রবিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১২

বিচারপতির স্কাইপি সংলাপ

 ড. কামাল ক্রিমিনাল বোঝে না, আমীর উল গ্যানজাম করে ওয়ালিউর চোর

অলিউল্লাহ নোমান

    
 
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের নানা দিক নিয়ে বেলজিয়ামে অবস্থানরত ড. আহমদ জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের স্কাইপি কথোপকথনে উঠে এসেছে প্রসিকিউশনের সঙ্গে কীভাবে শলাপরামর্শের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়াটি চলছে। চলতি বছরের ১২ সেপ্টেম্বর স্কাইপি কথোপকথনে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম প্রসিকিউটর জিয়াদ আল মালুম সম্পর্কে বলেন, ‘মালুম খালি লাফায় লাফায় ওঠে। না, মানে যখন ওঠে যৌক্তিক কারণ নিয়া তো ওঠে না।’ অপরদিক থেকে ড. আহমদ জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘কী সেইটা বলেন?’ জবাবে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম জানান, ‘না কোনো কারণ নাই। আমি ধমক দিয়ে বসায় দিছি। পরে আবার রুমে ডাকছি। পরে কইছে এইডাই ঠিক আছে। আমি দাঁড়াইয়া যামু, আপনি আমারে বসাইয়া দেবেন। লোকে দেখুক আমাদের মধ্যে কোনো খাতির নাই।’ এছাড়া অন্যান্য প্রসিকিউটরদের যোগ্যতা এবং দক্ষতা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠে দুইজনের কথোপকথনে। কথোপকথনের একপর্যায়ে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম বলেন, কাকে আর এখানে আনা যেত। ড. কামাল হোসেন ক্রিমিনাল বোঝে না। আমির উল ইসলাম গ্যানজাম করবে। এছাড়া বেসরকারি সংস্থা বিলিয়ার সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী ঘরানার সাবেক আমলা ওয়ালিউর রহমানকে চোর বলে আখ্যায়িত করা হয়। সুলতানা কামালের সাক্ষ্য এবং তার সঙ্গে আলোচনার বিষয় নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হয় সেদিনের স্কাইপি কথোপকথনে।
উল্লেখ্য, একটি বিদেশি সূত্র থেকে স্কাইপি কথোপকথনের বিস্তারিত তথ্য আমার দেশ-এ আসার পর এ নিয়ে অনুসন্ধান চালানো হয়। এই অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম নিয়মিত ড. আহমদ জিয়াউদ্দিন ও যুক্তরাজ্যে অবস্থানকারী বাংলাদেশী নাগরিক রায়হান রশিদের সঙ্গে বিচার প্রক্রিয়া ও বিচারাধীন বিষয় নিয়ে নানা রাজনৈতিক আলোচনা করেন। তবে গত বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্টের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানিয়েছেন, বিচারাধীন বিষয় নিয়ে বিচারপতিরা স্ত্রীর সঙ্গেও আলোচনা করা থেকে বিরত থাকেন, যা গত শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় ইকোনমিস্টের অনলাইন সংস্করণে উঠে এসেছে। অথচ বৃহস্পতিবার ইকোনমিস্টের বিরুদ্ধে রুল জারি করে এক আদেশে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনটি বাংলাদেশে একটি নতুন ধারণা। এই আইন সম্পর্কে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েছেন। ড. আহমদ জিয়াউদ্দিনসহ অন্যদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টিও তিনি আদেশে স্বীকার করেন। কিন্তু আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, বিচারপতিরা কোনো মামলায় আইন বিশেষজ্ঞ ব্যাখ্যার প্রয়োজন মনে করলে সেই বিষয়ে অভিজ্ঞদের অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগের রেওয়াজ রয়েছে। এর বাইরে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে ব্যক্তিগত পর্যায়ে বা পক্ষভুক্ত কোনো ব্যক্তিপর্যায়ে আলোচনা বা পরামর্শ নেয়ার সুযোগ নেই। বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম ও ড. আহমদ জিয়াউদ্দিনের গত ১২ সেপ্টেম্বরের স্কাইপি আলোচনা বিস্তারিতভাবে পাঠকের সামনে উপস্থাপন করা হলো।
১২ সেপ্টেম্বরের কতোপকথন

নিজামুল হক নিজামুল হক নাসিম : হ্যালো...।

আহমদ আহমদ জিয়াউদ্দিন : কেমন আছেন?
নিজামুল হক নাসিম : এই তো দুই পক্ষের ঝগড়া থামাতে ব্যস্ত আর কি! মালুম খালি লাফায় লাফায় ওঠে। না, মানে যখন ওঠে যৌক্তিক কারণ নিয়া তো ওঠে না।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : কী সেইটা বলেন?
নিজামুল হক নাসিম : না কোনো কারণ নাই। আমি ধমক দিয়ে বসায় দিছি। পরে আবার রুমে ডাকছি। পরে কইছে এইডাই ঠিক আছে। আমি দাঁড়াইয়া যামু, আপনি আমারে বসাইয়া দিবেন। লোকে দেখুক আমাদের মধ্যে কোনো খাতির নাই, হি... হি... হি... (হাসি)।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : হা... হা... হা... (হাসি)। তাইলে ঠিক আছে। উনাকে কিন্তু মানা করা হইছে যে, খামাকা দাঁড়ায়েন না, কিন্তু উনি মনে করে কিছু পয়েন্ট মেক করা দরকার। এজন্য হয়তো দাঁড়ায়। কারণ টার্গেট তো আপনি না। টার্গেট তো বাম সাইডের লোকেরা। তবু আমরা বলে দিছি।
নিজামুল হক নাসিম : হ্যায় একটু পর পর লাফাইয়া লাফাইয়া ওডে। বলে এটা আসবে না, এইসব নেয়া যাবে না।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : আমি তো দেখলাম রিপোর্ট অনুযায়ী আপনার বোধহয় একবার না করছেন যে...।
নিজামুল হক নাসিম : আমি বলছি যে, আমরাই তো যখন দেখি যে এটা ইরেলিভেন্ট, তখন এইটা নেই না। আর আমরা তো তাদের সবকিছু নিচ্ছি না। আপনার তো দাঁড়ানো লাগে না। আগে আমরা বলব যে, এটা নিচ্ছি। তারপর আপনারা বলেন যে, এটা নেয়া ঠিক হচ্ছে না। আগেই লাফায় উঠে কেন। যখন দেখে আমরা কিছু নিচ্ছি, তখন দাঁড়ায়ে বলুক, আগেই কেন?
আহমদ জিয়াউদ্দিন : ওই এক্সারসাইজ করুক আর কি।
নিজামুল হক নাসিম : হা... হা... হা... (হাসি)।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : অ্যা...মানে, আমরা আলোচনা করছি, অবজেকশন যেন ইয়ে না হয়, মানে কোন অবস্থায়ই যেন স্পিডটা যেন কমে না যায় আর কি।
নিজামুল হক নাসিম : তা তো বটেই।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : তবে ওটাও ওনার স্ট্র্যাটেজিটা অই দিক থেকে ঠিক আছে। যদি দেখে যে না, ট্রাইবুন্যাল—আসলে প্রসিকিউশন চেষ্টা করতেছে কিন্তু না—পারতেছে না, তো দ্যাট কেস ইন সাম সর্ট অফ মানে ইয়ে আরকি, কনফিডেন্স, মানে যদি সেটাই উদ্দেশ্য হয় আরকি। জেরাটা কেমন গেছে ?
নিজামুল হক নাসিম : হ্যাঁ... ভালোই। জেরাতে তো সব কনফার্ম করে দিচ্ছে। এত বাজে জেরা, আল্লাহ...!!! ডিফেন্সের জেরা খুবই খারাপ হচ্ছে, জেরা হয় না।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : কিন্তু ডিফেন্সের সবচেয়ে ইমপোর্ট্যান্স মানে সবচেয়ে স্পেশালিস্টই জেরা করতেছে তো।
নিজামুল হক নাসিম : স্পেশালিস্ট বলেই তো সর্বনাশটা হয়ে যাচ্ছে।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : এদের ভেতরে মানে বেস্ট কে আর কি?
নিজামুল হক নাসিম : আমার তো মনে হয়, আইনের ই-টাই বোঝে নাই তারা।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : মানে—আইনের ফ্রেমওয়ার্কটাই বোঝে নাই তারা? আপনার অন্যান্য ব্রাদাররা কী বলে? তাদের কী ধারণা?
নিজামুল হক নাসিম : অ্যা...একই কথা বলতেছে যে, এ কি জেরা হচ্ছে! এ জেরা তো সর্বনাশ করতেছে আসামির। এই জেরা না করাই উচিত ছিল তাদের।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : এখন তারা আর কটা সেশন চাইছে? আরো দুইটা সেশন ?
নিজামুল হক নাসিম : দুই সেশন বাকি আছে। আজকে সেকেন্ড সেশনে শেষ হয় নাই। কারণ উনি প্রাইম মিনিস্টারের ওহানে গেছেন। বলছেন, এই জন্য সময় দিছি, কালকে দুই সেশনে শেষ।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : এতে কে গেছে? সুলতানা আপা?
নিজামুল হক নাসিম : হ্যাঁ, সুলতানা কামাল।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : আচ্ছা, এটা অন্য ব্যাপার। কালকে একটু আসছিল আর কি। আমাদের নিজেদেও ভেতরেও কথাবার্তা হইছে। কালকে, মহসীনা আর সঞ্জীব আসছে (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. আনোয়ার হোসেনের ছেলে)। ও আচ্ছা, আপনার সেই ছেলে আসবে নাকি?
নিজামুল হক নাসিম : না আজকে আসবে না। আজকে আসতে বলি নাই।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : আচ্ছা... যাক। আমরা আলোচনা করছি এইটা নিয়ে কিন্তু, হ্যাঁ..। এই ছেলে সম্পর্কে রায়হানের (লন্ডনে অবস্থানরত রায়হান রশিদ) অ্যাসেসমেন্ট হচ্ছে যে, এই ছেলে কিন্তু চাকরি পাওয়ার আগে, জয়েন করার আগে আগে সে আমাদের সাথে বিশেষ করে রায়হানের সাথে খুবই ঘনঘন যোগাযোগ করছে এবং সে সবকিছু করছে আর কি। কিন্তু, তার পর থেকে মানে... জয়েনের পর থেকে কিন্তু, আর কোনো খবর নাই তার।
নিজামুল হক নাসিম : ঠিকই আছে। জয়েনের পরে জজ হইয়া গেছে। খবর রাখবে কেমনে?
আহমদ জিয়াউদ্দিন : রিকোয়েস্ট করার পরেও, যে আপনি স্কাইপে আসেন। মানে সে প্রথমে সে জানাইছে তাকে ল্যাপটপ দেয়া হইছে। এবং ইন্টারনেট তার কিন্তু এক্সেস আছে। আমার যেটা ধারণা ছিল, কালকে আপনাকে কর্নফার্ম করতে পারি নাই। আমার ধারণা ছিল সে হয়তো বা এখন পর্যন্ত ইন্টারনেটের এক্সেসটা সে ইয়ে করতে পারছে কি না।
নিজামুল হক নাসিম : ইন্টারনেট ২-৩ দিন আগে পাইছে, এবং আপনার ওইডা-ইন্টারনেট তারে অফিস দেছে। আর বাসায় আছে কিনা জানি না আমি। কিন্তু স্কাইপে তার নাই, এখন পর্যন্ত।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : আচ্ছা।
নিজামুল হক নাসিম : এখন তো সে জজ। এখন ইয়ে হইছে না? এখন তো সে জজ। আবার ইয়েতে ভর করছে না? মানে কথা বলা ঠিক হইবে কি না? উচিত কিনা আপনার সঙ্গে। এসব...।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : সে যখন যোগাযোগ করছে তখন তো সে জজই ছিল আর কি।
নিজামুল হক নাসিম : যাই হোক।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : হ্যাঁ... হ্যাঁ... এখন তো সে জজ না, বরং এখন তো সে মোর অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ জবে আছে।
নিজামুল হক নাসিম : আমাদের এখানে—হ্যাঁ। যাই হোক, আজকে তার সঙ্গে আমার কোনো দেখাই হয় নাই। কারণ আমিও তো ১০টায় কোর্টে ঢুকি আর সাড়ে ৪টায় বের হই। তবে তাকে আমি, কালকে তারে আমি ডাকব।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : ওইটা হচ্ছে কী যে, ওই... রায়হানের সাজেশনটা হচ্ছে যে, আপনে সরাসরি, সে আপনে আমাদের কথাটা বলছে আপনারে। মানে সবই করছে এবং এটা রায়হান মনে করে যে, সে মানে আমাদের সাথে যে লিংকেজটা আছে, আপনার একটা ভালো শুভেচ্ছা টাইপের এবং বলতাছে যে, এই মুহূর্তে ইয়ে করছেন যে, তার সামনে আমরা আলোচনাটা প্রাথমিকভাবে না করি আর কি। আপনে তার সাথে ওয়ার্ক করেন, অ্যান্ড দেন ইউ ফিল ইট, অ্যান্ড দেন এবং আরেকটা কথা রায়হান যেটা বলছে যে, আমাদের কাছ থেকে ম্যাসেজ আপনার কাছে যে, আমাদের সাথে তার যোগাযোগ আছে কি না সেটা জানতে একটু ইয়ে কইরেন আর কি, মানে জিজ্ঞাসা কইরেন। আমাদের সাথে যোগাযোগ আছে কি না, এরকম একটা প্রশ্ন কইরেন। সেটা ভালো হইবে আর কী। আর আপনি কাজ করেন। এমনে ঠিকই আছে আমাদের।
নিজামুল হক নাসিম : আচ্ছা।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : কিন্তু রায়হানের কথা হচ্ছে যে, ছেলেটা একটু ক্যারিয়ারিস্ট মনে হচ্ছে আমাদের কাছে।
নিজামুল হক নাসিম : ক্যারিয়ারিস্ট তো বটেই, কেরিয়ারিস্ট হবেই। কে না? হা... হা... হা... (হাসি)
আহমদ জিয়াউদ্দিন : ওয়েল, আমাদের হচ্ছে যে, ওই সেন্সে আমরা ইয়ে করি আর কি। আমাদের-আমরা মনে করি আর কি ক্যারিয়ার আছে। বাট এখানে ডেডিকেশনটাও থাকতে হবে আর কি। তো কমিটমেন্টটা এবং ডেডিকেশনটা আর কি।
নিজামুল হক নাসিম : আমি একটা কথা বলি—ও ওইখানে আসছে, মানে গভর্নমেন্ট বইল্যা।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : হ্যাঁ। এটা সত্যি কথা।
নিজামুল হক নাসিম : ইন্টারেস্ট দেখাইয়াই সে আসছে, তার ইন্টারেস্ট আছে। কাজেই কমিটমেন্টও আছে বইল্যা আমারও মনে হয়। আমার লগে হে কথাবার্তা বলছে, রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনা করছে।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : না, না। এমনে ঠিক আছে। এমনে আমরাও ঠিক আছি। যেটা সারপ্রাইজড হইল সেটা হইল যে, আপনি তো ধরেন রেসপন্স তো করবেন আপনি। হয়তো বা আপনি স্কাইপে আসতে পারতেছেন না, কিন্তু আপনাকে যখন রিকোয়েস্ট করা হয়, বা বলা হয়। আসলে আগে রীতিমত নিয়মিত আসত। এখন হঠাত্ করে আইসিটিতে জয়েনিংয়ের পর থেকে তার রেসপন্স রেটটা একটু লো হয়ে গেছে। সেটা আমাদেরকে একটু... মানে রায়হানকে বিশ্বাস করি এবং মেইন রায়হানই এগুলো কো-অর্ডিনেট করে। আর কালকে আমাদের সঞ্জীব-মহসিনার (মহসিনা হল সঞ্জীবের স্ত্রী) সাথে আমাদের ডিটেইল ডিসকাশন হয়েছে। সঞ্জীব-মহসিনাদের ইভেন আপনার যখন লাগবে বা যদি লাগে, উই এজ ইউজ্যুয়াল। যেহেতু তারা আপনারটা ইয়ে নিয়ে করে আর কি। যদি সে একদিন আগে জানে, তাহলে তখন ঢাকায় এসে ইয়েতে থাকবে আরকি। মানে গুলশানে থাকবে। তখন ইয়েতে থাকবে না। একদিন আগে থেকে ব্যবস্থা করে নিতে পারে আর কি, তাহলে।
নিজামুল হক নাসিম : আচ্ছা...।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : কারণ ওদের ওই গাড়ি একটা ব্যাপার-স্যাপার আছে। মানে সবাই যায় একসাথে। ওদের এরকম একটা ব্যাপার-ট্যাপার আছে। সো একদিন আগে জানলে তার জন্য ব্যাপারটা ইজি হয়ে যায়। অবশ্য আপনাকে তো সব সময় একদিন আগেই জানানো হয় অ্যাট লিস্ট, বা আরো আগে জানানো হয়। তো ওইটা ওভাবে চলতে থাকবে। যখন দরকার হবে—আর কালকে বোধহয় সিমন মিয়া, মানে ওস্তাদি তো আর কি।
নিজামুল হক নাসিম : হু...ম।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : মানে সুলতানা আপার সামনে সে একটু গুরুত্ব, নিজের গুরুত্বটা বোঝানোর জন্য যে, সুলতানা একটু গুরুত্বপূর্ণ মানুষ। কালকে যখন তারা লাঞ্চ করেছে প্রসিকিউটরদের সঙ্গে, মালুম ভাই, অ্যা...অ্যা আইও‘র সাথে। তো সেইখানে আমরা যে জিনিসটা আলোচনা করেছিলাম, আমরা নিজেরা, নিজেরা-নিজেরা মালুম ভাইর সাথে, উনিও ছিলেন। তারেকের সাথে,.. সেদিন যে রাত ২টা পর্যন্ত বড় একটা আলোচনা হলো যে, আমাদের অ্যাপ্রোচটা কী হবে। কার পরে কে আসবে এবং কোনখানে গিয়া সাক্ষী এটা শেষ হয়ে যাবে। তারপের হচ্ছে যে মানে আমরা কোন সাক্ষীটা দিব। এই যে, এইসব যে আলোচনাটা, এইটা এবং এখানে বোধহয় সুলতানা আপার সাথে ৩ জন আইন ও সালিশ কেন্দ্র থেইকা ছিল।
নিজামুল হক নাসিম : হ্যাঁ.. ওবায়েদ আর দুইটা মেয়ে। তিন কি চারজন।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : হ্যাঁ, তিন-চারজন ছিল। তারাও ছিল সেখানে। তো সেইখানে এইটা মানে উনি যখন ওনার, মানে মালুম ভাইয়ের ভাষাতে এইটা হলো আওয়ামী লীগের এ আর কি, শিক্ষা আর কি। আওয়ামী রাজনৈতিক শিক্ষা আর কি। নিজের গুরুত্বটা দেখানোর জন্য বলছে যে, আমরা এই রকম চিন্তা করতেছি যে আমরা আপনার পরে শফিউল্লাহরে ডাকবো না, এইটা করবো না... সেইটা করব না, এইসব আরকি। এরপর মালুম ভাইয়ের কথা অনুযায়ী উনি চেষ্টা-টেষ্টা করছেন... মানে ইশারা দিছে, কিন্তু উনি বলছেন, খাড়ান আমার কথা আছে। আমার কথাটা বলে নেই আর কি। এটা সুলতানা আপা খুবই রিএ্যাক্ট করেছে।
নিজামুল হক নাসিম : হ্যাঁ..হ্যাঁ...
আহমদ জিয়াউদ্দিন : যে, আমার সামনে আমাকে তো দেখানোর কিছু নাই। তারপর হচ্ছে যে আমার সাথে ছেলেমেয়েরা আছে, তারা... আমরা তাদেরকে বিশ্বাস করি। কিন্তু এইগুলা তো আমি জানতে আসি নাই যে, আপনার প্রসিকিউশনের স্ট্র্যাটেজিটা কী হবে... সেইটা কেন আমাকে, মানে আমার সামনে, আমাদের সামনে, এইরকম একটা প্রেক্ষিতে কেন বলা হলো! পরে কালকে আমি ওনাকে দু্রত ম্যাসেজ দিয়েছি আর কি। যে আপনি কালকে রাত্রেই আসেন। আর মালুম ভাইরেও নিয়া আসেন। মালুম ভাইয়ের সাথে তো আমার আগেই কথা হইয়া রইছে। মালুম আসলে আমি ওনারে বলছি যে, ই... রকম ব্যাপার। এটা তো আমরা সেদিন আলোচনা করছি স্পেসিক্যালি যে, আমরা পাঁচজন লোক ছাড়া, যারা আপনারা কোর প্রসিকিউটর তিনজন, চারজন যারা তারা, আর আমরা হইলাম দুইজন। এর বাইরে কিন্তু কেউ জানবে না। এটা কী করে, প্রথমে বলছে যে, আমরা এরকম জানছি। এ ধরনের কথাবার্তা, যেগুলো আসলে বলার কথা না। এগুলো কেন বলা হইছে আর কি। তখন উনি অলমোস্ট সেটা ইনোসেন্ট একটা প্লে করতেছে যে, এইগুলা কে করছে। তখন আমি বলছি যে, আসলে দেখেন, এগুলো আপনার নামেই আসছে। আসলে আমি দেখলাম সরাসরি না বললে এটা হবে না আর কি এবং এটা আপনি কোথায় কখন? আমি বলছি যে, এই আপনে তখন খাওয়ার সময় লাঞ্চ আওয়ারের সময়। তখন তো আর কিছু বলতে পারে না। মালুম ভাই বলতেছে যে আমিও তো ছিলাম—আমিও তো ইশারা দেয়ার চেষ্টা করছি। এরপর আমি বলছি দেখেন, আপনি খুবই পরিষ্কার করে বুঝে নেন যে, এই বড় কেস সম্পর্কে, এই যে তিন-চারজন আপনারা যারা কোর প্রসিকিউটররা আছেন, এদের বাইরে যদি থার্ড পারসনও কেউ থাকে, তখন এগুলো নিয়ে আপনারা আলোচনা করবেন না, একদম আলোচনা করবেন না। এখন এর পরে আমাদের মিটিংয়ের পরে চিফ প্রসিকিউটরসহ তারা বসছে এবং সেখানে চিফ প্রসিকিউটর একই ইস্যুতে খুবই এমফেসাইজ দিছে। বলছে যে, এটা কোনো অবস্থাতে এ...এ না হয়। মানে এই আলোচনাগুলা মানে আমাদের স্ট্র্যাটেজিক আলোচনাগুলো যেন কোনো অবস্থাতেই বাইরে না যায়। কিন্তু হয় অত গুরুত্ব বুঝে নাই, অথবা নিজের গুরুত্বটা জাহির করতে চায়, যাতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সামনে, সুলতানা কামালের মতো একটা মানুষের সামনে যে... আমি যে কী, মানে এইটা কালকে আমরা এইটা বেশ কিছু এগিয়েছি আর কি। যে দেখেন এই ব্যাপারটাতে যেহেতু আমরা সাম হাউ জড়িত আছি। আপনাদের স্ট্র্যাটেজিক ডিসকাশনটা শুধুমাত্র যারা ইভেন আপনারা যারা আলোচনা করতেছেন না, অন্য প্রসিকিউটরদের সাথে, সেইখানে আপনার যখন বাইরের লোকেরা আছে, সুলতানা আপা আছে বুঝলাম, কিন্তু সুলতানা আপারও তো জানার কথা না। সুলতানা আপা তো ওইটাই বলছে আর কি। যে এটা তো আমারও জানা উচিত না। তয় আপনারা কী করতেছেন, না করতেছেন এবং সেটা এইখানে আবার আমার ছেলেমেয়েরা রইছে। ওনি বলছে, তাদেরকে আমি বিশ্বাস করি। কিন্তু তারপরেও তো। এইটা এই জিনিসগুলো এখন তো আমরা ওনার সামনে, ওনাকে তো আমরা অল মোস্ট মানে স্ট্র্যাটেজিক আলোচনাগুলা, এর পরে তো আরো কো-র আলোচনা হবে আরকি। যেগুলো আসলে রিয়েলি আমরা কোন কোন পয়েন্টে আগ্যু করব, কোন কোন পয়েন্টে আগ্যু আসবে, কীভাবে এটাকে কনস্ট্রাক্ট করা হবে—এসব আলোচনা তো তখন মানে ডিফিকাল্ট হইয়া যাবে। সো এখন আমরা যেটা আমরা ঠিক করছি যে, আমরা মোটামুটি আবার সেই ওল্ড গ্রুপ, মানে আবার ৪ জনের গ্রুপ, আবার রিঅ্যাক্টিভেট হবে। মানে হইয়া গেছে আরকি। ভালোই হইছে। আবার সবাই ফর্মে চলে আসছে। যে যতটুকুন পারে ম্যাক্সিমাম সময় দিবে। মোহসিনা হচ্ছে... বিলিয়াতে শুরু করছে।
নিজামুল হক নাসিম : আচ্ছা, ভালো হইছে।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : বিলিয়াতে তো নাকি... ডিরেক্টর—আমি এটা জানতাম না, অলিউর রহমানকে বহিষ্কার করে দিয়েছে? এটা কি জানতেন আপনে...?
নিজামুল হক নাসিম : কই? না তো!
আহমদ জিয়াউদ্দিন : হ্যাঁ, অলিউর রহমান নাকি বহুদিন আগে বহিষ্কৃত।
নিজামুল হক নাসিম : তা তো জানি না! এখন কে?
আহমদ জিয়াউদ্দিন : এখন অ্যাক্টিং ডিরেক্টর শাহদীন (সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক), এখন ওনাকে কনফার্ম করছে আর কি। আমি তো জানতামই না, যে... অলিউর রহমানের বোধহয় একটু ফাইন্যান্সিয়াল ইয়ে হইছে আরকি...
নিজামুল হক নাসিম : হ্যাঁ... সে তো চোর।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : হা... হা... হা... (হাসি)। এখানে কিছু ফাইন্যান্সিয়াল ইরেগুলারিটির ব্যাপার-স্যাপার আছে আরকি। সো, হি ওয়াজ টোল্ড টু গো। মানে যানগা। এইটা হচ্ছে... এটা আমি জানতাম না কিন্তু। এখন সে ওইখানে জয়েন্ট ক্রিমিনাল এক্সপার্ট। তার উপর রিসার্চ করতে বলছে। অ্যাজ এ রিসার্চার তাকে দুইটা পেপার করতে হবে, কী করতে হবে না করতে হবে। তার প্লেন্টি অব সময় আছে ওইখানে। কাজেই মহসিনা মানে দিনের বেলাতেও প্রচুর কাজ করতে পারবে। তারপরে সঞ্জীবের এবারে ক্লাসটা খুব ভালো দিয়েছে। প্রথম ইয়ারে তাকে হাবিজাবি কোর্স দিছিলো, যেগুলাতে আসলে বেশি পড়ালেখা করতে হইত। এবারে তারে ক্রিমিনোলজি দিয়েছে এবং ইন্টারন্যাশনাল ল দিছে। এটা রিয়েলি তার জন্য বেশি ওয়ার্ক করা লাগবে না আর কি।
নিজামুল হক নাসিম : স্ট্যামফোরডে ?
আহমদ জিয়াউদ্দিন : হ্যাঁ, স্ট্যামফোরডে। ক্রিমিনোলজি, ক্রিমিনোলজি তো তার একেবারে পেট সাবজেক্ট। আর ইন্টারন্যাশনাল ল তার যথেষ্ট পরিচিত সাবজেক্ট। তো এটার জন্য তাকে বেশি একটা ঘাঁটাঘাঁটি করা লাগবে না। বেশি পরিশ্রম করতে হবে না। কাজেই তারা দুইজনেই আবার মানে...ব্যাক টু ফর্মে আসছে।
নিজামুল হক নাসিম : ওরা সাভারের থেকে কেমনে এই ই কাজ করবে, কীভাবে দায়িত্ব পালন করবে?
আহমদ জিয়াউদ্দিন : আচ্ছা। যে ডিসট্যান্স সাভার থেকে ঢাকার যে আপনাদের এই এলাকাতে, মানে সাভার থেকে এইখানে আসা... ঢাকার এই মোড়া থেকে ওই মোড়াতে যাওয়া নাকি বেশি তফাত না। ওইখানেও দেড় ঘণ্টা লাগে। তারা যখন সকালে আসে। তাতে তখন দেড় ঘণ্টা লাগে।
নিজামুল হক নাসিম : হু...ম...
আহমদ জিয়াউদ্দিন : কাজেই খুব একটা বেশি ইয়ে হয় না আর কি। আর তারা যখন উইক এন্ডে এইখানে থাকে। আর যখন দরকার পড়বে, বলতেছে যে, যখনই আমাদের রাত্রে দরকার পড়বে, বিশেষ কইর্যা, সেটা তখন এক রাত আগে জানালে, তখন আমরা ওই রাতেও থাকবো আরকি। গুলশানে থাকবো। সো, ওইটা খুব একটা অসুবিধা হবে না। ওইটা ওদের... ওরা প্রত্যেকেই আসতেছে ওদের গাড়ি নিয়ে সকালে চইল্যা আসে। গাড়ির দুইজন দুই দিকে, একেক জনকে একেক জায়গায় নামায়, তারপর আবার কো-অর্ডিনেট করে তারা। কাজেই ওইটা অসুবিধা না তখন। কাজেই তারা কমিটেড ছেলেমেয়ে। এখন যেটা মালুম ভাই চাইছে, ওইটা বলছি আজকের ভিতরে খুঁজে বের করতে। সেইটা হচ্ছে যে, ওই দুই-তিনটা বোধ হয়, ডকুমেন্ট আমরা অ্যাড করেছিলাম—সেই ডকুমেন্টগুলা...ওনাদের হাতে দিয়ে দিতে আর ক। আছে... আমরা বোধ হয় এটা এক্সট্রা ওই ওয়াশিংটন পোস্টের একটা লেখা ছিল, সেটা অ্যাড করা হইছে। সেটা, আর দুইটা জিনিস আছে ছোট ছোট। এইটা ওনাদেরকে দিয়ে দেয়া, ওনাদেরকে বোঝানোর কাজটা করা। কাজেই এইটা করবে। তারা যতটুকু সম্ভব ততটুকু তারা ইয়ে করবে। আ...র রাতে যদি থাকতে হয়, মানে বেশি রাত্রে যদি প্রয়োজন পড়ে, মানে আপনার কাছে যদি ফিজিক্যালি যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে রাত্রে, সেটা আগে জানলে সে ইয়ে করে ফেলবে। সে বলছে যে, আমরা তখন গুলশানে থাকবো আরকি। সো, ওইটা কোনো সমস্যা হবে না। ওইটা আমাদের মিটিংটা, মানে গ্রুপটাকে আবার চাঙ্গা করা গেছে আরকি।
নিজামুল হক নাসিম : হ্যাঁ..হ্যাঁ... (হাসি) ।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : মানে এটা দরকার ছিল। মানে যে খোঁজাখুঁজির কাজটা অনেক সময়, ছোট একটা লেখার কাজটা, হু.., এগুলা আমাদের কয়েকজন নতুন ছেলে আসছে... তাদেরকে তো আমরা কাউরে তো আসলে, আমাদের যে প্রিন্সিপল, যার যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু যদি তাদেরকে জানানো হয়, অথবা কাউকে বলা হল যে এটার উপর ছোট্ট একটা, ইয়ে লেখ আর কি। এর চাইতে তো বেশি আর সে জানতেছে না যে কী হচ্ছে। ত এগুলা...। রায়হান অবশ্য এ মাসে ফ্রি হয়ে যাবে হোপফুলি। ওইগুলাও কো-অর্ডিনেট করার জন্য সঞ্জীবরা হইছে বেস্ট পার্সন। মানে সঞ্জীবদের পার্সপেক্টিভটা থাকার ফলে হচ্ছে কী যে, আমাদের কী প্রয়োজন আছে... আর খুব সার্ফ ছেলে তো এগুলা। এগুলাতে কোনো অসুবিধা না। তো... ওই সেন্সে রিলিফ যে, মোর অর লেস আমরা এখন লিগ্যাল কর্মীদের টিমটা আবার, মানে ব্যাক টু ফর্মে চলে আসছে। আর মালুম ভাইকে কিছু সাপোর্ট আমাদের দিতেই হবে। কারণ ওনারা রিয়েলি এই ডকুমেন্ট-টকুমেন্ট নিয়ে বেকায়দায় আছে। আর প্লাস হইল যে, এই যে সিমন-টিমন (প্রসিকিউশনের সদস্য) এরা আসলে এফিশিয়েন্ট না। এরা কিন্তু ঝামেলা করার ব্যাপারে খুবই এফিশিয়েন্ট আবার। আর মালুম ভাই কিন্তু বারবার বলতেছে যে, আমাদের সাথে যখন, মানে ওনার গল্পের ষোলোতে আমাদের স্পিকার-ডেপুটি স্পিকার যে আছে তার সাথে, তার এলাকার বোধ হয়, একই এলাকার মানুষ।
নিজামুল হক নাসিম : মানে গণ্ডগোল?
আহমদ জিয়াউদ্দিন : সেইখানে আসলে তার কী গণ্ডগোল। সেখানে বোধহয় সে বেশি পপুলার। সে... তার টেলিভিশনে বেশি চেহারা আসে, এ নিয়ে কী মাথা গরম। এখন আমি ওই লোকরে তো আমরা চিনি কোত্থেকে, ওই লোক তখন আমিনুল হকের সাথে, তখন তার ইয়ে করত যখন।
নিজামুল হক নাসিম : সে আগরতলা মামলার আসামি...।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : হু...ম... তো মানে আমিনুল হকের চেম্বারে তো তার, মানে পার্মানেন্ট আনাগুনা ছিল।
নিজামুল হক নাসিম : হ্যাঁ...।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : সেইখান থেইকা আমরা তারে হইল চিনি আর কি। এবং মানে ভালো বেটার দেন আওয়ামী লীগার সে। উনি কেন যে তাঁর সাথে ওনার গণ্ডগোল আসলে উনি কী তাকে থ্রেট মনে করে কি না, যেটা সিমন ভাই মনে করে যে, সে নাকি তাঁকে থ্রেট মনে করে এলাকার জন্য। অ্যা.. এসব কথাবার্তা হইল ওনার আর কি। উনি ঠিক প্রসিকিউশন নিয়ে বেশি ইন্টারেস্টেড না। যেটা হল উনি যে চেষ্টা করবে যে, এর পরে সেটা তো পরিষ্কারই বোঝা যাচ্ছে যে, উনি... নির্বাচনের জন্য চেষ্টা করবে। এইখানে চেষ্টা করছিল ওই যে, ইলেক্টেড বা সিলেক্টেড ইয়ে হওয়ার জন্য। মানে ডিস্ট্রিক্ট চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য।
নিজামুল হক নাসিম : হুম...।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : কিন্তু সেটা হলো না। এটা হচ্ছে ওনার ইয়ে আরকি। বরং ওনার ছেলেটা হচ্ছে বেটার, মানে অনেক বেটার। শুধু শুধু কিছু লোক, এমন লোক দিল আর কি। শুধু প্রসিকিউশনটা যদি এফিশিয়েন্ট লোকদের হাতে পড়ত না... তাহলে কিন্তু ইমেজটা একটু অন্য রকম হয়ে যাইত।
নিজামুল হক নাসিম : এফিশিয়েন্ট কী, আমার কথা এই এফিশিয়েন্ট কারা? সেটা বুঝি না কিছু। বাংলাদেশে এই আইনের উপর এফিশিয়েন্ট লোক পাব কই—এই আমরা? আমীরুল ইসলামের আনলে হ্যায় তো গ্যাঞ্জাম করবে। আর ড. কামাল হোসেন হ্যায় ক্রিমিনাল বোঝে না। এখন আনবেন কারে, লোক কই?
আহমদ জিয়াউদ্দিন : না... এটা বলতেছি না আমি। এফিশিয়েন্ট মানে হচ্ছে যে, যেমন ধরেন কী যে... কেউই তো আমরা জানতাম না এই আইনটা। কিন্তু আপনি দেখেন যে, একেক জন একেক রকমভাবে পিক আপ করছে। ঠিক আছে? এবং এটার ব্যাপারে পুরো নজর দেয়াটাকে আমি এফিশিয়েন্ট বলতে চাচ্ছি। যে, আপনি ফুললি কনসেনটেড করতেছেন, জানার চেষ্টা করছেন, আপনে বোঝার চেষ্টা করছেন এবং সবচেয়ে ইমপোর্টেন্ট হচ্ছে যেটা, সেটা হচ্ছে যে, আপনার ফান্ডামেন্টালটা যদি ঠিক থাকে, বেইসিক আপনার কনসেফট যদি ঠিক থাকে, ইন আদার ওয়াইজ ইফ ইউ আর এ গুড লইয়ার, রিজনেবলি গুড লইয়ার, এটা কিন্তু হেলপ করে। এবং ওই ডেডিকেশনটা থাকতে হবে। ওনাদেরকে বেশিরভাগই প্রসিকিউটররা আসলে, গুড লইয়ারের সংজ্ঞায় পড়ে কি না, মানে যে যে এরিয়াতে কাজ করে। তার ক্রিমিনাল ল’তেই কাজ করুক, কোনো অসুবিধা নাই। বাট ক্রিমিনাল ল’তে তারা গুড লইয়ারের মধ্যে আসে? সংজ্ঞার ভেতরে পড়ে? এখানে হচ্ছে, আমাদের সমস্যাটা হচ্ছে। ওই সেন্সে আমি বলছি, যদি এফিশিয়েন্ট গুড লইয়ার থাকত। তারপরে আপনার শিখাটা তো শিখতেই হচ্ছে কন্টিনিউয়াসলি। আপনি পিক করবেন আসলে। খুবই কুইকলি পিক করতে পারবেন, শুধুমাত্র আপনার ওই ইচ্ছাটা থাকলে আর কি। বোঝার চেষ্টা করাটা, মানে চেষ্টা করে যদি আরকি। ওনাদের তো হচ্ছে যেহেতু নিজেরাই খুব বেশি গুড লইয়ার না, মানে খুব বেশি না, আসলে গুড লইয়ারই না, মানে লইয়ারের ভেতরেই পড়ে না। এবং এই যে জানার ব্যাপারে যে একটা উত্সাহ যেটা, সেটাও নাই। ডেডিকেশনটাও নাই। যে ফুল টাইম করতেছি আরকি। আর প্রত্যেকের যে ক্যামেরা। সো, এই সবকিছু মিলে-টিলে অন্য ক্যারিয়ার, মানে ক্যারিয়ার খারাপ না। কিন্তু প্রসিকিউশনে হলো যে, একটা মহা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ একটা যে... দায়িত্ব নিছে আরকি বা দায়িত্ব পড়ছে আমার উপরে। ওই সিরিয়াসনেসটা যদি থাকে আরকি, বা ওজনটা যদি বোঝে, আমি কিন্তু খুবই ফরচুনেট যে, আমি বাংলাদেশের ইতিহাসে আমি একটা অংশ হয়ে যাচ্ছি। অ্যাজ এ প্রসিকিউটর অব দ্য আইসিটি। যে আমাকে একটা হচ্ছে ‘সেভেনটি ওয়ানের’ ভিকটিমদের, একট হচ্ছে হোল প্রসেসটা, নতুন একটা জিনিস, এ ব্যাপারেও তো আমার জানার ইচ্ছা থাকতে হবে। এই জিনিসগুলা আসলে সবগুলো মিল্যাই কিন্তু আসলে একটা ভালো, ইভেন সে আগে কোনোদিনই ইন্টারন্যাশনাল ল’ পড়ে নাই, ডাজ নট ম্যাটার আসলে। কিন্তু সে যদি বেসিক ক্রিমিনাল ল’টাও পড়ে, তারপরে এতদিনে যদি তাকে এই যে নোশনটা, যেটা বোঝে যায় যদি আর কি। এটা খুব ডিফিকাল্ট। প্রত্যেকেরই জন্য যেটা আপনাদের অনেকেরই ওরিয়েন্টেশন হচ্ছে যে... ক্রিমিনাল ল’য়ের ওরিয়েন্টেশন থেকে যারা আসতেছে। কিন্তু ওনারা তো আসলে প্রাইভেট লাইফেও কিন্তু ওনারা কোনো সিরিয়াস কেইস করে নাই কখনো। মানে আপনে যখন, ওনি তো নিজেই স্বীকার করে আরকি। মানে সবাই লইয়ার হইছে। কিন্তু, লইয়ার কিন্তু ওই লইয়ারই আরকি। এখানে খুব সিরিয়াসলি কেইস করছে, বড় ক্রিমিনাল ল’ কেইস করছে, অথবা গুরুত্বপূর্ণ ক্রিমিনাল কেইস করছে, ইরকম মানুষের পরিমাণ খুবই কম আছে। আবার দুই-একটা যেটা ওই দিকে যেগুলা আছে, সেগুলাও কিন্তু দে আর নট রিয়েলি, মানে ডেডিকেটেড আরকি। এদের এক্সপেরিয়েন্সটা নাই, আর ডেডিকেশনটা না থাকে, ডেডিকেশনটা থাকলে কিন্তু এক্সপেরিয়েন্স-টেক্সপেরিয়েন্স সবই হয়ে যায়। এবং ওই তিন বছরে এদের অনেক এক্সপেরিয়েন্স হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আজকে, এখন পর্যন্ত ধরেন—আমি আপনাকে বলতেছি উদাহরণটা, এই ইয়ে গেছে যে, লন্ডনে গেছে যে দুইজন প্রসিকিউটর...
নিজামুল হক নাসিম : হু বাদল গেছে...
আহমদ জিয়াউদ্দিন : হ্যাঁ, বাদল মিয়া রিকোয়েস্ট কইর্যা পাঠাইছে, আমরা যেন ব্রিফ কইর্যা দেই হোল প্রসেসটা। বুঝছেন...?
নিজামুল হক নাসিম : হা... হা... হা...!
আহমদ জিয়াউদ্দিন : মানে এই টোটালি তাদের এ সম্পর্কে কোনো ধারণা নাই। এইটা হচ্ছে সমস্যা। কেই করতেছে, এই ভাগ-বাটোয়ারা দিয়ে দেওয়াতে এখন তারা কেস করতেছে। এজন্যই তো আমি আসলে আপনাদের এই ট্রাইব্যুনালের যে, এক নম্বার ট্রাইব্যুনালের ব্যাপারে হইল আর কি আমার ভেরি ভেরি ইন্টারেস্ট। আর ওইখানে যে ওরা কী করতেছে। অ্যা... আমরা কোনো খবরও রাখি না, সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ বেশি, ওইটার তো আমরা কোনো খবরও রাখি না। আর সেই স্কোপও নাই আমাদের। আর আমরা বুঝতে পারতেছি না। একেক জন একেক রকম লিমিটেশন-ওয়ালা লোকদেরকে দেয়া হইছে আর কি। বাট এনিওয়ে। তারপরও যেভাবে প্রসেসটা আগাচ্ছে সেটা। আমাদের ফাইনাল কথা হইল সেটাই অলওয়েজ। যে প্রসেসটা এটা ডেসপাইট এভরিথিং, উই আর ভেরি হ্যাপি। রায়হানরা একটু, মানে সেদিনও রায়হানরে বলছি, কালকে না পড়শু দিন বললাম আরকি। দেখেন আমরা তো, আমি ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারি, আমি অন্য কারো কথা জানি না, যেটা আমি নিজে জানি, এত বছর ধইর্যা সেভেনটি ওয়ান নিয়ে চিন্তা করি আমরা। বিভিন্নভাবে ডিরেক্টলি, ইনডিরেক্টলি কাজ করছি আমরা, প্রচুর কাজ করছি ডিরেক্টলি। আমার কিন্তু কখনই বিশ্বাস করি নাই নাই যে, বাংলাদেশে বিচার হবে একদিন। আমরা কিন্তু এইটা অল মোস্ট দাবি হিসাবেই সব সময় থাকবে এবং আমরা ক্যাম্পেইন করেই যাব আরকি। দ্যাট ওয়াজ অ্যাট বেস্ট আমাদের ই...টা ছিল আরকি, মানে আমাদের প্রত্যাশা ছিল। আমার মনে হয় না যে কেউ-ই বিশ্বাস করবে যে, আমরা জানতাম যে, বিচার হবে একদিন। এত বছর ধরে কোনো খবর নাই আরকি। তো ফ্যাক্টস্্ যে এখানে বিচার শুরু হয়েছে। এটা তো একটা বিরাট ব্যাপার। বিরাট একটা ব্যাপার, ট্রিমেন্ডাসলি হিস্টোরিক সিগনিফিক্যান্ট। ও আচ্ছা, আপনাদের ইটা নিয়ে কালকে একটা ডিসকাসন হইছে। যে, এক নম্বর কেইস নিয়া আমরা, মানে আপনারা তো কোনো কথা আরকি বলতে পারেন নাই। এই একটা সুযোগ আছে, একটা কেইসের মাধ্যমে, ইয়ে... মানি যত রকম ইস্যু আছে সব ইস্যু কিন্তু আপনারা ইডার ভিতরে অ্যাড্রেস করে দিতে পারবেন।
নিজামুল হক নাসিম : হুম...।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : এটা ইতিহাসটাকে একেবারে, মানে ডেফিনিটলি হিস্ট্রিটা। তারপর হচ্ছে যে প্রসেসটা এবং প্রসেসের আগের প্রসেসটা, তারপর হচ্ছে যে প্রসেসের ইভ্যালুশনটা, খুবই সিগনিফিক্যান্টলি অ্যা... এটা আমরা পরে আরো আলোচনা করব। বাট খুবই সিগনিফিক্যান্টলি জাজমেন্টটা আপনারা এই কেইস রিল্যাটেডই কিন্তু, ট্রাইব্যুনাল যে সিগনিফিক্যান্ট ডিসিশন নিয়েছে, অর্ডার দিয়েছে যেগুলো এবং ট্রাইব্যুনালের অ্যাপ্রোচটা কী ছিল। ট্রাইব্যুনালের অ্যাপ্রোচটা হচ্ছে রোল আপহোল্ড করা, ল’ আপহোল্ড করা, অ্যাট সেইম টাইম ল’টাকে একেবারে রিজেনেবল ওয়েতে, লজিক্যাল ওয়েতে, ন্যাশনাল ওয়েতে, হিউম্যান ওয়েতে যে ইন্টারপ্রেট করা, এই যে, যতগুলা নেগেটিভ ক্রিটিসিজম হইছে, এগুলাকে, ক্রিটিসিজমগুলাকে আমরা, ওইভাবে, মানে ক্রিটিসিজম না লেইখ্যা, ওইটাকে উত্তরটা দিয়ে দেয়া আরকি। মানে ওইটাতে দিয়ে দেয়া হবে উত্তরটা, মানে আসলে এই ট্রাইব্যুনালটা কী ছিল আর কি। একটা, সলিড একটা, মানে ডেফিনিটলি ইন্টারপ্রিটেশন অব ইভ্যাল্যুশন অব দি কেইস এবং ই... রিলেটেড যা কিছু আছে আরকি, মানি হিস্টোরিকাল, লিগ্যাল, পলিটিক্যাল, মানে সবকিছু আসবে আরকি, মানে ব্যাকগ্রাউন্ড লেখাতে। যেমন—কেন নেয়া হয়েছে, কেন নেয়া হয়নি আরকি। মানি কোনটা, নেয়া হচ্ছে যেটা কেন নেয়া হলো, আর যেটা নেয়া হয়নি, সেটা কেন নেয়া হলো না। ফলে হচ্ছে যে, ইটা অপরচ্যুনিটি যেহেতু ট্রাইব্যুনাল কখনো কথা বলতে পারে নাই, নিজেদের কথাটা নিজেরা কখনো বলতে পারে নাই, এই কেসের মাধ্যমে এবং জাজমেন্টের মাধ্যমেই আসলে ট্রাইব্যুনাল তার কথা বইল্যা দিবে এবং যেইটা আমরা চাই, শুধুমাত্র, মানে কনক্লুশনটায়ও যেন এটা একটা ঐতিহাসিক ডকুমেন্ট হয়ে থাকে যেন আর কি। এই ডকুমেন্টটা বহু, মানে বহু গবেষণা করতে হবে এর উপরে। উই আন্ডারস্ট্যান্ড যে ইটা সিগনিফিক্যান্স আরকি। সো, এই ধরনের একটা চিন্তা আমরা করতেছি আরকি। যে, এই ধরনের একটা কিছু করতে হবে। মানে ইটা এত গুরুত্বপূর্ণ এবং একটা অপরচ্যুনেটি। যে আমাদের জন্য একটা হিউজ অপরচ্যুনেটি। শরীরটা ঠিক আছে?
নিজামুল হক নাসিম : আছি, ভালোই ইনশাল্লাহ ঠিক আছে, আপনার শরীরের কী খবর?
আহমদ জিয়াউদ্দিন : আমার তো কালকে হলো ১৩ তারিখে যাবে একটা। এই বাতের জন্য। আমার মনে হয় বাত-টাত হইছে রে, ভাই।
নিজামুল হক নাসিম : হুম... হুম...
আহমদ জিয়াউদ্দিন : কিসের জন্য হয়, সেটাও বুঝি না। দেখাও যায় না কিন্তু, কিন্তু আবার ব্যথাও করে। পাঠাইছে আমারে এক ডাক্তারের কাছে। কালকে যাব বাতের, মানে বাত সাহেবের কাছে, আর ১৮ তারিখে হলো ইয়েটা... রিপোর্টটা পাওয়া যাবে।
নিজামুল হক নাসিম : আল্লাহু... আল্লাহ...
আহমদ জিয়াউদ্দিন : আপনি তো ঝগড়ার...
নিজামুল হক নাসিম : কী?
আহমদ জিয়াউদ্দিন : বলতেছি ঝগড়ার মাঝখানে থাকেন। আজকে তাহলে সাঈদীরটা হয় নাই, ফুল মুজাহিদ হইছে?
নিজামুল হক নাসিম : না, সাঈদী হইছে বিকালে। আজকে হাফ হইছে। কালকে চলবে হোল ডে এইডাই।
আহমদ জিয়াউদ্দিন : আজকে তো সাংবাদিকরে ঝাড়ি দিলেন?
নিজামুল হক নাসিম : কী...?
আহমদ জিয়াউদ্দিন : নয়া দিগন্তের রিপোর্ট বোধ হয় ঠিক হয়নি।
নিজামুল হক নাসিম : কী লেখছে...?
আহমদ জিয়াউদ্দিন : সেটার জন্য আপনারা কি কিছু বলছিলেন নাকি, নাকি কোনো ওয়ার্নিং দিছেন, সেটা কী?
নিজামুল হক নাসিম : না আমরা তো না, এডা ওই ট্রাইব্যুনাল দেছে। (একটু কাশি)
আহমদ জিয়াউদ্দিন : তো ঠিকাছে তাহলে...
নিজামুল হক নাসিম : আচ্ছা, ঠিক আছে।
oliullahnoman@yahoo.com

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন