শুক্রবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১২

একটি বাকস্বাধীনতার মামলা ও বাদীর জবানবন্দি



মিজানুর রহমান খান | তারিখ: ২৮-০৪-২০১২
২৪ এপ্রিল ২০১২ অপরাহ্নে আমি ব্যারিস্টার নওশের আলী মোল্লার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলি। সে অভিজ্ঞতা যুগপৎ বিস্ময়কর ও চমকপ্রদ। তিনি রাষ্ট্রদ্রোহিতা (সেডিশন) ও বিশ্বাসঘাতকতার (ট্রিজন) দায়ে আইনের অধ্যাপক আসিফ নজরুলের বিচার চাইছেন। রাষ্ট্রদ্রোহিতার চেয়ে অধম বিশ্বাসঘাতকতা। বাংলাদেশ সংবিধানের ৭ক অনুচ্ছেদমতে, ‘অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখলের কোনো কার্যে সহযোগিতা, উস্কানি বা সমর্থন’ দিলে তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। দণ্ডবিধির ১২৪ক ধারামতে যাবজ্জীবন। আমাদের আইনে অবশ্য ট্রিজনের শাস্তি নেই।
ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ আদালতে এ মামলার শুনানিকালে আসিফ যা বলেননি, তাই নিয়ে মামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন। তখন ভাবলাম, তথ্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করি। তখন ভাবিনি, একজন ব্যারিস্টার আদালতের কাছে ভুল উদ্ধৃতি পেশ করতে পারেন। এ নিয়ে নওশের আলীর সঙ্গে ওই দিন দুপুর ১২ টা ২২ মিনিট থেকে ২৬ মিনিট ১১ সেকেন্ড কথা হয়। 
অভিযোগকারী হলফ করে একজন আইনের অধ্যাপককে মৃত্যুদণ্ডযোগ্য অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করে আবেদন করার মাস পেরোলেও জানেন না, আসিফ নজরুল অবিকল কী বলেছিলেন। তিনি আমার কাছে আসিফের একটি উক্তি শুনতে ছয়বার অনুরোধ করেন। আমাদের কাছে প্রতীয়মান হচ্ছে, তিনি আদালতে সঠিক তথ্য না দিয়ে হলফ করে অসত্য ও অর্ধসত্য বক্তব্য দিয়েছেন। যদিও তিনি মামলা দায়েরের আগে ১৩ বা ১৪ মার্চ বাংলাভিশনে হাজির হয়ে আসিফের বিরোধপূর্ণ ভাষ্যের সিডি সংগ্রহ করেছিলেন। প্রথম আলো-র সংগ্রহেও এই সিডি আছে।
গত ১২ মার্চ আসিফ নজরুল, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও রিয়াজউদ্দিন আহমেদ বাংলাভিশনে এক আলোচনায় অংশ নেন। মুজাহিদুল ইসলাম এক-এগারোর প্রসঙ্গ তোলেন, যেটা আমরা অহরহ করে থাকি। উপস্থাপকের কথার সূত্রে আসিফের বক্তব্য বাংলাভিশনের টেপ থেকে তুলে দিচ্ছি: 
‘এখানে যদি নেগোসিয়েশনের স্কোপ দুই নেত্রী বন্ধ করে দেন, নেগোসিয়েশনের স্কোপ যদি রি-ওপেন করার চেষ্টা না করে সরকারি দল, তাহলে যে পরিস্থিতি হবে, এখন আমার মাঝে মাঝে মনে হয়—যদি আপনি কিছু মনে করেন না, এটা খুব খারাপ শোনাবে—আমার মনে হয় যদি প্রধানমন্ত্রীর কাছে জিজ্ঞাসা করা হয়, আপনার কাছে অপশন আছে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে অথবা অন্য কোনো শক্তি। আপনি কোনটিতে রাজি আছেন? আমার ধারণা উনি বলবেন, অন্য কোনো শক্তি, বিএনপি না। 
‘যদি বেগম খালেদা জিয়াকে জিজ্ঞেস করা হয়, নেক্সট ইলেকশনে আওয়ামী লীগ আসবে অথবা অন্য কোনো শক্তি আসবে, আমার মনে হয়, উনিও বলবেন অন্য কোনো শক্তি এবং এটা কিন্তু বানানো কথা না, এটা অনেকেই বিশ্বাস করেন। এই লেভেলের যখন তিক্ততা হয়ে যায়, তখন তো অন্য কোনো শক্তিই আসার কথা! ওনারা কি বুঝতে পারছেন যে ওনাদের তিক্ততার মাত্রা এমন পর্যায়ে চলে গেছে, ওই মাত্রাতিরিক্ত তিক্ততার কারণে ওয়ান ইলেভেন হয়েছিল এবং আবারও হতে পারে।’
এ মামলার বাদী নওশের আলী মোল্লা। বয়স প্রায় ৫০। বাড়ি রাজবাড়ী। বাংলাভিশনে সিডি আনতে গিয়ে তিনি অনুষ্ঠানের উপস্থাপক মোস্তফা ফিরোজের কাছে নিজেকে জাসদের সাবেক কর্মী বলে পরিচয় দিয়েছিলেন।
আমি নওশের আলীকে বললাম, ‘আপনি আদালতকে বলেছেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কী মনে করেন—প্রশ্নটি করেন একজন দর্শক আসিফ নজরুলকে। কিন্তু এটা তো সত্য নয়। প্রশ্নটি করা হয়েছিল সবাইকে। আপনি আদালতকে আরও বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও...বলবেন সম্ভবত তৃতীয় কোনো শক্তি ক্ষমতায় আসবে এবং এটাকেই তিনি ফেভার করবেন। আসিফ তা বলেননি।’ মিলিয়ে দেখেছি, ‘আসলে এটাকেই তিনি ফেভার করবেন’—এই বাক্যটি পুরোপুরি বানোয়াট। নওশের তখন বললেন, ‘আচ্ছা, তাহলে একটু শোনান তো।’ ওই অংশ তাঁকে অবিকল পড়ে শোনালাম। নওশের বলেন, ‘তিনি তো “তৃতীয় শক্তির” কথাই বলেছেন এবং সেটা আর্মিকেই বোঝাতে চাচ্ছেন। এটা তো হান্ড্রেড পারসেন্ট।’ 
পাঠক, লক্ষ করুন, আসিফ তাঁর ওই মন্তব্যের কোথাও ‘তৃতীয় শক্তি’ বলেননি। নওশের আদালতের কাছে তাঁর আবেদনে নির্দিষ্টভাবে আটবার “দেশ শাসনের জন্য প্রত্যক্ষভাবে অসাংবিধানিক ‘তৃতীয় শক্তি’কে প্রত্যক্ষ উস্কানি” ধরণের বাক্য ব্যবহার করেছেন। বললাম, ‘আপনি একজন ব্যারিস্টার। আপনি নিশ্চয় মানবেন যে অনুমান করা ও নির্দিষ্ট তথ্যের মধ্যে পার্থক্য আছে।’ 
আমি নওশেরের কথায় ভড়কে যাই। কারণ তিনি বললেন, ‘আমাকে কি তাঁর (আসিফের) বক্তব্যের একটা নকল দেওয়া উচিত ছিল না?’ বলি, ‘কে দেবেন?’ তাঁর নিঃসংকোচ উত্তর, ‘কেন তাঁর আইনজীবীরা দেবেন।’ তাঁর আক্ষেপ, ‘আপনারা মিডিয়া পেয়ে গেলেন। আমি পেলাম না।’ আমি বলি, ‘আপনি কী বলছেন এসব?’ ভেবেছিলাম, তিনি হয়তো তাঁর হাতে থাকা সিডির সত্যতা অধিকতর যাচাই করতে মরিয়া। পরে ভুল ভাঙল।
বললাম, ‘আপনি বাকস্বাধীনতার প্রশ্নে মামলা করেছেন। আপনি কি আর কখনো কাউকে “অন্য শক্তি” শব্দ দিয়ে এ রকম ইঙ্গিত করতে শোনেননি?’ নওশের বললেন, ‘আমি পত্রপত্রিকায় দেখেছি এবং শুনেছি। কিন্তু এভাবে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে নয়।’ একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন, ‘আসিফ ইঙ্গিত করেছেন।’ 
বললাম, ‘তাহলে সেটাই বলতেন যে তিনি ইঙ্গিত করেছেন।’ আরও বললাম, ‘আসিফ দাবি করেননি যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। আপনি আপনার নিজস্ব ধারণাকে তথ্য হিসেবে চালাতে পারেন না।’
নওশের তাঁর সঙ্গে আলোচনার ১২ মিনিট পরে নির্দিষ্টভাবে অনুরোধ করেন, ‘আচ্ছা, আপনি একটু আমাকে আসিফের বক্তব্যটা পড়ে শোনান।’ 
আমি তখন সন্দেহ করি, তিনি পুঙ্খানুপুঙ্খ না শুনেই আদালতে মামলা করেছেন। পরে আদালতে দেওয়া তাঁর আবেদনটি পরীক্ষা করে তার সত্যতা পাই। তখন তাঁকে বলি, ‘তাহলে আপনি কিন্তু মানলেন, আপনার অভিযোগ তথ্যভিত্তিক নয়।’ তাঁর উত্তর, ‘আচ্ছা, বলুন।’ আমি আসিফের উল্লিখিত বক্তব্য পুরোটা পড়ে শোনাই। নওশের নিশ্চিত করেন যে তিনি ওই টক-শোর হুবহু ট্রান্সক্রিপশন পড়েননি। বারের টিভিতে শুনেছিলেন।
নওশের পুরো মনোযোগ ঢেলে দেন আসিফের একটি উক্তি জানতে। ঘটনার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী-সংশ্লিষ্টতা দেখানোই সম্ভবত তাঁর মুখ্য আকর্ষণ। ‘দেখুন, আপনি ওই জায়গাটায় আসুন। যেখানে তিনি বলেছেন, কথাটা শুনতে খারাপ শোনাবে...।’ ব্যারিস্টার নওশের আমাকে প্রধানমন্ত্রী-সংশ্লিষ্ট আসিফের ওই উক্তিটি শোনাতে ছয়বার অনুরোধ করেন। আমি তা রক্ষাও করি। অনুমান করছিলাম, তিনি হয়তো রেকর্ড রাখছেন।
তাঁকে বলেছিলাম, ‘কোথায় আসিফ সামরিক বাহিনীর কথা বলেছেন? “অন্য কোনো শক্তি” মানে তো রাজনৈতিক শক্তিও আমি ধারণা করতে পারি। আপনি বা কেউ বলতে পারেন, আমি তা মনে করি না। কিন্তু এ জন্য দণ্ড দিতে চাইছেন কেন?’
নওশের বলছেন, ‘দেখুন, আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন। মিজান ভাই, ওই লাইনটা একটু পড়েন।’ আমি তাঁকে দ্বিতীয়বার পাঠ করে শোনাই। তাঁকে পুনর্বার বলি, ‘আপনি এই “অন্য কোনো শক্তির” মানে অবশ্যই অসাংবিধানিক শক্তি—কী করে তা দাবি করবেন?’ তখন নওশের বলেন, ‘এটা সাব-জুডিশ ম্যাটার (বিচারাধীন বিষয়)। আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। ১৩ জন (প্রকৃতপক্ষে ১৬) অ্যামিকাস কিউরি, মানে আদালতের বন্ধুরা বিষয়টি ব্যাখ্যা করবেন। আপনি আদালতে আসবেন। তবে ওই কপিটা (আসিফের বিবৃতি), আমি সেটা এখনো পাইনি। আপনি যদি আবার ওই লাইনটা পড়েন।’ এ পর্যায়ে বলি, ‘আমি দরকার হলে ওই লাইনটা আরও পাঁচবার বলব। কিন্তু যে সিডি আপনার হাতে আছে তার বিবরণ আপনি কেন বাদী হয়ে এখন আশা করছেন?’
এর উত্তরে নওশের যা বলেছেন, তা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করে যে আসিফের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য না জেনেই তিনি আদালতে নালিশ করেছেন এবং প্রতিকার চেয়েছেন। তিনি আদালতে দেওয়া তাঁর আবেদনের ৬, ৮, ১০ ও ১১ নম্বর পৃষ্ঠায় তার প্রমাণ রেখেছেন। যেমন, “আসিফ নজরুলের কাছে দর্শকের প্রশ্ন ছিল, ‘কে পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসছেন, এ ব্যাপারে আপনি কী মনে করেন?’ (পৃ. ১০) এটা তাঁর কাল্পনিক বাক্য।
কেন তাঁর কাছে আসিফের বিবৃতির বিবরণ নেই? আমার এই প্রশ্নের উত্তরে ব্যারিস্টার নওশের বলেন, ‘যেদিন প্রথম শুনানি হয়েছে, সেদিনই আমি আদালতে বাংলাভিশন থেকে আনা সিডিটা জমা দিয়েছি। আমাকে আদালত সেটা এখনো রিটার্ন দেননি। ওই একটাই সিডি। আমার হাতে কপি নেই।’ পুনর্বার বললাম, ‘যে জিনিস আপনি ট্রান্সক্রিপশন করেননি, সেটি আসিফের কাছে চাওয়া কি সংগত?’ তাঁর সরল উত্তর, ‘আমি যেটা ট্রান্সক্রিপশন করব আর প্রতিপক্ষ যেটা করবে, সেটা তো একই হবে।’ বললাম, ‘সে তো ঠিকই। কিন্তু আসিফের বক্তব্য সত্যিই কী, সেটা আমার কাছ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের এক মাস পরে প্রথম শুনলেন, সেটা অবাক ব্যাপার কি না?’
সদুত্তর না দিয়ে তিনি বললেন, ‘আপনি ওই লাইনটা একটু আবার বলেন।’ আমি তাঁকে তৃতীয়বার পড়ে শোনাই। তিনি অন্য কারও বক্তব্য শুনতে চাননি।
১৮ মিনিট পরে বলি, ‘আপনি ভিন্নভাবে নেবেন না। পেশাদারি দিক থেকে বলছি। এ রকম একটি আলোড়ন সৃষ্টিকারী বাকস্বাধীনতার বিষয়, আদালত যেখানে ১৬ জন অ্যামিকাস কিউরিকে ডেকেছেন, সেখানে আপনি না জেনে মামলা করেছেন, আপনার হাতে ট্রান্সক্রিপশন পর্যন্ত নেই।’ তখন তিনি বলেন, ‘কে বলেছে তা নেই!’ কিন্তু পরমুহূর্তেই অনুরোধ, ‘তবে আপনি যদি ওই লাইনটা আরেকবার পড়েন।’ তাঁকে চতুর্থবার পড়ে শোনাই। এবার তাঁকে প্রশ্ন করার আগেই তিনি বললেন, ‘এ ব্যাপারে আমি আপনার সঙ্গে কোনো আর্গুমেন্টই করব না। তবে ওই লাইনগুলো আবার একবার বলুন, প্লিজ।’
আমি বলি, ‘কী মুশকিল, আপনাকে তো এক্ষুনি বললাম।’ কারো উক্তি বিচ্ছিন্নভাবে নয়, সামগ্রিকভাবে বিবেচ্য। নওশের আলী অবশ্য ষষ্ঠবারের মতো উচ্চারণ করেন, ‘আচ্ছা, তবু আরেকবার বলেন।’
এবার একটু দৃঢ়তা এনে বলি, ‘না, আপনি আমার একটা কথা শোনেন।’ অ্যামিকাস কিউরিদের কাছে ১৫ এপ্রিল প্রেরিত আদালতের পত্র আমি তাঁকে পড়ে শোনাই। যেখানে লেখা, আসিফ নজরুল ‘...ফাউন্ড টু বি হাইলি অ্যান্টি স্টেট ইনভাইটিং আনডেমোক্রেটিক অ্যান্ড আনকনস্টিটিউশনাল থার্ড পার্টি টু রুল দ্য কানট্রি’। আদালতে দেওয়া নওশেরের পিটিশন পড়ে দেখি, এই বাক্য ইংরেজিতে নওশের অবিকল লিখিতভাবে আদালতকে বলেছেন। আমি এসময় তাঁকে বলি, ‘কোথায় আসিফ ‘অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক তৃতীয় শক্তি’কে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন—এসব শব্দ কোথায় পেলেন? তিনি তো বরং দুই নেত্রীর তিক্ততায় শঙ্কিত হয়ে তাঁদের সতর্ক করতে সচেষ্ট হয়েছিলেন। এবারে নওশের বললেন, ‘আপনি যেভাবে আমাকে জেরা করছেন, মনে হচ্ছে, আপনি যেন আরেকজনের পক্ষ হয়ে কথা বলছেন।’ বললাম, ‘আপনাকে প্রশ্ন করা সাংবাদিকতার মধ্যে পড়ে।’
বললাম, ‘আমাদের জানার অধিকার আছে, একজন বার অ্যাট ল হয়ে, যা বলা হয়নি—তা আদালতে গিয়ে কীভাবে বলেছেন। ১৯৭৩ সালের বার কাউন্সিল আইন অনুযায়ী, আপনি এটা পারেন না।’ নওশের বলেন, ‘আমি কী পারি আর না পারি, তা আদালত বুঝবেন। অন্য আইনজীবীরা বলবেন। আপনি সাংবাদিক হয়ে আর কোনো প্রশ্ন করবেন না। আমি ফ্যাক্ট তো বানাইতে পারব না। আমি ফ্যাক্টের বাইরেও যেতে পারব না।’ আমরা তাঁর সঙ্গে এখানে একমত হতে পারি।
এদিকে আরেক বিস্ময়। ব্যারিস্টার নওশেরের আইনজীবী হিসেবে আদালতের ১৫ মার্চের আদেশে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদের নাম আছে। ২৫ এপ্রিল জানতে চাইলে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘এটা ভুলে ছাপা হয়েছে। রিট আবেদনকারী নিজেই এ মামলার আইনজীবী।’
জনগণের শেষ ভরসাস্থল সুপ্রিম কোর্টের সুমহান মর্যাদা সুরক্ষার দায়িত্ব সবার। এখানে বার কাউন্সিলের আচরণবিধির তৃতীয় অধ্যায়ের তৃতীয় দফার লঙ্ঘন ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। এখানে বলা আছে, ‘একজন আইনজীবী ইচ্ছাকৃতভাবে কন্টটেন্টস অব ডকুমেন্টস বা দলিলের বিষয়বস্তু ভুলভাবে উদ্ধৃত করবেন না।’ একজন বার অ্যাট ল বাদী আদালতের প্রতি কর্তব্য পালন করেননি বলে আমাদের মনে হচ্ছে। তিনি বস্তুগত তথ্যাদি চাপা দিয়েছেন এবং সুচিন্তিতভাবে তথ্য বিকৃত করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়েছে। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের গত ১৫ ডিসেম্বরে দেওয়া এক রায়ের বরাতে বলি, ‘আইনজীবীর পেশাগত অসদাচরণ অমার্জনীয়। কারণ আইন পেশা মহত্তম। এটা ব্যবসা-বাণিজ্য নয়। এ পেশার মহত্ত্বে কেউ কালি লাগালে আইনের শাসনের প্রতি জনগণের বিশ্বাসে ফাটল ধরতে বাধ্য।’ 
 মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক।
mrkhanbd@gmail.com

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন