনদ থাকা উচিত কিনা সেটিও বিবেচনার বিষয়।
 সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী স্পিকারকে একদিকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করেছেন, অন্যদিকে জাতীয় সংসদকেও অপমান করেছেন। তাই তারা ঐ বিচারপতির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তারা সুস্পস্ট ভাষায় দাবি করেছেন যে ঐ বিচারপতি শামসুদ্দিনকে অপসারণের উদ্দেশ্যে জাতীয় সংসদে একটি প্রস্তাব পাস করা হোক। ঐ প্রস্তাবের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ করা হবে যে সংবিধান মোতাবেক সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করার জন্য প্রেসিডেন্ট যেন প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনকে অনুরোধ করেন। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে শাসক দল আওয়ামী লীগের মধ্যেই শামসুদ্দিন চৌধুরীর ব্যাপারে দুই ধরনের মত রয়েছে। একটি হলো তাকে অপসারণ করা, আরেকটি হলো স্পিকার হিসাবে এই বিষয়ে একটি রুলিং দেয়া। এখন আগামীকাল বা যেকোনো দিন স্পিকার কি করেন সেটি দেখার জন্য জনগণ প্রতীক্ষা করছে।
তবে একটি বিষয়ে এখানে পরিষ্কারভাবে বলা দরকার। জাতীয় সংসদে কয়েকজন সদস্য জনাব শামসুদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় বক্তব্য রাখার পরদিন কয়েকজন আইনজীবী এবং নাগরিক সমাজের সদস্য হিসাবে পরিচিত কয়েক ব্যক্তি এই বিষয়ে অযাচিতভাবে বিপদসংকেত বাজাতে থাকেন। তারা বলেন যে জাতীয় সংসদ এবং বিচার বিভাগ মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে। এটিকে আর বাড়তে দেয়া উচিত হবে না। বিষয়টি যদি চলতে থাকে তাহলে দেশের ক্ষতি হবে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হবে। বলতেই হচ্ছে যে এই সব সিনিয়র আইনজীবী এবং বুদ্ধিজীবী তিলকে তাল করছেন। সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এবং আপীল বিভাগ মিলে শতাধিক বিচারক রয়েছেন। এদের মধ্যে মাত্র একটি বেঞ্চের বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখছেন। তাও আবার পুরা বেঞ্চের বিরুদ্ধে নয়। এ বেঞ্চে রয়েছেন ২ জন বিচারক। এরা হলেন জনাব শামসুদ্দিন চৌধুরী ও জনাব জাহাঙ্গীর হোসেন। লক্ষ্য করার বিষয় হলো এই যে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে কারো কোনো অভিযোগ নাই। সব অভিযোগ  শামসুদ্দিন মানিকের বিরুদ্ধে। এমন তো নয় যে আপীল বা হাইকোর্ট বিভাগের কোনো রায়ের বিরুদ্ধে পার্লামেন্ট কোনো অবস্থান নিয়েছেন অথবা প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে কোনো অবস্থান নিয়েছেন। অথবা কোনো একটি রাজনৈতিক বা অন্য বিষয়ের ব্যাখ্যায় সুপ্রীমকোর্ট সামগ্রিকভাবে একটি অবস্থান গ্রহণ করলেন, আর পার্লামেন্ট সে ব্যাপারে ভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করলেন। এমন একটি পরিস্থিতিতে বিচার বিভাগ এবং পার্লামেন্ট মুখোমুখি অবস্থান গ্রহণ করেছে বলা যায়।
দুই.
পাকিস্তানের দিকে তাকিয়ে দেখুন। সেখানে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে গেছে একধারে বিচার বিভাগ, অন্যধারে নির্বাহী বিভাগ ও পার্লামেন্ট। নির্বাহী বিভাগের প্রধান হলেন প্রধানমন্ত্রী ইউসূফ রাজা গিলানী এবং পাক পার্লামেন্টের স্পিকার হলেন ফাহমিদা মির্জা। প্রধানমন্ত্রী গিলানীর প্রধানমন্ত্রিত্ব কেন থাকবে না এবং তাঁর পার্লামেন্ট সদস্য পদ কেন বাতিল করা হবে না, সেটি আদালতে স্বশরীরে এসে ব্যাখ্যা করার জন্য পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী এবং স্পিকারকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নির্দেশটি দিয়েছেন পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতিসহ ৩ বিচারপতি সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। যদি পার্লামেন্ট এবং বিচার বিভাগ মুখোমুখি দাঁড়ানোর কোনো নজির যদি খুঁজতে হয় তাহলে সেটা এই মুহূর্তে পাওয়া যাবে পাকিস্তানে। এ ধরনের কোনো ঘটনা বাংলাদেশে ঘটেনি। এখানে বিচারপতি মাত্র ১ জন। তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে। আদালতেই তাকে কোনো শাস্তি দেয়া হবে কি-না, দেয়া হলে তার পদ্ধতিটা কি হবে, সেটি আগামী দিনে দেখা যাবে।
স্পিকার কি বলবেন সেটা তিনিই  ভাল জানেন। তবে ইতোমধ্যেই স্পিকারের সাথে এ নিয়ে আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার স্পিকারের সাথে দেখা করেছেন প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেন এবং আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ। যদিও তাদের এই সাক্ষাৎকারকে ‘সৌজন্যমূলক' বলা হয়েছে, কিন্তু ‘ডেইলী স্টারের' রিপোর্ট থেকে দেখা যায় যে তাদের মধ্যে এই বিষয়টি নিয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। ‘স্টারের' ঐ রিপোর্টে বলা হয়েছে যে হাইকোর্টের বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের ‘অপমানসূচক মন্তব্যে'র  ফলে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সেই পরিস্থিতি নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ‘ডেইলী স্টারকে' আইনমন্ত্রী বলেছেন যে বিষয়টি নিয়ে তারা অনানুষ্ঠানিক  আলোচনা করেছেন। ঐ দিকে স্পিকারের কামরা থেকে প্রধান বিচারপতি এবং আইনমন্ত্রী বেরিয়ে আসার ১ ঘণ্টা পর মহাজোটের তোফায়েল আহমদ, রাশেদ খান মেনন, আবদুল মতিন খসরু, মইনউদ্দিন খান বাদল এবং মুজিবুল হক চুন্ন স্পিকারের সাথে দেখা করেন। তারা সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্পিকারকে অনুরোধ করেন। তারা বলেছেন যে এব্যাপারে স্পিকার নাকি প্রধানমন্ত্রী এবং এ্যাটর্নী জেনারেলের সাথে আলোচনা করবেন।
অন্যদিকে পার্লামেন্টে বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিকের বিরুদ্ধে উত্তপ্ত আলোচনার পরদিন থেকে তার জন্য একক বেঞ্চ  গঠন করে দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সুপ্রীম কোর্টের রেজিস্ট্রার অফিস থেকে জারি করা এক আদেশে  বলা হয়েছে যে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী ৭ জুন বেলা দেড়টা থেকে  একক বেঞ্চে বসে দেওয়ানী মামলা শুনানি করবেন।
তিন.
স্পিকার যে কথাটা বলেছিলেন সেটি কি রাষ্ট্রদ্রোহী বক্তব্য? রাষ্ট্রদ্রোহী কি-না, সেই বিচার কে করবে? গত ২৯ মে জাতীয় সংসদে অনুষ্ঠিত এক বিতর্কে অংশ নিয়ে স্পিকার আবদুল হামিদ বলেন, ‘‘আদালতের রায়ে জনগণ ক্ষুব্ধ হলে বিচার বিভাগের বিরুদ্ধেও তারা রুখে দাঁড়াতে পারে। আবার সরকারও যদি স্বৈরাচারী হয় তাহলে জনগণ সরকারের বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়তে পারে। তাই কারোরই এমন ভাব সাব দেখানো উচিত নয় যে আমি ক্ষমতা পেলাম, একটা কিছু দেখাই। ‘আমি কি হনুরে', ভাব না দেখিয়ে সবারই উচিৎ দায়িত্ব পালনের মনোভাব রাখা।’’
আপাতদৃষ্টিতে দেখা যায় যে স্পিকারের এই বক্তব্যটি একটি জেনারালাইজড বক্তব্য। এই বক্তব্যে বিচারপতি শামসুদ্দিন এতো ক্ষিপ্ত হলেন কেন এবং সরাসরি স্পিকারকে আক্রমণ করলেন কেন সেটি মানুষের কিছুতেই বোধগম্য হয়নি। আরেকটি বিষয় বিচারপতির নজর কিভাবে এড়িয়ে গেছে সেটিও মানুষের বোধগম্য হয়নি। আলোচনাটি হয়েছে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে। কথায় বলে, জাতীয় সংসদে ‘সাত খুন মাফ'। যারা বয়সে প্রবীণ এবং যারা বাংলাদেশ ও পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাস চর্চা করেন তারা একটি ঘটনা নিশ্চয়ই স্মরণ করতে পারবেন। সেটি হলো, তখন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের অধিবেশন চলছিলো। স্পিকারের দায়িত্ব পালন করছিলেন ডেপুটি স্পিকার জনাব শাহেদ আলী। অধিবেশন উত্তপ্ত হলে এক পর্যায়ে একজন সংসদ সদস্য ডেপুটি স্পিকারকে পেপার ওয়েট ছুঁড়ে মারেন। ওই নিক্ষিপ্ত পেপার ওয়েটের আঘাতেই জনাব শাহেদ আলীর মৃত্যু ঘটে। ডেপুটি স্পিকারের মৃত্যুর জন্য সেদিন কোনো সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মার্ডার চার্জ আনা হয়নি। কারণ, ঐ যে একটু আগেই বলেছি, সংসদের অধিবেশনে ‘সাত খুন মাফ'। এই যেখানে সংসদীয় দায় মুক্তি, সেখানে স্পিকার যে মন্তব্য করেছেন সেটি তো আদালতের আওতায় কোনোদিক দিয়েই আসতে পারে না। তারপরেও জনাব শামসুদ্দিন বিষয়টি নিয়ে এতোসব কঠোর মন্তব্য কেন করলেন, তাও আবার জাতীয় সংসদের অভিভাবক স্পিকারের বিরুদ্ধে, সেটি কারো বোধগম্য নয়।
চার.
স্পিকার একটি রুলিং দিলেই কি বিষয়টি শেষ হতে পারে? নাকি হওয়া উচিত? সেদিন টিভিতে দেখলাম, তোফায়েল সাহেবরা শামসুদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে যে সব মারাত্মক অভিযোগ আনলেন এবং তার বিচার করার যে দাবি তুললেন, সমস্ত সংসদ সদস্য টেবিল চাপড়ে উল্লাসে সেটি সমর্থন করেন। এটিই ছিলো সেদিনের সংসদের মুড। গোটা সংসদের এই অনুভূতি কি একটি রুলিংয়ের তলে চাপা পড়ে যাবে? তাছাড়াও যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে এতো সব গুরুতর অভিযোগ আনা হলো সেই সব অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার আগে তিনি কিভাবে আর বিচারপতির ঐ মর্যাদাবান, নিরপেক্ষ ও পবিত্র চেয়ারটিতে বসতে পারেন? বাংলাদেশের ৪০ বছরের ইতিহাসে জাতীয় সংসদে শাসক দলের একাধিক সদস্য এভাবে আর প্রকাশ্যে কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে কথা বলেননি। এখন যদি ঐসব অভিযোগকে চেপে রাখা হয় এবং ছ্যাপ ল্যাপ দিয়ে ধামাচাপা দেয়া হয় তাহলে জাতীয় সংসদের সম্মান এবং সার্বভৌমত্বই প্রশ্নবিদ্ধ হয়। তাই সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিল অবশ্যই গঠন করা প্রয়োজন এবং আলোচ্য বিচারপতির আচরণ তদন্ত করে দেখা দরকার।
প্রসঙ্গত দু'একটি কথা বলা দরকার। আলোচ্য বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী সম্পর্কে অতীতেও আচরণ-বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু সংসদ সদস্যরা সেগুলো আমলে নেননি। আজ যদি স্পিকারের বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ না উঠত তাহলে সম্ভবত আলোচ্য বিচারক অক্ষতই রয়ে যেতেন। এ সম্পর্কে অনেক ফিরিস্তি দেয়া যায়। একটি ঘটনা উল্লেখ করছি। ফজলুল হক আমিনীর মামলায় এই বিচারপতি অপ্রাসঙ্গিকভাবে বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগ এনেছিলেন। সেদিন সুপ্রীম কোর্টের অন্তত ৫ জন সিনিয়র আইনজীবী তাঁর চেম্বারে তাঁর সাথে সাক্ষাত করেন এবং বেগম জিয়াকে জড়িত করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান। তিনি হাইকোর্টের বিচারপতি থাকা অবস্থায় লন্ডনে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভায় অংশগ্রহণ করেন। এই মিটিংয়ে তাঁর অংশগ্রহণের ছবিও পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিলো। যেহেতু তাঁর এই কাজটি বিরোধী দলের পক্ষে গিয়েছে তাই সেদিন সরকার পক্ষ কানে দিয়েছিলেন তুলো। কিন্তু আজ যখন ছোবলটি আসল জায়গায় হানা হয়েছে তখন তাদের অাঁতে ঘা লেগেছে।
বিচারকদের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতাই প্রধান মাপকাঠি হওয়া উচিত।
Email: asifarsalan15@gmail.com

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন