জাহিদুল ইসলাম
ডঃ রিজভী তার নিবন্ধে উল্লেখ করেছেন যে, টিপাইমুখ প্রকল্প একটি ‘রান অফ দি রিভার’ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। কিন্তু বাস্তবে টিপাইমুখ প্রকল্প ‘রান অফ দি রিভার’ জলপ্রবাহ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নয় বরং তা একটি ‘গতানুগতিক জলবিদ্যুৎ প্রকল্প’। রান অফ দি রিভার ও গতানুগতিক জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য হচ্ছেঃ প্রথমটিতে বাঁধের উজানে বড় আকারের কোন জলাধার নির্মান করা হয়না এবং বাঁধ দেবার পর নদীর প্রায় সম্পূর্ন প্রবাহকে ঢালু টানেলে করে ভিন্ন পথে বাঁধের ভাটিতে মূল নদীতে নিয়ে যাওয়া হয়, অন্যদিকে দ্বিতীয় ক্ষেত্রে বাঁধের উজানে বিশাল জলাধারে পানি সঞ্চয় করা হয়ে থাকে। ‘রান অফ দি রিভার’ প্রকল্পে উজানে পানি ধরে রাখার দরকার হয়না বলে ভাটিতে নদীর প্রবাহের উল্লেখযোগ্য কোন পরিবর্তন হয়না এবং এর পরিবেশগত ও বাস্তুতান্ত্রিক প্রভাব গতানুগতিক জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের চেয়ে অনেকাংশেই কম। প্রাপ্ত তথ্যমতে টিপাইমুখ প্রকল্পে বাঁধের কারনে সৃষ্ট জলাধারের ফলে প্লাবিত এলাকা প্রায় ৩০০ বর্গকিলোমিটার ফলে তা আদতে একটি ‘গতানুগতিক জলবিদ্যুৎ প্রকল্প’।
ডঃ রিজভীর মতে, টিপাইমুখ প্রকল্প শুধুমাত্র তখনই ভাটি অঞ্চলে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে যখন সেখান থেকে সেচ ও অন্যান্য প্রয়োজনে পানি প্রত্যাহার করা হবে এবং যেহেতু ভারত সরকার বলছে যে তারা এই প্রকল্পে কোন ব্যারেজ নির্মান করবে না সেক্ষত্রে বাংলাদেশে বরাক নদের দুটি শাখা সুরমা ও কুশিয়ারার পানিপ্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা নয় বরং শুষ্ক মৌসুমে নদীর প্রবাহ বাড়বে আর বর্ষায় বন্যা নিয়ন্ত্রিত হবে। একই রকম যুক্তি পাওয়া যায় জনাব আহমদের নিবন্ধে। কিন্তু এই তথাকথিত বন্যামুক্ত হওয়া কতটা ইতিবাচক। বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এখানে রয়েছে বিশাল জলাভুমি ও অসংখ্য হাওড়। এর একটি নিজস্ব বাস্তুসংস্থান রয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে এখানে বর্ষার সময় পানি বাড়বে, বন্যা হবে ও শুষ্ক মৌসুমে অনেক এলাকা শুকিয়ে যাবে, এর উপর ভিত্তি করেই সেখানকার বাস্তুসংস্থান গড়ে উঠেছে। ‘ইন্সটিটিউট অফ ওয়াটার মডেলিং’ এর ‘হাইড্রোলজিকাল ইম্প্যাক্ট স্টাডি অফ টিপাইমুখ ড্যাম প্রজেক্ট অফ ইন্ডিয়া অন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণার আলোকে[৪, ৫] টিপাইমুখ বাঁধের কারণে সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার জলাভূমি ও হাওড় আগের থেকে গড়ে যথাক্রমে ২৬% ও ১১% কমে যাবে, কুশিয়ারা নদী তীরে অবস্থিত কুশিয়ারা-বর্দাল হাওড় গড় বর্ষার সময় পুরোপুরি শুকিয়ে যাবে এবং কাওয়ারদিঘী হাওড়-এর ২৬% প্লাবন এলাকা হারাবে, বাঁধের ভাটিতে ১০০ থেকে ১৫০ কিমি দীর্ঘায়িত অংশে বিপুল নদীক্ষয়ের ফলে ক্ষয়িত পলি বাংলাদেশে বাহিত হবে যা কিনা বরাক নদীর নিচের অংশে যেখানে থেকে তা সুরমা আর কুশিয়ারা এই দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে সেখানে জমা হবে যা কুশিয়ারা নদীর বেশ কিছু শাখানদীর মুখ বন্ধ করে দিতে পারে।
জনাব আহমেদ উল্লেখ করেছেন যে তার নিবন্ধে উপস্থাপিত তথ্য কানাডীয় উন্নয়ন সংস্থার (সিডা) অর্থায়নে বাংলাদেশ পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নব্বইয়ের দশকে সম্পাদিত একটি বিশেষ সমীক্ষার অংশবিশেষ। যদিও তিনি ঐ সমীক্ষার নাম উল্লেখ করেন নি তবে ধারণা করা যায় উল্লেখ্য গবেষনাটি বাংলাদেশের ‘উত্তর-পূর্ব আঞ্চলিক পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনাঃ ফ্লাড একশন প্ল্যান-৬ (NERP-FAP 6)’ এর অধীনে ‘ইনিশিয়াল এনভায়রন্মেন্টাল ইভ্যাল্যুয়েশন’ শিরোনামে প্রকাশিত হয় [৬]। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে টিপাইমুখ প্রকল্পে এটিই একমাত্র উল্লেখ্যযোগ্য গবেষণা যা মূলত কিছু ধারণা বা এসাম্পশনের উপর ভিত্তি করে সংগঠিত হয়েছিল। তিনি উল্লেখ করেছেন যে এর চেয়ে মানসম্মত তথ্য ও উপাত্ত যদি আর কারও কাছে থেকে থাকে, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। অথচ ঐ রিপোর্টেই উল্লেখ আছে যে, ‘যৌথ নদী কমিশনের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যে এই প্রকল্পের একটি ন্যূনতম ধারণা পাওয়া যায় যা কিনা ঐ প্রকল্পের সম্ভাব্য প্রাথমিক প্রভাব যাচাইয়ে ব্যবহৃত হয়েছে।…ভারত কতটুকু পানি এই প্রকল্প থেকে প্রত্যাহার করবে সে সম্পর্কে কোন তথ্য জানা নেই। এই গবেষণার জন্য ধরে নেয়া হয়েছে যে সেচের জন্য ১ মিটার সমপরিমাণ পানি অপসারন করা হবে পানি অপসারন ক্রমাগতভাবে শুষ্ক মৌসুম (নভেম্বর থেকে এপ্রিল)পর্যন্ত চলবে।।’
এছাড়া ঐ রিপোর্টেই মন্তব্য করা হয়েছে যে জলাধার পূরণের সময়কালে অনেক সময় প্রকল্পের সুবিধা তাড়াতাড়ি পাবার জন্য অতিদ্রুত জলাধার পূর্ণ করা হয় যা বাংলাদেশের মত ভাটির অঞ্চলে ভয়াবহ পরিবেশ, বিশেষ করে বাস্তুসংস্থান বিপর্যয় ঘটাবে।
হাওড় এলাকার কথা উল্লেখ করে জনাব আহমদ বলেছেন যে, বর্ষাকালে হাওড়গুলি জলে টইটুম্বর থাকে- কোন ফসল হয় না, কিন্তু তিনি বিস্তীর্ন এই হাওড় এলাকার মৎস্য সম্পদ ও জীববৈচিত্রের কথা এড়িয়ে গিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, হাওড় অঞ্চলের সমস্যা দু’টিঃ এক, আগাম বন্যা, যার ফলে ফেব্রুয়ারি-মার্চে উঠতি ফসল মাঠেই তলিয়ে যায়, এবং দুই, দেরিতে পানি নিষ্কাশন, যার ফলে বোরো ধান রোপণ করতে দেরি হয়ে যায় এবং তা আগাম বন্যার ঝুঁকিতে পড়ে। তিনি মন্তব্য করেছেন যে বর্ষাকালে বরাক দিয়ে পানিপ্রবাহ হ্রাস পেলে এই দুটো সমস্যাই কমে যাবে। কিন্তু এখানে লক্ষ্যনীয় যে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মানের পর বর্ষার শুরুতে রিজার্ভারে পানি ধরে রাখার প্রয়োজন পড়বে আবার বর্ষার শেষের দিকে পানি ছেড়ে দেয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে। এর ফলে বর্ষার শুরুতে বন্যা কমে আসতে পারে আবার বর্ষার শেষে বন্যার প্রকোপ বাড়তে পারে।এর প্রভাব এই অঞ্চলের বোরো ধান আবাদের উপর পড়তে পারে। এছাড়া হাওড়গুলি শুষ্ক মৌসুমে যখন শুকিয়ে যায় তখন কৃষকরা সেখানে বোরো ধান বপন করে যা এই অঞ্চলের একমাত্র ফসল। এই ধান বর্ষা আসার আগেই ঘরে ওঠে যা এই লোকগুলির বছরের একমাত্র শর্করার যোগান দেয়। শুকনো মৌসুমে পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি এবং তার ফলে সেচের জন্য সুফল বয়ে আনা প্রসংগে জনাব আহমদের মন্তব্যের প্রতি উত্তরে বলতে চাই, প্রাথমিক গবেষণা অনুযায়ী টিপাইমুখ প্রকল্পের কারণে শুষ্ক মৌসুমে অমলসিদের আরো ভাটিতে সুরমা-কুশিয়ারা অববাহিকায় নদী তীরবর্তী অঞ্চলে প্রবাহ শতকরা ৮০ ভাগ বৃদ্ধি পাবে যা কিনা পানির উচ্চতা ২ মিটার পর্যন্ত বাড়িয়ে দেবে। সেক্ষেত্রে সেচের সুবিধা নয় বরং এই বিস্তীর্ন অঞ্চলের ফসল পানিতেই নিমজ্জিত হবে।
টিপাইমুখ প্রকল্পের ভূমিকম্পের ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে ডঃ রিজভী মন্তব্য করেছেন যে যেহেতু বাংলাদেশ টিপাইমুখ প্রকল্প থেকে অনেক দূরে সেক্ষেত্রে আমাদের ঝুঁকি অনেক কম। অন্যদিকে জনাব আহমদ এটাকে নিছক ‘জুজুর ভয়’ বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ভারতীয় ও বার্মা প্লেটের মিথস্ক্রিয়ার ফলে ভারত ও বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চল পৃথিবীর অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবে বিবেচিত। ভূতাত্ত্বিকভাবে টিপাইমুখ বাঁধ এলাকা এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চল আসলে অসংখ্য ‘ফোল্ড ও ফল্ট’ বিশিষ্ট এবং এই অঞ্চলে গত ১৫০ বছরে রিক্টার স্কেলে ৭ এর অধিক মাত্রার দু’টি ভূমিকম্প হয়েছে যার মধ্যে শেষটি ছিল ১৯৫৭ সালে যা কিনা টিপাইমুখ প্রকল্প থেকে পূর্ব-উত্তরপূর্ব দিকে মাত্র ৭৫ কিমি দূরে। FAP 6 রিপোর্ট (১৯৯৫) মতে ভূমিকম্পের কারণে বাঁধ ভেঙ্গে গেলে ৩০০ বর্গকিলোমিটার এলাকার জলাধারের পানি ঢেউ আকারে ঘন্টায় ১০ থেকে ৩০ কিলোমিটার বেগে ভাটির দিকে ধাবিত হবে এবং তা ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। বাংলাদেশে প্রবেশের সময় এই ঢেউয়ের উচ্চতা হবে ৫ মিটার [৬]। এই বিপুল প্রবাহ ১০ দিন ধরে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে এবং সমস্ত বন্যার্ত এলাকা থেকে পানি সরে যেতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যাবে। সুতরাং টিপাইমুখ প্রকল্পে বাঁধ ভাঙ্গার ঝুঁকিকে ‘জুজুর ভয়’ উল্লেখ করা বা বাঁধ ভেঙ্গে গেলে বাংলাদেশের কম ক্ষতিগ্রস্থ হবার যুক্তি অসাড়।
টিপাইমুখ প্রকল্পের ক্ষেত্রে ভাটির রাজ্য আসাম ও নাগাল্যান্ড এর আপত্তি না থাকার কথা উল্লেখ করে এই প্রকল্পে বাংলাদেশেরও আপত্তি থাকা উচিৎ নয় এরকম একটি ইঙ্গিত দেবার চেষ্টা করেছেন ডঃ রিজভী। এখানে উল্লেখ্য যে বারাক নদী থেকে পানিবিদ্যুৎ উৎপাদনের ধারণা আসে মূলত আসামের কাছাড় উপত্যকায় বন্যা নিয়ন্ত্রনের চাহিদা থেকেই। সুতরাং এই প্রকল্পে আসামের আপত্তি থাকার কোন কারন নেই। কিন্তু টিপাইমুখ বাঁধ হলে বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের যে বিস্তীর্ন হাওড় অঞ্চলের বাস্তুসংস্থান ও জীববৈচিত্র আছে সেটি পরিপূর্নভাবে বিনষ্ট হবে। ফলে আসামের উদাহরণ টেনে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই বাঁধের ইতিবাচকতা টেনে আনা অযৌক্তিক।
জনাব আহমদ অতীতে গঙ্গা নদীর উজানে বাঁধ তৈরি ও জলাধার নির্মাণ করে শুকনো মৌসুমে পানিপ্রবাহ বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞদের প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে তিনি মন্তব্য করেছেন যে ‘এ ধরনের জলাধার নেপাল কিংবা ভুটানে হলে আপত্তি নেই কিন্তু ভারতে হলেই অনেকের আপত্তি।’ এখানে বলে রাখা ভাল যে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞদের সেই প্রস্তাব ভারত সমর্থন করলে হয়ত গঙ্গাচুক্তি ১৯৭৪/৭৫ সালেই সংগঠিত হতো। গঙ্গা চুক্তির আপস আলোচনার দ্বিতীয় পর্যায়ে (১৯৭৪-১৯৭৬) যেহেতু শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গার পানি বন্টন নিয়ে সমস্যার উৎপত্তি হয় তাই এই পর্যায়ে ‘গঙ্গায় পানি বৃদ্ধির’ বিষয়টি সামনে আনা হয় [৭]। বাংলাদেশ প্রস্তাব করে যে ভারত বর্ষা মৌসুমের বিপুল পরিমাণ পানিকে উজানের জলাধারে (ভারতে না নেপালে) সঞ্চিত করে তা শুস্ক মৌসুমে ব্যাবহার করতে পারে, অন্যদিকে ভারত একটি সংযোগ খালের মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র থেকে বিপুল পরিমান পানি গঙ্গায় নিয়ে আসার প্রস্তাব করে।বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা উজানে বাঁধ করতে প্রস্তাব করেছিল কারন তারা চেয়েছিল যেন তাতে শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গায় পানি বৃদ্ধি পায় এবং সেই বর্ধিত পানি ভারত প্রত্যাহার করতে পারে ফলে বাংলাদেশকে আর পানিবিহীন থাকতে হয়না শীতকালে।
ডঃ রিজভী উল্লেখ করেছেন যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী টিপাইমুখ প্রকল্পের সমতাভিত্তিক অংশীদার হওয়া এবং সেখানে উৎপাদিত বিদ্যুতের ভাগ নেওয়ার আমন্ত্রণ পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং মন্তব্য করেছেন যে, এর ফলে প্রকল্পটির সকল পর্যায়ে আমাদের পর্যবেক্ষণ থাকবে এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়ায় স্থান করে নেওয়া নিশ্চিত হবে। একই কথায় প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই জনাব আহমদের নিবন্ধে। তিনি বরং আরো জোরালো ভাবে মন্তব্য করেছেন ‘এ বাঁধ শুধু ভারতের তৈরি করাই উচিত নয়, বাংলাদেশের উচিত ভারতকে চাপ দেওয়া, যাতে বাঁধটি তাড়াতাড়ি তৈরি হয়।’ এখানে বলে রাখা ভাল যে, ভারতের এই আমন্ত্রন মেনে নেয়া মানে হচ্ছে টিপাইমুখ প্রকল্পে বাংলাদেশের স্বার্থ বিঘ্নিত হচ্ছে সেটিকে অস্বীকার করা। ডঃ রিজভী উল্লেখ করেছেন যে সংগৃহীত তথ্য এবং ভারতের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া আশ্বাসের ভিত্তিতে আমাদের উচিত টিপাইমুখ প্রকল্পকে আবেগ ও রাজনীতির ক্ষেত্র থেকে বিযুক্ত করে বৈজ্ঞানিক ও যুক্তিশীলতার আলোকে বিবেচনা করা। তার এই মন্তব্যের সাথে আমি একমত তবে শুধুমাত্র ভারত সরকারের মৌখিক আশ্বাসে আশ্বস্ত হয়ে নিশ্চয়তার ঢেকুর তোলার পক্ষপাতি নই। বাংলাদেশ সরকারের উচিৎ আগে টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে যৌথ সমীক্ষা ও গবেষণার উদ্যোগ নিয়ে জেনে নেয়া বাংলাদেশের কতটুকু ক্ষতি হচ্ছে। যদি বাঁধের ফলে সম্ভাব্য ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য এর ডিজাইনে কোন পরিবর্তন-পরিবর্ধন সম্ভব থাকে তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।আর যদি এই ক্ষতি সহনীয় মাত্রায় আনা সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন না করার প্রস্তাব ভারতের কাছে উত্থাপন করতে হবে এবং একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে সেটাই হবে আমাদের প্রত্যাশা।
তথ্যসুত্র:
[১] গওহর রিজভী(২০১১) “বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কঃ টিপাইমুখ: যৌক্তিক ও বৈজ্ঞানিক আলোচনার অনুরোধ” , দৈনিক প্রথম আলো, ১৩ ডিসেম্বর ২০১১।
[২] Gowher Rizvi(2011) “Tipaimukh: A plea for rational and scientific discussion”, The Daily Star, 13 December 2011.
[৩] মহিউদ্দীন আহমদ(২০১১) “বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কঃ টিপাইমুখ বাঁধ তৈরি করা কেন জরুরি”, দৈনিক প্রথম আলো, ২৯ ডিসেম্বর ২০১১।
[৪] Institute of Water Modeling (2005) “Hydrological Impact Study of Tipaimukh Dam Project of India on Bangladesh”, April 2005.
[৫]Kibria, M. G. (2005). Gaining Public Acceptance for Large Dams on International Rivers: The Case of Tipaimukh Dam in India and Concerns in Lower Riparian Bangladesh. Gaining Public Acceptance Issue-Based Workshop Proceedings,Page:89-91.
[৬]Initial Environmental Evaluation, Appendix to the Northeast Regional Water Management Plan, Bangladesh Flood Action Plan 6 (IEE NERP FAP 6)
[৭] আইনুন নিশাত (১৯৯৬)“Impact of Ganges Water Dispute on Bangladesh”, Asian International Waters, From Ganges-Brahmaputra to Mekong, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস।
জাহিদুল ইসলাম: পিএইচডি গবেষক, ইউনিভার্সিটি অফ আলবার্টা, কানাডা।
প্রাক্তন শিক্ষক, পানিসম্পদ কৌশল বিভাগ, বুয়েট
zahidripon@gmail.com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন