মিজানুর রহমান খান |
বিচার প্রশাসনে এখন নৈরাজ্য চলছে বললে কম বলা হবে। এখন বলতে হবে, ‘ওলট-পালট করে দে মা, লুটেপুটে খাই’। মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক ওরফে দুলাল, বিকাশ কুমার সাহাকে ঘিরে অধস্তন আদালতে দীর্ঘদিন ধরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়ে আছে।
জনশ্রুতি এই, আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে এ ত্রিভুজ বদলি ও পদোন্নতিতে প্রভাব খাটাচ্ছিল। এখন সুযোগ এসেছে, তাঁদের শূন্যপদে সুপ্রিম কোর্টের পছন্দে ও কর্তৃত্বে বিচারক নিয়োগ করা। কিন্তু আবার যেন সেই একই খপ্পর। সেটা যাতে না ঘটে, সে জন্যই এ লেখা। যাঁদের সম্পর্কে এ সমালোচনা, তাঁদের সঙ্গে এ ধরনের বৈষম্য নিয়ে বহু দফা মতবিনিময় ঘটেছে। তাঁরা একান্ত আলাপে একমত হন যে এমনটা চলা ঠিক নয়। কারণ, ‘মুখ চিনে খাদিম দেওয়া’র নীতি বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে নষ্ট করে। আশা করি বিষয়টি তাঁরা ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না। কারণ তাঁরা রাগ করেও এটুকু যুক্তির খাতিরে নিশ্চয় মানবেন যে তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণীয় হলে বিচার বিভাগের শ্মশান হতে দেরি লাগবে না।
বিচারকদের মুখ বুজে কাজ করার চাকরি। তাঁদের যে সংগঠন রয়েছে, সেটা অনেক আগেই অপসারণ-সন্ত্রাস করে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও মহাসচিবকে অপসারণ করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভুল বুঝতে পারেন। অপসারণ আদেশ প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু ভীতিটা থেকে যায়। চর দখলের মতো সমিতির সভাপতি ও মহাসচিব দখল করা হয়েছিল। জাহাঙ্গীর রাতারাতি হন সভাপতি। মহাসচিব দুলাল।
বিচার প্রশাসনের আকর্ষণীয় ঘটনা হলো বদলি ও পদোন্নতি। এখন প্রায় তিন হাজার বিচারক কর্মরত আছেন। কাউকে পুরস্কার বা তিরস্কার করার মোক্ষম অস্ত্র বদলি।
আলোচ্য তিনজনের প্রথম জন ঢাকা জেলা জজ থেকে দেড় শ জন জ্যেষ্ঠকে ডিঙিয়ে এখন হাইকোর্টে। দুলাল ঢাকার স্পেশাল জজ, বিকাশ চট্টগ্রামে। বদলির প্রক্রিয়ায় আইন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (প্রশাসন-১) ও সিনিয়র সহকারী সচিবের ভূমিকা নিমিত্তস্বরূপ। এখন লক্ষণীয়, ওই তিনটি শূন্যপদে কী ঘটছে।
বিকাশ ছিলেন ওই প্রশাসন শাখার অর্থাৎ দুলালের এক ধাপ নিচের সহকর্মী, সিনিয়র সহকারী সচিব। সেখানে এসেছেন পাঁচ বছর ঢাকায় থাকা মাহবুবার রহমান সরকার। তিনি দুলাল-বিকাশের সমিতি বিদ্রোহের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির অন্যতম স্বাক্ষরদাতা। অন্য আরও অন্তত চারজন সহযোদ্ধা চার-পাঁচ বছরের বেশি সময় দিব্যি ঢাকায় থাকছেন। বিকাশের পদোন্নতি দেওয়ায় বিস্ময়কর কাণ্ড ঘটে। প্রেষণে দীর্ঘকাল থাকা বিকাশের পদোন্নতি আটকে ছিল। কারণ, বিচারিক কাজে দুই বছর না থাকলে পদোন্নতি প্রাপ্য নয়। বিকাশের কী হবে? বিকাশের ছয় মাস। তো আইন পাল্টাও। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক পরিপত্র পড়ে আমরা হতবাক। ছয় মাসের হলেই চলবে। আর সেটা কার্যকর হবে মাত্র এক বছরের জন্য। অতঃপর বিকাশ পদোন্নতি পেলেন। তাঁকেও ঢাকায় আনার সুপারিশ ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে চলে গেছে। অথচ এ দুলাল-বিকাশের সই করা সুপ্রিম কোর্টকে দেওয়া একাধিক চিঠি আমাদের কাছে আছে। যেখানে বলা হয়েছে, ‘ঢাকায় তিন বছর থাকার কারণে অমুককে ঢাকা থেকে ঢাকার বাইরে অমুক স্থানে বদলির প্রস্তাব করা হলো।’
এক কর্মস্থলে চাকরির সাধারণ সীমা তিন বছর। এর বেশি হলে বদলি স্বাভাবিক। ঢাকা থেকে ঢাকায় বদলি আরও নিষিদ্ধ। এমন বদলি কিছু ভাগ্যবানের মধ্যে সীমাবদ্ধ। মেধা ও যোগ্যতা কী কাজ করে, এবং বিচারকেরা কীভাবে বিচারক দ্বারাই ভয়ানক অবিচারের শিকার হন, সেটা বুঝতে হলে বদলি ও পদোন্নতি বুঝতে হবে।
দুলাল-বিকাশদের দাপট কাকে বলে সেটা বোঝানোর জন্য আপনাদের একটি টাটকা গল্প শুনতে হবে।
সা ক ম আনিসুর রহমান পিএসসির মাধ্যমে বিচার বিভাগে ঢোকেন তিরাশিতে। মেধা তালিকায় তাঁর অবস্থান ছিল তৃতীয়। একই পরীক্ষায় তিন কৃতীর পরিণতি লক্ষ করুন। প্রথম হন আশিস রঞ্জন দাশ। তিনি একটি শৃঙ্খলাজনিত ঝামেলায় পড়েন। তাঁর পদোন্নতি বাধাগ্রস্ত হয়। তিনি অবশ্য এখন আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের বিচার ডিভিশনের তথাকথিত দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব। দ্বিতীয় জন শহীদুল করিম সম্প্রতি হাইকোর্টের বিচারক। আর তৃতীয় জন সা ক ম আনিসুর রহমান। দুলাল-বিকাশ তাঁকে বদলির প্রস্তাব দেন চট্টগ্রামে। সুপ্রিম কোর্ট দেন ঢাকায়। আমরা অপেক্ষা করছিলাম, যিনি তাঁর ২৮ বছরের কর্মজীবনে ঢাকা দেখেননি, তাঁর কপালে একটিবার ঢাকা জোটে কি না।
মেধা তালিকার প্রথম ব্যক্তি সচিব, দ্বিতীয় হাইকোর্টের বিচারক আর তৃতীয় জন হলেন লাঞ্ছিত। কামরুল-দুলাল-বিকাশদের প্রস্তাবে সায় দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। একটু খুলেই বলি।
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১০। প্রধান বিচারপতি পদে এলেন এ বি এম খায়রুল হক। তাঁর পূর্ববর্তী দুই প্রধান বিচারপতি ঢাকার জেলা জজ পদে নিয়োগে ১৫০ জ্যেষ্ঠ জেলা জজকে ডিঙানোর যে প্রস্তাব ঠেকিয়ে রেখেছিলেন, তিনি তাঁর প্রথম কার্যদিবসেই সেটা কবুল করেন। নির্বাহী বিভাগের হুকুম তামিলের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তাঁর কাছ থেকে অনেক ভালো রায় পেয়ে আমরা তাঁর প্রশংসা করেছিলাম। সেটা তাঁর প্রাপ্য। কিন্তু নিন্দাও তাঁর প্রাপ্য।
যে বিচারকের জজিয়তি-জীবন জীর্ণ, প্রায় অর্ধেক সময় কেটেছে প্রেষণে—রাজধানীতে, যাঁকে ঢাকা থেকে পদোন্নতি দিয়ে নরসিংদীতে মাত্র এক মাস আগে পাঠানো হয়েছিল, তাঁকেই তিনি ঢাকা জেলা জজ করেন। আর সা ক ম আনিসুর রহমানকে নোয়াখালীর জেলা জজগিরির পাট চুকিয়ে নিক্ষেপ করা হলো বরিশালে ট্রাইব্যুনালে। ১৪ নভেম্বর তিনি অবসর নেবেন। এ রকমের বহু আনিসুর রহমান নীরবে চোখের জলে অবসরে যান। পদত্যাগ করেন। অনেক মেধাবী ও যোগ্য ঢাকায় বদলি হওয়ার জন্য তদবির করেন না।
ঢাকা জেলা জজ পদ খালি। সমিতির সদ্য বিদায়ী সভাপতির ভগ্নিপতিও বিচারক। কিন্তু অনেকের জন্য যা কল্পনা করাও কষ্টের, তিনি তা-ই করেছেন। বিচারক হয়ে কুয়েতের দূতাবাসে ২০০৪ সালে কূটনীতিক বনে গিয়েছিলেন। বিএনপি সরকারের প্রস্তাবে সুপ্রিম কোর্ট তা মঞ্জুর করেছিলেন। প্রায় সাত বছর পর হঠাৎ তাঁর ঢাকায় আগমনে অনেকে প্রমাদ গুনছেন যে শ্যালকের ছেড়ে যাওয়া শূন্যপদের দিকে তাঁর নজর পড়েছে কি না। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিসহ এই শ্যালক-দুলাভাই জুটির বাড়ি কিশোরগঞ্জে।
এ লেখায় যে তিনজনকে নিয়ে আলোচনা করছি, তাঁদের মধ্যে একটি অদ্ভুত মিল আছে। তাঁরা প্রত্যেকে অনিয়মের এমন রেকর্ড গড়েছেন, যা আগে কেউ কল্পনা করতে পারেনি।
দুলাল অতিরিক্ত জেলা জজ থেকে জেলা জজ হন আরও ৪২ জনের সঙ্গে। ৮ সেপ্টেম্বর তাঁরই সইয়ে অন্য সবাইকে দুই সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে তাঁদের নতুন কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ যায়। কিন্তু তাঁরটি ঝুলে থাকে।
আইনমন্ত্রীর সঙ্গে সস্ত্রীক কানাডা সফর থেকে ফিরে ১৭ অক্টোবর দুলালকে বদলি করা হয় ঢাকার স্পেশাল জজ হিসেবে। নিয়ম হলো, মূল পদে অন্তত দুই বছর জজিয়তি না করলে প্রেষণে বদলি জুটবে না। কিন্তু প্রতিমন্ত্রীর একটুও তর সয়নি। চাকরিজীবনের ১৫ বছরের মধ্যে ১১ বছরই প্রেষণে থাকা দুলালের জন্য ওই দিনই সুপ্রিম কোর্টে চিঠি যায়। প্রশাসন-১-এ উপসচিব পদেই তাঁকে প্রেষণে রাখতে হবে। তিনি সেন্সর বোর্ডের সদস্য, তিনি আরও বহু প্রকল্পের মোক্তার। তাঁর এসিআরে দেখি, রায় লেখায় তাঁর দোষ আছে এবং তাও অপ্রতুল। অথচ আইন প্রতিমন্ত্রী তাঁকে এক শতে নিরানব্বই দেন। বিচারপতি ওয়াহ্হাব মিয়া ও অপর এক জেলা জজ তাঁকে দিয়েছেন ৬৬। হাস্যকর যুক্তি হলো, তিনি সস্ত্রীক সরকারিভাবে হজে যাবেন। ‘উপসচিব’ পদমর্যাদাকে ‘স্পেশাল জজ’ করতে হবে। টাইপের বিরাট ঝামেলা। দুই মন্ত্রী হয়তো ভেবেছেন, নিয়মকানুন চুলোয় যায় যাক, ব্যক্তিতোষণ টিকে থাক।
আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের ভিত্তিতেই অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতি কর্মস্থল নির্ধারণ ও শৃঙ্খলাজনিত বিষয়টি দেখভাল হয়ে থাকে। আইন প্রতিমন্ত্রী এসব কাজে ভয়ানক দাপুটে, তবে আইনমন্ত্রীও বহু অনিয়মের নথিতে সই করা থেকে বিরত থাকেননি।
বিচারকদের ওপর মানসিক নিপীড়ন চলছে। এর প্রমাণ আইন মন্ত্রণালয়ের বিচার ডিভিশনকে পদানত রাখা। সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম সচিবেরা দৌড়ের ওপর আছেন। আদালতের রায় হলো, জ্যেষ্ঠতমই সচিব হবেন। কিন্তু জ্যেষ্ঠতা এখন দলিতমথিত। স্পষ্টতই মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিচারকদের মানবাধিকারের লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা যায়। নিয়মতান্ত্রিক আইনসচিব নিয়োগ না করেও তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের রায় লঙ্ঘন করছেন। বিচার ডিভিশনের সহকারী সচিব থেকে সচিব পর্যন্ত প্রত্যেকে অবশ্যই বিচারক হবেন। এবং তাঁরা আছেনও। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করেও তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু পদ্ধতিগত অনাচার ও হয়রানির ঘটনাও ঘটছে।
অন্তত পাঁচ বছর ধরে আইনসচিব পদটি শূন্য। অতিরিক্ত সচিব পদ শূন্য। জোড়াতালি দিয়ে চলছে। দুই মন্ত্রী এটা জেনেশুনে করছেন এবং আমরা অবাক বিস্ময়ে লক্ষ করি, প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন জিএ কমিটি এবং সংবিধানের ১০৭ অনুচ্ছেদের আওতায় হাইকোর্টের সব বিচারক নিয়ে গঠিত ফুলকোর্ট এ বিষয়ে তাঁদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে উদাসীন থাকছেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রশাসন ক্যাডারের মনভজন করে সচিব হয়েছিলেন, যা আপিল বিভাগ অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন। তাঁকে না রাখতে পেরে তাঁরা কি এখনো কলকাঠি নাড়ছেন? হাবিবুলের পরে আনোয়ারুল হক ছিলেন ‘চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত’। তিনি হাইকোর্টে গেলে আসেন শহিদুল করিম। তাঁর পরিচয় তিনি ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত’। তিনি হাইকোর্টে গেলে এলেন আশিস রঞ্জন দাশ। তাঁরও জুটেছে ‘দায়িত্বপ্রাপ্তের’ তকমা। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে এটা তামাশা। এটা সুপ্রিম কোর্টের রায় কিংবা এ সংক্রান্ত বিধিবিধানের পরিপন্থী। অবশ্য এর দ্বৈত সুবিধা। হাত মোচড়ানোর ও হাত কচলানোর।
ওই চক্র বিচার প্রশাসনে নিজেদের অপরিহার্য মনে করে। দলের কান্ডারি ভাবে। ‘ম্যাডাম’ ডিজায়ার্সের মতো এরা ‘আপা’ ডিজায়ার্স চালু করেছে। বাকশাল ছাত্রলীগের কর্মী দুলালের একদা স্লোগান ছিল: ‘রক্তের নয়, আদর্শের উত্তরসূরি চাই।’ একজন নিরীহ বিচারককে জেএমবির রং দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে তাঁর রেজিস্ট্রার হওয়া ঠেকানো হয়েছে। বিষয়টি ভুয়া প্রমাণিত হওয়ার পরও পালের গোদাদের শাস্তি হয়নি। আবার ওই যে আনিসুর রহমান তো প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে জেএমবির ২১ সদস্যকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছিলেন। বিএনপির আমলে সেটাই ছিল এ সংক্রান্ত প্রথম রায়। তাঁর নামে নিশ্চয় অন্য কিছু বলে ঢাকায় বদলি ঠেকানো হয়েছে। মোহাম্মদ হারুনর রশীদকে এক বছরের মাথায় হঠাৎ ঢাকা থেকে বদলি করা হয়। সংসদীয় কমিটি এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিকাশের সই করা চিঠিতে উত্তর আসে: ‘তিনি লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।’
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন জিএ কমিটির আজ বৈঠকে বসার কথা আছে। জ্যেষ্ঠতা ও যোগ্যতার মিশেলে আমরা একটি নীতিমালা চাই। এর আগে দেখতে চাই রীতিনীতি যেন মুখ চিনে না বদলায়। আলাদা সচিবালয়ের আগ পর্যন্ত সরকারের বিচার ডিভিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে।
নতুন প্রজন্মের বিচারকদের কোনো রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় কাজ করা এবং সরাসরি দলীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা বাড়ছে। বর্তমানে যাঁরা ঢাকায় আছেন তাঁদের অনেকেরই অবস্থান এই সূত্রে গাঁথা।
মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক।
mrkhanbd@gmail.com
বিচার প্রশাসনে এখন নৈরাজ্য চলছে বললে কম বলা হবে। এখন বলতে হবে, ‘ওলট-পালট করে দে মা, লুটেপুটে খাই’। মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক ওরফে দুলাল, বিকাশ কুমার সাহাকে ঘিরে অধস্তন আদালতে দীর্ঘদিন ধরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়ে আছে।
জনশ্রুতি এই, আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে এ ত্রিভুজ বদলি ও পদোন্নতিতে প্রভাব খাটাচ্ছিল। এখন সুযোগ এসেছে, তাঁদের শূন্যপদে সুপ্রিম কোর্টের পছন্দে ও কর্তৃত্বে বিচারক নিয়োগ করা। কিন্তু আবার যেন সেই একই খপ্পর। সেটা যাতে না ঘটে, সে জন্যই এ লেখা। যাঁদের সম্পর্কে এ সমালোচনা, তাঁদের সঙ্গে এ ধরনের বৈষম্য নিয়ে বহু দফা মতবিনিময় ঘটেছে। তাঁরা একান্ত আলাপে একমত হন যে এমনটা চলা ঠিক নয়। কারণ, ‘মুখ চিনে খাদিম দেওয়া’র নীতি বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে নষ্ট করে। আশা করি বিষয়টি তাঁরা ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না। কারণ তাঁরা রাগ করেও এটুকু যুক্তির খাতিরে নিশ্চয় মানবেন যে তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণীয় হলে বিচার বিভাগের শ্মশান হতে দেরি লাগবে না।
বিচারকদের মুখ বুজে কাজ করার চাকরি। তাঁদের যে সংগঠন রয়েছে, সেটা অনেক আগেই অপসারণ-সন্ত্রাস করে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও মহাসচিবকে অপসারণ করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভুল বুঝতে পারেন। অপসারণ আদেশ প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু ভীতিটা থেকে যায়। চর দখলের মতো সমিতির সভাপতি ও মহাসচিব দখল করা হয়েছিল। জাহাঙ্গীর রাতারাতি হন সভাপতি। মহাসচিব দুলাল।
বিচার প্রশাসনের আকর্ষণীয় ঘটনা হলো বদলি ও পদোন্নতি। এখন প্রায় তিন হাজার বিচারক কর্মরত আছেন। কাউকে পুরস্কার বা তিরস্কার করার মোক্ষম অস্ত্র বদলি।
আলোচ্য তিনজনের প্রথম জন ঢাকা জেলা জজ থেকে দেড় শ জন জ্যেষ্ঠকে ডিঙিয়ে এখন হাইকোর্টে। দুলাল ঢাকার স্পেশাল জজ, বিকাশ চট্টগ্রামে। বদলির প্রক্রিয়ায় আইন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (প্রশাসন-১) ও সিনিয়র সহকারী সচিবের ভূমিকা নিমিত্তস্বরূপ। এখন লক্ষণীয়, ওই তিনটি শূন্যপদে কী ঘটছে।
বিকাশ ছিলেন ওই প্রশাসন শাখার অর্থাৎ দুলালের এক ধাপ নিচের সহকর্মী, সিনিয়র সহকারী সচিব। সেখানে এসেছেন পাঁচ বছর ঢাকায় থাকা মাহবুবার রহমান সরকার। তিনি দুলাল-বিকাশের সমিতি বিদ্রোহের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির অন্যতম স্বাক্ষরদাতা। অন্য আরও অন্তত চারজন সহযোদ্ধা চার-পাঁচ বছরের বেশি সময় দিব্যি ঢাকায় থাকছেন। বিকাশের পদোন্নতি দেওয়ায় বিস্ময়কর কাণ্ড ঘটে। প্রেষণে দীর্ঘকাল থাকা বিকাশের পদোন্নতি আটকে ছিল। কারণ, বিচারিক কাজে দুই বছর না থাকলে পদোন্নতি প্রাপ্য নয়। বিকাশের কী হবে? বিকাশের ছয় মাস। তো আইন পাল্টাও। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক পরিপত্র পড়ে আমরা হতবাক। ছয় মাসের হলেই চলবে। আর সেটা কার্যকর হবে মাত্র এক বছরের জন্য। অতঃপর বিকাশ পদোন্নতি পেলেন। তাঁকেও ঢাকায় আনার সুপারিশ ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে চলে গেছে। অথচ এ দুলাল-বিকাশের সই করা সুপ্রিম কোর্টকে দেওয়া একাধিক চিঠি আমাদের কাছে আছে। যেখানে বলা হয়েছে, ‘ঢাকায় তিন বছর থাকার কারণে অমুককে ঢাকা থেকে ঢাকার বাইরে অমুক স্থানে বদলির প্রস্তাব করা হলো।’
এক কর্মস্থলে চাকরির সাধারণ সীমা তিন বছর। এর বেশি হলে বদলি স্বাভাবিক। ঢাকা থেকে ঢাকায় বদলি আরও নিষিদ্ধ। এমন বদলি কিছু ভাগ্যবানের মধ্যে সীমাবদ্ধ। মেধা ও যোগ্যতা কী কাজ করে, এবং বিচারকেরা কীভাবে বিচারক দ্বারাই ভয়ানক অবিচারের শিকার হন, সেটা বুঝতে হলে বদলি ও পদোন্নতি বুঝতে হবে।
দুলাল-বিকাশদের দাপট কাকে বলে সেটা বোঝানোর জন্য আপনাদের একটি টাটকা গল্প শুনতে হবে।
সা ক ম আনিসুর রহমান পিএসসির মাধ্যমে বিচার বিভাগে ঢোকেন তিরাশিতে। মেধা তালিকায় তাঁর অবস্থান ছিল তৃতীয়। একই পরীক্ষায় তিন কৃতীর পরিণতি লক্ষ করুন। প্রথম হন আশিস রঞ্জন দাশ। তিনি একটি শৃঙ্খলাজনিত ঝামেলায় পড়েন। তাঁর পদোন্নতি বাধাগ্রস্ত হয়। তিনি অবশ্য এখন আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের বিচার ডিভিশনের তথাকথিত দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব। দ্বিতীয় জন শহীদুল করিম সম্প্রতি হাইকোর্টের বিচারক। আর তৃতীয় জন সা ক ম আনিসুর রহমান। দুলাল-বিকাশ তাঁকে বদলির প্রস্তাব দেন চট্টগ্রামে। সুপ্রিম কোর্ট দেন ঢাকায়। আমরা অপেক্ষা করছিলাম, যিনি তাঁর ২৮ বছরের কর্মজীবনে ঢাকা দেখেননি, তাঁর কপালে একটিবার ঢাকা জোটে কি না।
মেধা তালিকার প্রথম ব্যক্তি সচিব, দ্বিতীয় হাইকোর্টের বিচারক আর তৃতীয় জন হলেন লাঞ্ছিত। কামরুল-দুলাল-বিকাশদের প্রস্তাবে সায় দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। একটু খুলেই বলি।
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১০। প্রধান বিচারপতি পদে এলেন এ বি এম খায়রুল হক। তাঁর পূর্ববর্তী দুই প্রধান বিচারপতি ঢাকার জেলা জজ পদে নিয়োগে ১৫০ জ্যেষ্ঠ জেলা জজকে ডিঙানোর যে প্রস্তাব ঠেকিয়ে রেখেছিলেন, তিনি তাঁর প্রথম কার্যদিবসেই সেটা কবুল করেন। নির্বাহী বিভাগের হুকুম তামিলের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তাঁর কাছ থেকে অনেক ভালো রায় পেয়ে আমরা তাঁর প্রশংসা করেছিলাম। সেটা তাঁর প্রাপ্য। কিন্তু নিন্দাও তাঁর প্রাপ্য।
যে বিচারকের জজিয়তি-জীবন জীর্ণ, প্রায় অর্ধেক সময় কেটেছে প্রেষণে—রাজধানীতে, যাঁকে ঢাকা থেকে পদোন্নতি দিয়ে নরসিংদীতে মাত্র এক মাস আগে পাঠানো হয়েছিল, তাঁকেই তিনি ঢাকা জেলা জজ করেন। আর সা ক ম আনিসুর রহমানকে নোয়াখালীর জেলা জজগিরির পাট চুকিয়ে নিক্ষেপ করা হলো বরিশালে ট্রাইব্যুনালে। ১৪ নভেম্বর তিনি অবসর নেবেন। এ রকমের বহু আনিসুর রহমান নীরবে চোখের জলে অবসরে যান। পদত্যাগ করেন। অনেক মেধাবী ও যোগ্য ঢাকায় বদলি হওয়ার জন্য তদবির করেন না।
ঢাকা জেলা জজ পদ খালি। সমিতির সদ্য বিদায়ী সভাপতির ভগ্নিপতিও বিচারক। কিন্তু অনেকের জন্য যা কল্পনা করাও কষ্টের, তিনি তা-ই করেছেন। বিচারক হয়ে কুয়েতের দূতাবাসে ২০০৪ সালে কূটনীতিক বনে গিয়েছিলেন। বিএনপি সরকারের প্রস্তাবে সুপ্রিম কোর্ট তা মঞ্জুর করেছিলেন। প্রায় সাত বছর পর হঠাৎ তাঁর ঢাকায় আগমনে অনেকে প্রমাদ গুনছেন যে শ্যালকের ছেড়ে যাওয়া শূন্যপদের দিকে তাঁর নজর পড়েছে কি না। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিসহ এই শ্যালক-দুলাভাই জুটির বাড়ি কিশোরগঞ্জে।
এ লেখায় যে তিনজনকে নিয়ে আলোচনা করছি, তাঁদের মধ্যে একটি অদ্ভুত মিল আছে। তাঁরা প্রত্যেকে অনিয়মের এমন রেকর্ড গড়েছেন, যা আগে কেউ কল্পনা করতে পারেনি।
দুলাল অতিরিক্ত জেলা জজ থেকে জেলা জজ হন আরও ৪২ জনের সঙ্গে। ৮ সেপ্টেম্বর তাঁরই সইয়ে অন্য সবাইকে দুই সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে তাঁদের নতুন কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ যায়। কিন্তু তাঁরটি ঝুলে থাকে।
আইনমন্ত্রীর সঙ্গে সস্ত্রীক কানাডা সফর থেকে ফিরে ১৭ অক্টোবর দুলালকে বদলি করা হয় ঢাকার স্পেশাল জজ হিসেবে। নিয়ম হলো, মূল পদে অন্তত দুই বছর জজিয়তি না করলে প্রেষণে বদলি জুটবে না। কিন্তু প্রতিমন্ত্রীর একটুও তর সয়নি। চাকরিজীবনের ১৫ বছরের মধ্যে ১১ বছরই প্রেষণে থাকা দুলালের জন্য ওই দিনই সুপ্রিম কোর্টে চিঠি যায়। প্রশাসন-১-এ উপসচিব পদেই তাঁকে প্রেষণে রাখতে হবে। তিনি সেন্সর বোর্ডের সদস্য, তিনি আরও বহু প্রকল্পের মোক্তার। তাঁর এসিআরে দেখি, রায় লেখায় তাঁর দোষ আছে এবং তাও অপ্রতুল। অথচ আইন প্রতিমন্ত্রী তাঁকে এক শতে নিরানব্বই দেন। বিচারপতি ওয়াহ্হাব মিয়া ও অপর এক জেলা জজ তাঁকে দিয়েছেন ৬৬। হাস্যকর যুক্তি হলো, তিনি সস্ত্রীক সরকারিভাবে হজে যাবেন। ‘উপসচিব’ পদমর্যাদাকে ‘স্পেশাল জজ’ করতে হবে। টাইপের বিরাট ঝামেলা। দুই মন্ত্রী হয়তো ভেবেছেন, নিয়মকানুন চুলোয় যায় যাক, ব্যক্তিতোষণ টিকে থাক।
আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের ভিত্তিতেই অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতি কর্মস্থল নির্ধারণ ও শৃঙ্খলাজনিত বিষয়টি দেখভাল হয়ে থাকে। আইন প্রতিমন্ত্রী এসব কাজে ভয়ানক দাপুটে, তবে আইনমন্ত্রীও বহু অনিয়মের নথিতে সই করা থেকে বিরত থাকেননি।
বিচারকদের ওপর মানসিক নিপীড়ন চলছে। এর প্রমাণ আইন মন্ত্রণালয়ের বিচার ডিভিশনকে পদানত রাখা। সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম সচিবেরা দৌড়ের ওপর আছেন। আদালতের রায় হলো, জ্যেষ্ঠতমই সচিব হবেন। কিন্তু জ্যেষ্ঠতা এখন দলিতমথিত। স্পষ্টতই মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিচারকদের মানবাধিকারের লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা যায়। নিয়মতান্ত্রিক আইনসচিব নিয়োগ না করেও তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের রায় লঙ্ঘন করছেন। বিচার ডিভিশনের সহকারী সচিব থেকে সচিব পর্যন্ত প্রত্যেকে অবশ্যই বিচারক হবেন। এবং তাঁরা আছেনও। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করেও তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু পদ্ধতিগত অনাচার ও হয়রানির ঘটনাও ঘটছে।
অন্তত পাঁচ বছর ধরে আইনসচিব পদটি শূন্য। অতিরিক্ত সচিব পদ শূন্য। জোড়াতালি দিয়ে চলছে। দুই মন্ত্রী এটা জেনেশুনে করছেন এবং আমরা অবাক বিস্ময়ে লক্ষ করি, প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন জিএ কমিটি এবং সংবিধানের ১০৭ অনুচ্ছেদের আওতায় হাইকোর্টের সব বিচারক নিয়ে গঠিত ফুলকোর্ট এ বিষয়ে তাঁদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে উদাসীন থাকছেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রশাসন ক্যাডারের মনভজন করে সচিব হয়েছিলেন, যা আপিল বিভাগ অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন। তাঁকে না রাখতে পেরে তাঁরা কি এখনো কলকাঠি নাড়ছেন? হাবিবুলের পরে আনোয়ারুল হক ছিলেন ‘চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত’। তিনি হাইকোর্টে গেলে আসেন শহিদুল করিম। তাঁর পরিচয় তিনি ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত’। তিনি হাইকোর্টে গেলে এলেন আশিস রঞ্জন দাশ। তাঁরও জুটেছে ‘দায়িত্বপ্রাপ্তের’ তকমা। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে এটা তামাশা। এটা সুপ্রিম কোর্টের রায় কিংবা এ সংক্রান্ত বিধিবিধানের পরিপন্থী। অবশ্য এর দ্বৈত সুবিধা। হাত মোচড়ানোর ও হাত কচলানোর।
ওই চক্র বিচার প্রশাসনে নিজেদের অপরিহার্য মনে করে। দলের কান্ডারি ভাবে। ‘ম্যাডাম’ ডিজায়ার্সের মতো এরা ‘আপা’ ডিজায়ার্স চালু করেছে। বাকশাল ছাত্রলীগের কর্মী দুলালের একদা স্লোগান ছিল: ‘রক্তের নয়, আদর্শের উত্তরসূরি চাই।’ একজন নিরীহ বিচারককে জেএমবির রং দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে তাঁর রেজিস্ট্রার হওয়া ঠেকানো হয়েছে। বিষয়টি ভুয়া প্রমাণিত হওয়ার পরও পালের গোদাদের শাস্তি হয়নি। আবার ওই যে আনিসুর রহমান তো প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে জেএমবির ২১ সদস্যকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছিলেন। বিএনপির আমলে সেটাই ছিল এ সংক্রান্ত প্রথম রায়। তাঁর নামে নিশ্চয় অন্য কিছু বলে ঢাকায় বদলি ঠেকানো হয়েছে। মোহাম্মদ হারুনর রশীদকে এক বছরের মাথায় হঠাৎ ঢাকা থেকে বদলি করা হয়। সংসদীয় কমিটি এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিকাশের সই করা চিঠিতে উত্তর আসে: ‘তিনি লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।’
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন জিএ কমিটির আজ বৈঠকে বসার কথা আছে। জ্যেষ্ঠতা ও যোগ্যতার মিশেলে আমরা একটি নীতিমালা চাই। এর আগে দেখতে চাই রীতিনীতি যেন মুখ চিনে না বদলায়। আলাদা সচিবালয়ের আগ পর্যন্ত সরকারের বিচার ডিভিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে।
নতুন প্রজন্মের বিচারকদের কোনো রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় কাজ করা এবং সরাসরি দলীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা বাড়ছে। বর্তমানে যাঁরা ঢাকায় আছেন তাঁদের অনেকেরই অবস্থান এই সূত্রে গাঁথা।
মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক।
mrkhanbd@gmail.com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন