আসিফ আরসালান
এতোদিন ধরে বলা হতো, পুলিশ বাড়াবাড়ি করছে। কিন্তু এখন পুলিশ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গত সপ্তাহের পুরোটা তারা যে দক্ষযজ্ঞ কান্ড করেছে সেটি বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ টেলিভিশনে দেখেছেন এবং পত্রিকার পাতায় পড়েছেন। কিন্তু শিক্ষিত এবং সচেতন লোক নিজেদের মধ্যে প্রশ্ন করছেন, পুলিশ এ রকম উচ্ছৃক্মখল এবং বেপরোয়া হয়ে উঠল কেন? আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এব্যাপারে জনগণকে একটি নতুন থিওরী খাওয়ানোর চেষ্টা করছেন। নির্বাচনের দেড় বছর আগে পুলিশ কেন এমন লাগাম ছাড়া হয়ে গেলো সেটার পেছনে একটি রহস্য আছে বলে তিনি মনে করছেন। এ রহস্য উদঘাটন প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। জনাব হানিফকে রহস্য উদঘাটনে মানা করেছে কে? তার সরকার তো অল পাওয়ার ফুল সরকার। তারা দেশে যা ইচ্ছা তাই করছেন। শুধু মাত্র ৩টি কাজ তারা করতে পারছেন না। সেগুলো হলো (১) দিনকে রাত এবং রাতকে দিন করা (২) সূর্যকে পশ্চিম দিকে ওঠানো এবং পূর্বদিকে ডোবানো এবং (৩) মেয়ে মানুষকে পুরুষ মানুষে এবং পুরুষ মানুষকে মেয়ে মানুষে রূপান্তর করা। এগুলো ছাড়া সব কাজই তারা পারছে। তো, এতোই যখন তাদের ক্ষমতা তখন তারা পুলিশের এই বাড়াবাড়ি বা উচ্ছৃক্মখলতার রহস্য ভেদ করলেই পারেন। এটি তো তাদের কাছে নাসারন্ধ্রে নস্যি দেয়ার মতো তুচ্ছ ব্যাপার। তো সেই তুচ্ছ কাজটিই তারা শুরু করছেন না কেন?
হানিফ সাহেবরা সেটি কিভাবে শুরু করবেন? তাদের নিজেদের মধ্যে কথা ও কাজে কি কোনো মিল আছে? স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু সেদিন সাংবাদিকদের নসিহত করেছেন যে, পুলিশরা যখন পেশাগত দায়িত্বে থাকে তখন সাংবাদিকরা যেন তাদের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকে। আগে দেখতাম, বড় লোকদের বাসার মেইন গেটে একটি ছোট সাইন বোর্ড ঝুলানো থাকতো। ঐ ছোট সাইন বোর্ডে লেখা থাকতো, ‘‘কুকুর হইতে সাবধান’’। এখন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী যা বললেন তারপর শুধুমাত্র একটি কাজ বাকি থাকে। সেটি হলো, প্রত্যেক পুলিশের পিঠে বড় বড় হরফে একটি করে স্টিকার লাগালো। স্টিকারে লেখা থাকবে, ‘‘পুলিশ হইতে সাবধান’’। এসব কথা লিখছি ঠিকই, কিন্তু ভাবছি, আমাদের কোনো কোনো মন্ত্রীর সেন্স কি নষ্ট হয়ে গেলো? তারা কি সকলে হুঁশ-জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন? মনে হয় এ ব্যাপারে সবচেয়ে ভাল প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী প্রখ্যাত আইনজীবী ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেছেন যে, এই ধরনের উক্তি করার জন্য স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বিতীয় শীর্ষ ব্যক্তি যখন এই ধরনের বালখিল্য এবং হাবিজাবি উক্তি করতে পারেন তখন তার অধীনস্ত পুলিশ বাহিনীর নিকট থেকে এর চেয়ে ভাল কিছু আশা করা যায় কিভাবে?
আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন তার প্রতিমন্ত্রীর চেয়ে আরেক ডিগ্রি সরেস। গত বুধবার তিনি অবলীলাক্রমে বলেছেন যে, পুলিশ নাকি আগের চেয়ে অনেক ভাল হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, তিনি পুলিশকে ‘ভাল' করেছেন। তার জন্য অবশ্যই তাকে নাকি একটি সার্টিফিকেট দেয়া উচিত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা শুনে হাসব না কাঁদব বুঝতে পারছি না। যে বুধবার তিনি পুলিশকে ভাল হওয়ার কারণে সার্টিফিকেট দিয়েছেন তার দুই দিন আগে সেই একই পুলিশ প্রকাশ্য দিবালোকে আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশ ক্লাবে এক তরুণীকে ধর্ষণের অপচেষ্টা চালায়। তরুণীটির পিতা একটি মামলার জন্য আদালতে এসেছিলেন। তার সাথে ছিল স্ত্রী এবং এই তরুণী কন্যা। জনতার সামনে পুলিশ তার পিতাকে একটি ঘরে নিয়ে যেয়ে আটকে রাখে এবং অপর পুলিশ ঐ তরুণীটিকে ক্লাবে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ব্যাপারটি এতোই প্রকাশ্যে ঘটে যে উপস্থিত জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। জনতার মধ্য থেকে তিনজন সাংবাদিক এবং দুইজন আইনজীবী এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেন। তখন পুলিশ ঐ ৩ সাংবাদিক এবং ২ আইনজীবীকে বেদম লাঠিপেটা করে। এই ব্যাপারে পুলিশের বিরুদ্ধে তরুণীটির মাতা থানায় এজাহার দিতে গেলে পুলিশ সেই এজাহার গ্রহণ করতে অস্বীকার করে। পরদিন পুলিশের এই অপকর্ম এবং দুর্বৃত্তপনা সংবাদপত্র এবং টেলিভিশনে ফলাও করে সম্প্রচারিত ও প্রচারিত হয়। তখন হাইকোর্ট থেকে পুলিশ বাহিনীর ৮ জন সদস্যকে কারণ দর্শানোর রুল জারি করা হয়। হাইকোর্টের এই রুল জারিতে সম্ভবত পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলের টনক নড়ে। তাই পরদিন তরুণীর মাতাকে ৬ ঘণ্টা থানায় বসিয়ে রেখে অবশেষে রাত ২ ঘটিকায় থানা পুলিশ এজাহার গ্রহণ করে।
\ দুই\
যে কাজটি হাইকোর্ট করলো সেই কাজটি তো করার কথা ছিল পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। পুলিশের আইজি জনাব খন্দকার টেলিভিশনে শুদ্ধ ভাষায় ভাল ভাল কথা বলেন। কমিশনার বেনজীর আহমেদ নরমে-গরমে মিশিয়ে কথা বলেন। কিছু কিছু সামাজিক অনুষ্ঠানেও তাকে দেখা যায়। এতো জঘন্য ঘটনা ঘটে গেলো, দেশময় তোলপাড় হলো, কিন্তু তাদের মতো হোমড়া-চোমড়ারা নীরব দর্শকের মতো বসে থাকলেন কেন? যেদিন এই কুৎসিত ঘটনা ঘটে সেদিনই তাদের উচিত ছিল অপরাধী পুলিশদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এটি তো পুলিশ কর্তৃপক্ষ হিসাবে তাদেরই কাজ ছিল। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এব্যাপারে কি করলেন? তাদের মুখ থেকে এ সম্পর্কে একটি কথাও বের হলো না। অথচ তারা নাকি জনপ্রতিনিধি। কোন্ ধরনের জনতার প্রতিনিধিত্ব করেন তারা? কোথায় গেলো বাংলাদেশের সুশীল সমাজ? ধন্যবাদ সুলতানা কামালকে। ঘটনা শুনে তিনি ছুটে গেছেন থানায় এবং পুলিশের কব্জা থেকে ঐ তরুণী এবং তার পরিবারকে বের করে এনেছেন। তাকে ছাড়া যারা প্রগতি, নারীর ক্ষমতায়ন এসব নিয়ে দিন-রাত গলা ফাটিয়ে চিৎকার করেন তাদের একজনকেও এব্যাপারে এগিয়ে আসতে দেখা গেলো না কেন? নাকি আওয়ামী আমলে এসব দুর্বৃত্তপনা হচ্ছে বলে তারা খামোশ রয়েছেন? এই সব ‘সুশীলে'র কাছে ভাল এবং খারাপের মাপকাঠি এক আজব চীজ। বিএনপি বা জোট সরকারের আমলে পুলিশ যখন কোনো বাড়াবাড়ি করেছিল তখন এইসব সুশীল চট করেই দায়ী করেছিলেন সরকারকে এবং বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। কিন্তু যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলো এবং যখন পুলিশ বেপরোয়া হলো সেক্ষেত্রে কাউকে দায়ী করা হলো না, পুলিশকেও নয়, সরকারকেও নয়। যেহেতু সরকারকে দায়ী করা হচ্ছে না সেহেতু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সমালোচনার সম্মুখীন হচ্ছেন না। তারা তাই বহালতবিয়তে গদিনসীন আছেন। ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের এমন প্রকৃষ্ট নজির পৃথিবীর আর কোথাও আছে কিনা সন্দেহ।
এতোক্ষণ ধরে শুধুমাত্র আদালত প্রাঙ্গণের ঐ ঘটনাটি নিয়েই আলোচনা করলাম। এর মধ্যেই আরো কয়েকটি ঘটনা ঘটে গেছে। সকলেই কমবেশী সেগুলো জানেন। তারপরেও আলোচনার প্রাসঙ্গিকতার জন্য সেই সব বিষয়ের উল্লেখ করতে হয়।
পলিটেকনিকের ছাত্রদের বিক্ষোভের ছবি এবং খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে দৈনিক ‘প্রথম আলো'র ৩ জন সাংবাদিককে পুলিশ নির্দয়ভাবে লাঠিপেটা করেছে। গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশ কালীগঞ্জের বালু ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মামুন ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করে এবং হাতকড়া পরায়। অবিশ্বাস্য ব্যাপার হলো এই যে হাতকড়া পরানোর পর পুলিশ তাকে তুলে দেয় সন্ত্রাসীদের হাতে। আর সন্ত্রাসীরাও পুলিশের উপস্থিতিতেই ব্যবসায়ী মামুনকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে হত্যা করে। গত মঙ্গলবার ভোলার ভাসানচরে গণধোলাইয়ে ৫ জলদস্যু নিহত হয়। বুধবার একই উপজেলায় জনতা ৪ জন জলদস্যুর চোখ উপড়ে ফেলে। একই দিন মনপুরা উপজেলার নেজামে জনতা আরো ৪ জলদস্যুর চোখ উৎপাটন করে। দেখা যাচ্ছে যে শুধুমাত্র ভোলা এবং মনপুরাতেই জনতার হাতে ৫ জনের মৃত্যু এবং ৮ জনের চক্ষু উৎপাটনের মতো ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃক্মখলা পরিস্থিতির কতখানি অবনতি ঘটলে এবং আইন-শৃক্মখলা বাহিনীর উপর জনগণ কতখানি আস্থাহীন হয়ে পড়লে তারা আইন নিজের হাতে তুলে নেয় তার জ্বলন্ত নজির হলো ভোলা ও মনপুরার এসব ভয়াবহ ঘটনা।
\ তিন \
এসব বীভৎস ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয় ৭২ থেকে ৭৫ এর নৈরাজ্যকর অবস্থা। এসব নৈরাজ্যকর ঘটনার পূর্ববর্তী ৪/৫ দিনে পুলিশী বর্বরতা এবং আইনশৃক্মখলা বাহিনীর প্রতি আস্থাহীনতার বহিঃপ্রকাশ হিসাবে কয়েকটি উচ্ছৃক্মখল ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকা ছাড়াও বরিশালে এক নারীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা, আগারগাঁয়ে ৩ সাংবাদিককে প্রহার, পাবনার হাজতখানায় আসামিকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা, ইত্যাদি। পুলিশের সাম্প্রতিক এই বেপরোয়া আচরণে দেশের সচেতন মানুষ শুধুমাত্র উৎকণ্ঠিতই হননি, তারা রীতিমতো হতচকিত হয়েছেন। কারণ, অতীতেও পুলিশের মাঝে বাড়াবাড়ি পরিলক্ষিত হলেও এমন বেপরোয়া এবং ‘ডোন্ট কেয়ার' ভাব দেখা যায়নি। তাই সচেতন ও বিবেকবান মানুষ ভাবছেন, কেন এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ও অশুভ পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটলো।
পুলিশের এই বেপরোয়া ভাব নিয়ে গত কয়েকদিনে বিভিন্ন প্রাইভেট চ্যানেলে বেশ কয়েকটি টক শো অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব টকশোতে পুলিশের সাবেক আইজি থেকে শুরু করে আইনজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, রাজনীতিক, সাংবাদিক, কলামিস্ট প্রমুখ অংশ নিয়েছেন। আলোচকরা সকলেই মোটামুটি অভিন্ন সুরে বলেছেন যে, একের পর এক অপরাধ করে অপরাধীরা শুধু পার পেয়েই যাচ্ছে না, ক্ষেত্র বিশেষে কোনো কোনো অপরাধীকে প্রমোশন দেয়া হচ্ছে অথবা তাদের ভাল পদায়ন হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, যে পুলিশ অফিসারটি বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুককে নির্দয়ভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছিল এবং যে অমানুষিক নির্যাতনের চিকিৎসার জন্য জনাব ফারুককে সুদূর আমেরিকায় যেতে হয়েছিল সেই পুলিশ অফিসার হারুনকে ঢাকার লালবাগ জোনে পোস্টিং দেয়া হয়েছে। এটিকে একটি প্রাইজ পোস্টিং হিসেবে পুলিশ বিভাগে গণ্য করা হয়। বিগত কয়েক বছরের পুলিশী বর্বরতার খতিয়ান নিয়ে দেখা গেছে যে, পুলিশের যেসব অফিসার এই বাড়াবাড়িতে মাত্রাতিরিক্ত উৎসাহ দেখিয়েছে তারা একটি বিশেষ জেলার, অর্থাৎ গোপালগঞ্জের লোক। এভাবে এলাকা বা জেলা বিশেষের প্রতি বিশেষ পক্ষপাতিত্ব এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে বেআইনিভাবে প্রহার করায় শাস্তি প্রদানের পরিবর্তে পুরস্কার প্রদানের কারণে পুলিশের মধ্যে সেই প্রত্যাশিত শৃক্মখলা এবং চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়ছে। আওয়ামী সরকার পুলিশের অপকর্মকে যতই প্রশ্রয় দিচ্ছে পুলিশের অপকর্ম ততোই জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রতি আনুগত্যের কারণে পুলিশের একটি অংশকে যতই লাই দেয়া হচ্ছে ততোই তাদের অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে চূড়ান্ত পরিণামে সর্বনাশ হবে সমগ্র দেশের। ১ লাখ ৪৩ হাজার সদস্য সম্বলিত একটি বাহিনী, যাদের হাতে রয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র, তারা যদি সরকারের প্রশ্রয়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তাহলে সেই নিয়ন্ত্রণ ফিরে আনা প্রায় অসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। পরবর্তী সরকারও তাদের শৃক্মখলার মধ্যে আনতে হিমশিম খাবে। তাই পুলিশের ব্যাপারে আর দলবাজি নয়। আওয়ামী সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হোক এবং তারা দেশটাকে রসাতলে নিক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকুন।
ইনসেট
যারা প্রগতি, নারীর ক্ষমতায়ন এসব নিয়ে দিন রাত গলা ফাটিয়ে চিৎকার করেন তাদের একজনকেও এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে দেখা গেলো না কেন? নাকি আওয়ামী আমলে এসব দুর্বৃত্তপনা হচ্ছে বলে তারা খামোশ রয়েছেন? এই সব ‘সুশীলে'র কাছে ভাল এবং খারাপের মাপকাঠি এক আজব চিজ। বিএনপি বা জোট সরকারের আমলে পুলিশ যখন কোনো বাড়াবাড়ি করেছিল তখন এইসব সুশীল চট করেই দায়ী করেছিলেন সরকারকে এবং বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। কিন্তু যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলো এবং যখন পুলিশ বেপরোয়া হলো সেক্ষেত্রে কাউকে দায়ী করা হলো না, পুলিশকেও নয়, সরকারকেও নয়। যেহেতু সরকারকে দায়ী করা হচ্ছে না সেহেতু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সমালোচনার সম্মুখীন হচ্ছেন না। তারা তাই বহাল তবিয়তে গদিনসীন আছেন। ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের এমন প্রকৃষ্ট নজির পৃথিবীর আর কোথাও আছে কিনা সন্দেহ।
Email: asifarsalan15@gmail.com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন