মঙ্গলবার, ৫ জুন, ২০১২

জাতীয় বাজেট : কয়েকটি প্রস্তাব




ফ রি দ আ হ ম্ম দ চৌ ধু রী
আগামীকাল ২০১২-২০১৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনা মাননীয় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদে পেশ করতে যা”েছন। ইতিমধ্যেই বাজেটের আকার বড় করার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে, যাতে জনগণকে চমক দেখানো যায়। আমার বিশ্বাস, বড় অংকের বাজেট নয় বরং বাস্তবধর্মী জনকল্যাণমুখী বাজেটই জনগণ আশা করে। সরকারের আয়-ব্যয়ের হিসাব, রাষ্ট্রের সঠিক অর্থনৈতিক ব্যব¯’াপনা এবং যথাযথ শৃংখলার দলিল হিসেবে প্রতি বছর বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। রাজনীতি ও অর্থনীতি একে অন্যের পরিপূরক। রাজনৈতিক সততা, ¯ি’তিশীলতা এবং আইনের শাসন যথাযথ না থাকলে বাজেট জনগণের কল্যাণে অবদান রাখতে সক্ষম হয় না। দুর্ভাগ্যজনক হলেও বাস্তবতা হ”েছ, বাজেটের আগে ও পরে ঝজঙ এর মাধ্যমে এবং কখনও কখনও দলীয় স্বার্থে সরকার এই দলিলের অঙ্গীকারগুলো প্রায় তছনছ করে ফেলে। এবারও বাজেট প্রস্তাবনা ঘোষণার আগে গ্যাস, জ্বালানি তেল এবং বিদ্যুতের দর বৃদ্ধি করা হয়েছেÑ যাতে ওই বিষয়গুলোর ওপর বাজেট সমালোচনা থেকে জনগণকে বিরত রাখা যায়।
বিগত দশক থেকে মুক্তবাজার অর্থনীতির নামে দেশে মূলত নেকেট অর্থনীতি (ঘধপশবঃ ঊপড়হড়সু) ব্যব¯’া চালু হয়ে আসছে। ফলে বিদেশে অব¯’ানরত প্রবাসী বাঙালিদের কষ্টের আয়, তৈরি পোশাক রফতানি এবং অল্প কিছু অন্য রফতানি থেকে কষ্টে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের একটি বড় অংশ অপ্রয়োজনীয় বিলাসবহুল দ্রব্য আমদানিতে অপচয় করা হ”েছ, যার আদৌ কোন প্রয়োজন নেই এবং বাংলাদেশের যে অর্থনৈতিক কাঠামো তাতে এ বিলাসিতা একেবারেই অনৈতিক ও অগ্রহণযোগ্য। এসব বিলাস দ্রব্য মূলত ব্যবহার করছে বেশির ভাগ নব্যধনিক শ্রেণী, ঘুষখোর, চোরাকারবারি এবং লুটেরা গোষ্ঠী, যাদের এ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সঙ্গে কোন সহযোগিতা বা সম্পর্ক নেই। মূলত বিগত দশকের অর্থনৈতিক ব্যব¯’া শোষণ প্রক্রিয়াকে মজবুত করেছে এক অতি চাতুরিক ব্যব¯’ায়। যেখান থেকে উৎপত্তি হ”েছ প্রতিনিয়ত নব্যলুটেরা ধনিক শ্রেণী। আর বৃহত্তর জনগোষ্ঠী হ”েছ নিঃস্ব, সম্বলহীন ও অসহায়। এটা গণতান্ত্রিক বা ন্যায়নীতির দেশ হিসেবে গণ্য হতে পারে না। 
বাস্তবতার নিরিখে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আমাদের জাতীয় বাজেট প্রণয়ন করা হয় সাধারণ জনগোষ্ঠীকে শোষণ করে নব্যধনিক শ্রেণী এবং লুটেরা গোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষার লক্ষ্যে। এটা পুরোপুরি বুর্জোয়া অর্থনৈতিক ব্যব¯’াÑ প্রলেতারিয়েত গোষ্ঠীর জন্য নয়Ñ যদিও তারাই বৃহত্তর জনগোষ্ঠী যাদের বড় একটি অংশ মুক্তিযুদ্ধে রক্ত দিয়েছে। এদেরই অবদান, ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে শেখ মুজিব ‘বঙ্গবন্ধু’ এবং ‘জাতির জনক’ হতে পেরেছেন। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর সার্বিক অব¯’া নিরূপণ করে দারিদ্র্যবিমোচন এবং বেকারত্ব হ্রাস করার সততা ও আন্তরিকতা অতীতের বাজেটগুলোতে ছিল না। একই সঙ্গে জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করে তোলার কোন ব্যব¯’াপনা বাজেটে প্রতিফলন হয়নি। এটা সত্য, বিশ্বের কোন ব্যব¯’াপনায় শ্রেণীহীন সমাজ গঠন সম্ভব নয়Ñ কিš‘ শোষণহীন সমাজ গঠন অবশ্যই সম্ভব। 
বেশ কিছুদিন থেকে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে অনেকটা পাগলা ঘোড়ার মতো। এটি নিয়ন্ত্রণের যৌক্তিক কোন পদক্ষেপ দৃশ্যমান হয়নি। 
বাংলাদেশে বহু সমস্যা বিদ্যমান, যার বেশির ভাগ সৃষ্টি হয়েছে অপ্রকৃতি¯’ রাজনৈতিক সংস্কৃতির কারণে। বিনীতভাবে আমার প্রস্তাব থাকবে, যেহেতু সরকার ‘মুক্তবাজার অর্থনীতি’তে বিশ্বাস করে, সেহেতু সরকারের আকার দৃশ্যমানভাবে ছোট করা, সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনা হোক। অপচয় বন্ধ করা হোক। মন্ত্রী, সচিবদের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ সংকোচন করা অপরিহার্য। সংসদ সদস্যদের করবিহীন গাড়ি আমদানি সম্পূর্ণ বন্ধ করে সংসদের অধীনে প্রয়োজনে পুল থেকে গাড়ি ব্যবহারের ব্যব¯’া করা যেতে পারে। অনেকটা কম দায়িত্ববান উপজেলা চেয়ারম্যানদের পাজেরো গাড়ির পরিবর্তে গ্রামে ব্যবহারের উপযোগী ছোট কম দামের জিপ গাড়ি প্রদান, ওএসডি করে শত শত সরকারি কর্মকর্তাকে কর্মহীন করে না রাখা, সরকারি বিলাসিতা বন্ধ করা ইত্যাদি পদক্ষেপের মাধ্যমে বাজেটের ব্যয়ের খাতটি বহুলাংশে কমানো সম্ভব। এছাড়াও সব রকম বিলাসি দ্রব্য ও ১৫০০ সিসির ঊর্ধ্বে যে কোন প্রাইভেট কার বা জিপের ক্ষেত্রে শতভাগ মার্জিন ছাড়া কোন ব্যাংকে এলসি যেন না করা হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং একই সঙ্গে অন্যান্য প্রক্রিয়ায় নির“ৎসাহিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ অবশ্যই নেয়া প্রয়োজন। যে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী অত্যন্ত গরিব এবং ২ কোটি ৮০ লাখের মতো বেকার, সে দেশে বিলাসবহুল দ্রব্য এবং ১৫০০ সিসির ঊর্ধ্বে কার বা জিপ আমদানি অনাকাক্সিক্ষত ও রাষ্ট্রের জন্য অপরিণামদর্শী পদক্ষেপ। 
অতীতের বাজেট প্রস্তাবনায় অর্থনৈতিক ব্যব¯’াপনার দক্ষতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয় উদ্যোগ পরিলক্ষিত নয়। তাই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি খাতে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব যুক্তিসঙ্গত নয়Ñ যেখানে বিগত অর্থবছরগুলোতে এ কর্মসূচির অর্ধেকও বাস্তবায়ন হয়নি। অর্থমন্ত্রী ব্যক্তিগত পর্যায়ে একজন অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তিত্বÑ সেই বিবেচনায় তার বাজেট পরিকল্পনা বা ব্যব¯’াপনায় সৎ হওয়া উচিত, এমনকি মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করতে হলেও।
প্রবৃদ্ধির টেকসই গতি সঞ্চারণ নিশ্চিত করতে হলে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, তৈরি পোশাক শিল্প (আরএমজি) খাত, বস্ত্র তৈরির শিল্প (টেক্সটাইল) ও মানবসম্পদ রফতানি ইত্যাদির অগ্রগতির জন্য বাস্তবমুখী সহযোগিতার পদক্ষেপ নিতে হবে, অন্যদিকে সার্বিক গ্রামীণ অর্থনীতিকে গতিশীল করতে অধিক মাত্রায় সহযোগিতার পদক্ষেপ ও যথেষ্ট বরাদ্দ বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা জর“রি হয়ে পড়েছে। ২০১১-২০১২ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনায় এর যুগোপযোগী বা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের প্রতিফলন দেখা যায়নি, বরং সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করলে এসব ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব লক্ষণীয়। এ অব¯’ায় ২০১২- ২০১৩ অর্থবছরের বাজেটে বিষয়টির প্রতি গুর“ত্ব দেয়া অপরিহার্য। 
গত অর্থবছরের বাজেটে ‘অফিস এবং শিল্প-কারখানা ঘরের’ ভাড়ার ওপর উৎস কর ছাড়াও ভাড়াটিয়ার ওপর ৯ থেকে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর প্রয়োগ করা হয়, যা এখনও বিদ্যমান। এটা যেমন অনৈতিক, ঠিক একইভাবে শিল্পকে প্রতিযোগিতায় ব্যর্থ করার একটি সূক্ষ্ম প্রক্রিয়াও বটে। সরকারের রাজস্ব আয়ের প্রক্রিয়া এ কর বৃদ্ধির লক্ষণ থেকে সহজে বোধগম্য। যারা সৎভাবে কর দেন, তাদের ওপর আরও বেশি করের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে অর্থ আহরণের চেষ্টা স্বাভাবিক রাষ্ট্রীয় দর্শন হতে পারে না। 
বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল ইত্যাদির পুনঃপুন দাম বৃদ্ধি, অসহনীয় বিদ্যুৎ ঘাটতিÑ সব মিলে বর্তমান সচল শিল্পখাতগুলোকে পাটশিল্পের মতো ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে। কয়েকদিন আগে অর্থমন্ত্রী সততার সঙ্গে স্বীকার করেছেন, বর্তমানে বিদ্যুতের অব¯’া তিন বছর আগের অব¯’ানেই বিরাজ করছে। এ অব¯’ায় সুচিন্তিত সংস্কার ও পরিবর্তনের প্রতিফলন যদি বাজেটে না থাকে, সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের শিল্পখাতগুলো যথাযথভাবে টিকে থাকতে সক্ষম নাও হতে পারে। এছাড়া সবাইকে গুর“ত্বসহকারে খেয়াল রাখতে হবে, মিয়ানমার গার্মেন্টস ব্যবসায় বাংলাদেশের বড় প্রতিযোগী হিসেবে আগামী এক বা দুই-তিন বছরের মধ্যে আÍপ্রকাশ করবে। মিয়ানমারে শ্রম শিল্পবান্ধব কারখানা ¯’াপনে ভূমি মূল্য তুলনামূলকভাবে অত্যন্ত কম এবং শ্রমিক মজুরি বাংলাদেশের চেয়ে বহুমাত্রায় সস্তা। এর মধ্যে চীন, থাইল্যান্ড ও ভারতীয় শিল্প উদ্যোক্তরা মিয়ানমারে তৈরি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শুর“ করছে। কেউ কেউ তৈরি পোশাক শিল্প গড়ে তোলার জন্য ইতিমধ্যে ভূমি লিজও হস্তগত করেছে। বিষয়টি গভীরভাবে বিবেচনায় নেয়া পররাষ্ট্র এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের জন্য অতীব গুর“ত্বপূর্ণ। সুতরাং আগামী দিনে বাংলাদেশকে বড় ধরনের প্রতিযোগিতায় নামতে হবে। এরই মধ্যে আবারও বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সংকেত পাওয়া যা”েছ। যখনই বিদ্যুৎ ও তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়া হয়, ঠিক তখনই নিত্যপণ্যসহ বাস, রিকশা, ট্যাক্সি ইত্যাদির ভাড়া বৃদ্ধি পায়, যা সাধারণ নাগরিকদের বহন করতে হয়। অথচ বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কারণে বিদ্যুৎ ও তেলের ভর্তুকির চাপ সৃষ্টি হয় না। এটা হয় মূলত যারা ব্যক্তিগত গাড়ির মালিক, শিল্প-কারখানা চালান, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অফিস ব্যবহার করেন, তাদের কারণে। সে বিবেচনায় সব নাগরিকের ওপর এই বৃদ্ধির চাপ অগ্রহণযোগ্য, অনুচিত ও অনৈতিক। একটি গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল রাষ্ট্রের এমন দর্শন হওয়া উচিত নয়। বরং যেসব খাতে তেল ও বিদ্যুৎ অতিরিক্ত ব্যবহƒত হয়, তাদের কাছ থেকে সরকার ঝঁনংরফু জবপড়াবৎু (ঝজ) বা ঝঁনংরফু অফলঁংঃসবহঃ (ঝঅ) ভর্তুকি আদায় করার আইনগত ব্যব¯’া নিতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ১৫০০ সিসি ও এর নিচে সব গাড়ি প্রতি বছর নবায়নের সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা, ১৫০০ সিসি থেকে ২৫০০ সিসি পর্যন্ত তিন লাখ টাকা এবং ২৫০০ সিসি ও এর উপরে যে কোন ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করছি। কারণ যাদের গাড়ি ব্যবহার করার আর্থিক অব¯’া আছে তাদের রাষ্ট্র কর্তৃক ভর্তুকি দেয়ার কোন কারণ নেই। এছাড়া শিল্পখাতগুলোর কাছ থেকে উৎপাদন ক্ষমতা অনুযায়ী স্ব স্ব এসোসিয়েশনের (ট্রেড বডি) মাধ্যমে মাসিক বা বাৎসরিকভাবে যুক্তিসঙ্গত ভর্তুকি (ঝজ বা ঝঅ) আদায় করা যেতে পারে। ২০০০ বর্গফুটের ঊর্ধ্বে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অফিসের ওপর ভর্তুকি (ঝজ বা ঝঅ) আদায় করা হবে যৌক্তিক। মূলত উপরোক্ত খাতগুলোর কারণেই বড় আকারের ভর্তুকি দিতে হ”েছ, যা মূলত বাংলাদেশের নাগরিকদের অর্থে। এ ব্যব¯’া গ্রহণ করা হলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম পুনঃবৃদ্ধি করার প্রয়োজন হবে না এবং দ্রব্যমূল্য ¯ি’তিশীল হওয়াটাই স্বাভাবিক। বিলাস দ্রব্য ও অপ্রয়োজনীয় বিলাসি গাড়ি আমদানি মেধাভিত্তিক প্রক্রিয়ায় নির“ৎসাহিত করা গেলে বিদেশী মুদ্রার ওপর চাপ বহুলাংশে কমে আসবে এবং ডলারের সঙ্গে টাকার মূল্যমান বৃদ্ধি পাবে। ফলে আমদানি খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে। এতে বাজার স্বাভাবিক ব্যবহার শুর“ করবে। অবশ্য এর ফলে রফতানি শিল্প কিছুটা লোকসানের সম্মুখীন হবে। রফতানি শিল্পকে এ লোকসান থেকে রক্ষা করার জন্য ঝড়ঁৎপব ঃধী ও ভ্যাট প্রত্যাহার করে শুধু ঈগচ এর ওপর ডলারের সঙ্গে টাকার মূল্য ডলার প্রতি ২ থেকে ৪ টাকা অতিরিক্ত বাড়ানো হলে রফতানি শিল্পের এ সমস্যারও সমাধান হয়ে যাবে। সার্বিক বিবেচনায় প্রস্তাব করছি অফিস ও কারখানার ঘর ভাড়ার ওপর ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং তৈরি পোশাক শিল্পের ঋঙই এর ওপর ০.৬০ এর পরিবর্তে ০.২৫ শতাংশ কর নির্ধারণ করার। গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের অনিশ্চয়তার কারণে নতুন বিনিয়োগ না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের পুনঃপুন মূল্যবৃদ্ধি সত্ত্বেও বিদ্যুতের প্রাপ্যতা এখন ভয়ংকর পর্যায়ে এসেছে, যার ফলে নতুন বিনিয়োগ ও বর্তমানে চালু প্রকল্পগুলো চরম হুমকির মধ্যে। সার্বিক অর্থে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বিদুৎ সংকটের সমাধান নয়, বরং এটি করে দেশের সার্বিক অর্থনীতি এক ভয়ানক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীকে ভবিষ্যতে আরও কয়েক বছর এই অর্থনৈতিক যাতনা বহন করে যেতে হবে। আমি পরিবেশবান্ধব নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প গ্রহণ করার প্রস্তাব করছি। যেমন, অত্যন্ত দক্ষ ব্যক্তিদের দ্বারা জরিপ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে উইন্ডমিল ও সি-ওয়েভ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে দ্র“ত প্রকল্প গ্রহণ করা প্রয়োজন। এছাড়া আমদানিকৃত কয়লা বিদ্যুৎ উৎপাদনে কত সহজে ব্যবহার করা যায়, তা সততার সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। পুরনো বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো যথাযথ সংস্কার ও মেরামত করা হলে ওই সব বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ১০০০ থেকে ১৫০০ মেগাওয়াট অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব বলে এ খাতের অনেক বিশেষজ্ঞ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন। প্রয়োজনবোধে এক্ষেত্রে বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ সং¯’াও নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। যেহেতু বিদ্যুৎ ঘাটতি অতীতেও ছিল, সেহেতু সরকারের দায়িত্ব ছিল ক্ষমতা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে দ্র“ত কয়লা আমদানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প গ্রহণ করা। এটা করা হলে বর্তমানে এত ভয়াবহ বিদ্যুৎ সংকট হতো না এবং অযৌক্তিক বিশাল ভর্তুকির সম্মুখীন হতে হতো না। 
পুঁজিবাজারে দুর্বৃত্তায়ন, বাংলাদেশ ব্যাংক, শেয়ার নিয়ন্ত্রক সং¯’া ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারণে বড় আকারের ভুলের কারণে এ খাতে বড় ধরনের ধস নেমে এসেছে। একে পুনর“জ্জীবিত করার সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের রূপরেখা আগামী বাজেটে প্রতিফলিত হওয়া অপরিহার্য। আমি প্রস্তাব করব এ খাতটিকে ঠরনৎধহঃ করার লক্ষ্যে ঋণের সহজ প্রাপ্যতা এবং অপ্রদর্শিত আয় (কর ফাঁকি অর্থ) এ খাতে বিনিয়োগের সুযোগ করে দেয়ার জন্য। সেই সঙ্গে শেয়ারবাজারে তারল্য প্রবাহ বাড়ানো অপরিহার্য। তবে এ অর্থ কমপক্ষে ৫ বছর অন্য কোন খাতে ব্যবহার করার কোন রকম সুযোগ রাখা উচিত হবে না। একই সঙ্গে কোন অব¯’াতে চুরি, ডাকাতি, দুর্নীতি ও ঘুষের অর্থ অন্য কোন খাতে ব্যবহারের সুযোগ দেয়া উচিত নয়। বরং আইনের আওতায় ওই সব গোষ্ঠীকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার প্রস্তাব করছি। সরকারকে অবশ্যই ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে, যার সুস্পষ্ট অঙ্গীকার ও দিকনির্দেশনা বাজেট প্রস্তাবনায় নিশ্চিত করার সুপারিশ করছি। 
বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট প্রকট, যার অন্যতম কারণ বাজেটের অর্থের জোগান দেয়ার জন্য অধিক মাত্রায় সরকারের ঋণ গ্রহণ। এর ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য বিনিয়োগবান্ধব অব¯’ান হারা”েছ, অন্যদিকে নতুন উদ্যোক্তা গড়ে উঠতে পারছে না। এসব অর্থনৈতিক সূচক সু¯’ ও স্বাভাবিক অর্থনীতির ইঙ্গিত বহন করে না, বরং সার্বিক অর্থে প্রবৃদ্ধির নিম্নগতি হওয়ার আশংকা বেশি মাত্রায় থেকেই যাবে। যা শুধু কিছু ক্ষেত্রে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে রক্ষা করা সম্ভব নাও হতে পারে।
সরকারি সব লোকসানি শিল্প ও বাণিজ্য খাত বন্ধ করা জর“রি হয়ে পড়েছে। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় এসব লোকসানি খাতে ভর্তুকি দেয়া শুধু অযৌক্তিক নয়, অন্যায়ও বটে। বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনকে টিকিয়ে রাখার কোন প্রয়োজন নেই। বিমান সেবার মান অত্যন্ত নিম্ন এবং একই সঙ্গে এটি বড় আকারের লোকসানি খাত হিসেবে দেখা দিয়েছে। একে জনগণের ট্যাক্সের টাকায় ভর্তুকি দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার কোন কারণ নেই। এটা যদি বড় কোন বিদেশী বিমান কোম্পানির সঙ্গে যৌথ কার্যক্রমে আনা যায়, সেক্ষেত্রে বিমান একদিকে লাভজনক শিল্প হিসেবে গড়ে উঠবে, অন্যদিকে জনগণের উন্নত সেবা পাওয়াও নিশ্চিত হবে। রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে সঠিক অর্থে কার্যকরভাবে বিকেন্দ্রীকরণ করার জন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করাও প্রয়োজন। সব নাগরিকের দক্ষতা ও যোগ্যতা অর্জনের লক্ষ্যে একটি সুদক্ষ ও সুপরিকল্পিত রোডম্যাপ বাজেটে প্রতিফলিত হওয়া জর“রি এবং আমি মনে করি এটি বাংলাদেশের অন্যতম একটি সমস্যা। 
যেসব শ্রমিক বিদেশে যাবে, তাদের জন্য কমপক্ষে ২-৩ মাসের একটি বিশেষ মোটিভেশন ও প্রশিক্ষণ কোর্স বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন এবং এ লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট অর্থ বরাদ্দ বাজেটে নিশ্চিত করা উচিত। 
বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহৎ সমস্যা ভূগর্ভের পানির স্তর হ্রাস পাওয়া। অন্যদিকে বর্ষাকালে বন্যার কারণে শত হাজার কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়। এগুলোকে অফফৎবংং করার জন্য বাজেটে যথেষ্ট বরাদ্দ ও সুবিবেচিত পরিকল্পনার রূপরেখা প্রয়োজন। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে বর্তমান যে ক’টি নদী-খাল বিদ্যমান তা আধুনিক পদ্ধতিতে খননের মাধ্যমে বৃষ্টির পানি বেশি মাত্রায় ধরে রাখার ক্ষমতা অর্জন সম্ভব। খননযুক্ত পলি দিয়ে নদী ও খালের উভয় পাড় ভরাট করা এবং ওই সব পাড়ে ৫ থেকে ৬ জন বেকার যুবক-যুবতীকে ২ কিলোমিটার করে বরাদ্দ দিয়ে সমবায়ের মাধ্যমে বিনা বন্ধকিতে ক্ষুদ্রঋণের আওতায় সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে ফল-ফসলাদি উৎপাদনে নিয়োজিত করা যেতে পারে। একইভাবে নদী ও খালগুলোর প্রতি ২ কিলোমিটার অন্তর সেইফটি নেট (লোহার জাল, যাতে নদীর স্রোত কোথাও বাধাগ্রস্ত না হয়) করে উপরোক্ত বেকারদের দিয়ে গঠিত সমবায় সং¯’াগুলোকে সেখানে আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষের সুযোগ করে দেয়া বাঞ্ছনীয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সমবায় পদ্ধতি চালু করেছিলেন কিš‘ ‘চাটার দল’ সচতুরভাবে তা ব্যর্থ করে দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে জনগণ থেকে দূরে সরিয়ে ফেলেছিল। বঙ্গবন্ধু কন্যা অন্তত এ ভুলটি অনুগ্রহ করে যেন না করেন, এ ব্যাপারে অনুরোধ জানা”িছ। এছাড়াও বাংলাদেশে অসংখ্য পর্বতমালা (ঐরষষড়পশং) বন্ধনী ব্যব¯’া প্রয়োগ করে বর্ষার পানি ধরে রাখার ব্যব¯’া করা যেতে পারে। উপরোক্ত ব্যব¯’াপনা পরিকল্পিতভাবে করা গেলে ভূগর্ভ¯’ স্তরে পানি হ্রাস পাওয়ার প্রবণতা ক্রমান্বয়ে কমে আসবে এবং এর ফলে পানি সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হবে। অন্যদিকে বন্যার তীব্রতাও কমতে বাধ্য। পর্বতমালায় জমাকৃত পানি থেকে খাওয়ার ও ব্যবহারের পানি জোগান দেয়া সম্ভব। বন্যা সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয়া যেতে পারে, যার জন্য বাজেটে সুনির্দিষ্ট অর্থ বরাদ্দ অবশ্যই থাকতে হবে। প্রতি বছর অন্তত ২০ কিলোমিটার আধুনিক পদ্ধতিতে বাঁধ (উরশবং) নির্মাণ করে ১০-১২ বছরের মধ্যে বন্যা সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভবÑ যেমনটা নেদারল্যান্ডস সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬ মিটার নিচে অব¯’ান হওয়া সত্ত্বেও অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে করেছে উপযুক্ত উরশবং তৈরি করে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বাংলাদেশের সমুদ্রপৃষ্ঠ যদি অতিরিক্ত এক মিটার বৃদ্ধি পায়, তাহলে দেশের ১০ শতাংশ জায়গা বড় ধরনের বন্যার সম্মুখীন হবে। বাংলাদেশ গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্রের ডেলটা। সেই বিবেচনায় এ খাতে বাজেটে যথাযথ বরাদ্দ রাখা জনস্বার্থে খুবই প্রয়োজন। 
গ্রামীণ অর্থনীতিকে ঠরনৎধহঃ করার লক্ষ্যে প্রতি উপজেলায় সুনির্দিষ্ট খাস জমিতে ক্ষুদ্র, সাব-কনট্রাক্টিং ও কুটির শিল্প গঠনের জন্য সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক এলাকা গঠন করে শিক্ষিত, স্বল্পশিক্ষিত কর্মহীন নর-নারীর সমন্বয়ে সমবায়ভিত্তিক প্রকল্পের ব্যব¯’া নেয়া যেতে পারে। যদি এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে সে অনুযায়ী বাজেটে যথেষ্ট বরাদ্দ রাখা হয়, তাহলে বহু কর্মক্ষম মানুষ তৈরি হবে। অতীতে বাজেটে সেরকম কোন দিকনির্দেশনা বা বরাদ্দ দেয়া হয়নি। এসব জনগুর“ত্বপূর্ণ প্রকল্পকে সহায়তা করা গেলে জাতীয় প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে এবং এটা হবে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য সত্যিকার অর্থে একটি বাস্তব পদক্ষেপ। এক্ষেত্রে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এ সমবায় সং¯’াগুলোর জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে স্বল্প সুদে ঋণের ব্যব¯’া করা যেতে পারে। 
প্রবাসী বাঙালিরা তাদের কষ্টার্জিত আয় কোন লাভজনক কাজে ব্যবহার করার সুযোগ না পাওয়ায় তারা নিজ নিজ এলাকায় বড় বড় পুকুর, বাড়ি, মসজিদ, মাদ্রাসা ইত্যাদি অনুৎপাদনশীল কাজ করে কৃষি জমি নষ্ট করছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বাংলাদেশে গড়ে প্রতিদিন ২২০ হেক্টর কৃষি জমি নষ্ট হ”েছ। এ প্রক্রিয়া চলতে থাকলে এক সময় কৃষি জমি খুঁজে পাওয়া যাবে না। সুতরাং তাদের পুঁজিবাজারে আকৃষ্ট করতে হবে। এজন্য যা যা প্রয়োজন, বাজেটে তার প্রতিফলন কাম্য।
জনগণ আশা করেছিল, ডিজিটাল বাংলাদেশ স্লোগানে দেশে একটি অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটবে। দুর্ভাগ্য হ”েছ, সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বলতে তথ্যপ্রযুক্তি, কম্পিউটার, অটোমেশন ইত্যাদি বুঝে থাকে। অথচ চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জে কম্পিউটার অটোমেশন চালু হয়েছে ২০০৩ সালে। এটা মূলত বিশ্বব্যাপী একটি স্বাভাবিক চলমান প্রক্রিয়া। এতে নতুন কোন চমক নেই। সবার মনে রাখা উচিত, উরমরঃ অর্থ সংখ্যা এবং এর অন্তর্নিহিত তাত্ত্বিক অর্থ অক্ষর। অর্থাৎ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে অন্তত প্রতিটি নাগরিককে যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ করা, পত্রিকা পড়া, নিজের ও রাষ্ট্রের স্বার্থ সম্বন্ধে জানা-বোঝায় সক্ষম করে তুলতে হবে। সুষ্ঠু ও স্ব”ছ পরিকল্পনার মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা এবং বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ থাকলে কেবল তখনই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া সম্ভব। 
সরকার চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী স্বীকৃতি দেয়া সত্ত্বে¡ও এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে নির্বাচনী সভায় দৃঢ়তার সঙ্গে চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজ হাতে গ্রহণ করার ওয়াদা দিলেও বাজেটে এখনও বাণিজ্যিক রাজধানী প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ১০টি টাকাও বরাদ্দ দেয়া হয়নি, যা কোন এক সময় বড় সংকট হিসেবে দেখা দিতে পারে। তাই প্রস্তাব করছি, ২০১২-২০১৩ অর্থবছরের বাজেটে বাণিজ্যিক রাজধানী উন্নয়ন খাত নামে অন্তত ছোট আকারে হলেও অর্থ বরাদ্দ দেয়া উচিত।
যানজট কমানোর লক্ষ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন যেমনÑ ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও চার লেনের রাস্তার জন্য বরাদ্দ দেয়া হলেও প্রাথমিকভাবে যা দ্র“ত প্রয়োজন সেটি সম্পূর্ণভাবে অবহেলিত হয়েছে। সেটি হ”েছ ট্রাফিক ব্যব¯’ায় দ্র“ততার সঙ্গে স্বয়ংক্রিয় আলো নির্দেশক অর্থাৎ সিকুয়েন্স পদ্ধতির প্রবর্তন। আধুনিক সিকুয়েন্স পদ্ধতি প্রয়োগ করে ট্রাফিক আইনের পুরোপুরি প্রয়োগ নিশ্চিত করা হলে অন্তত ২০ শতাংশ যানজট কমতে বাধ্য। 
পরিশেষে বলতেই হয়, বর্তমানে দেশে তত্ত্বাবধায়ক ও অন্তর্বর্তী সরকার পদ্ধতি নিয়ে যে রাজনৈতিক সংঘাত দেখা দিয়েছে, অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে এর সমাধান জর“রি। বাজেট বাস্তবায়নে এর কোন বিকল্প নেই। একগুঁয়েমি বাদ দিয়ে নতুন ধারণার একটি নির্বাচনী সরকার গঠনের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে। আমি প্রস্তাব করছি, পঞ্চদশ সংশোধনী পুনঃসংশোধন করে একটি ‘অন্তবর্তী নির্দলীয় সরকার’ গঠন করা যেতে পারে। সাবেক ৫ জন প্রধান বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত একটি অনুসন্ধান কমিশন/কমিটি এ সরকারের প্রধানসহ মোট ১৫ সদস্যের নাম সুপারিশ করবে। চলতি সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫-২০ দিন আগে সরকার ও বিরোধী দল এক হয়ে তাদের নির্বাচিত করলে সমস্যার সমাধান হতে পারে। জাতির জনকের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পিতার কথা স্মরণ করে এ ব্যাপারে উদার ভূমিকা রাখবেনÑ এটাই জনগণের প্রত্যাশা। 
ফরিদ আহম্মদ চৌধুরী : সাবেক সভাপতি, চিটাগং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন