মুহাম্মদ শওকত আলী
রাজনৈতিক সংঘাতে ক্ষতবিক্ষত দেশ। আলোচনা ও সমঝোতা কোনটির পক্ষে নেই সরকার। ফলে দেশবাসী শঙ্কিত। সরকারের একগুঁয়েমির ফলে আলোচনার সব পথ এখন বন্ধ। সরকার দেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল না দিয়ে উল্টো একের পর এক ইস্যু সৃষ্টি করে ১৮ দলীয় জোটকে আন্দোলনে যেতে বাধ্য করছে। নিজ দলের এমপি-মন্ত্রীদের সীমাহীন দুর্নীতি, অপকর্ম ও ব্যর্থতা ঢাকতে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে বিরোধী দলকে মাঠে নামাচ্ছে সরকার। দেশ এখন গুম-খুনে ভরপুর। এমন একটি দিন নেই মানুষ গুম-খুন হচ্ছে না। এই গুম-খুনের রাজনৈতিক ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ভূলুন্ঠিত হচ্ছে। এভাবে দেশ চলতে পারে না। দেশের সংঘাতময় পরিস্থিতি নিয়ে বিশিষ্টজনরা কিছু বললেই তাদের ওপরও মামলা-হামলা শুরু হয়ে যায়। আইনের শাসন এখন সোনার হরিণ। বিচারপ্রার্থীরা বিচার চাইতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়। লীগ করলে চাকরি হয়। লীগ করলে ধর্ষণ ও ফাঁসির মামলা থেকে বেকসুর খালাস পাওয়া যায়। দুর্নীতিবাজ ও বস্তাভর্তি টাকাচোররা এখন উল্টো পুরস্কৃত হচ্ছে। দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বাবু সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের গাড়িভর্তি টাকার উত্স বের না করে এবং বিচার না করে কীভাবে আবার তাকে দফতরবিহীন মন্ত্রিত্ব দেয়া হলো তা দেশবাসী জানতে চায়। দুর্নীতি করবে মন্ত্রীরা আর তাদের বিচার হবে না, তা হতে পারে না। যখন সুরঞ্জিত বাবুর দুর্নীতি নিয়ে দেশবাসী সোচ্চার, ঠিক তখন এই কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দেয়ার জন্য বিএনপির জনপ্রিয় নেতা ইলিয়াস আলীকে গুম করা হয়েছে। মন্ত্রীদের বক্তব্যে প্রমাণ হয়, ইলিয়াস আলীকে সরকারই রিজার্ভ খুনি বাহিনী দিয়ে গুম করেছে। শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে দেশে সরকার যে অরাজকতা সৃষ্টি করেছে তাতে মনে হয় না দেশে আইনের শাসন, নাগরিক স্বাধীনতা, সাংবিধানিক কোনো অধিকার কারও আছে। যিনি মানবাধিকার রক্ষার কর্তা তিনি এখন দলবাজদের কাতারে শামিল হয়েছেন। মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানের আসল কাজটা কী? দেশে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। দিনে বাসা থেকে বের হয়ে লাশ হয়ে ফিরে আসতে হচ্ছে অনেককে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া মানুষের ব্যাপারে তিনি কী কখনও আদালতে গিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ ও গুম-খুনের ব্যাপারে কখনও রিট দায়ের করেছেন? সাধারণ নাগরিকদের মানবাধিকার রক্ষার ব্যাপারে কি ড. মিজানুর রহমানের কোনো মাথাব্যথা আছে? সরকারের লেলিয়ে দেয়া বাহিনীগুলোর আচরণের ব্যাপারে তিনি কী কখনও সোচ্চার হয়েছেন? ইলিয়াস আলী ছাড়াও সিলেট ছাত্রদল নেতা দিনার, জুনায়েদকে গুম করা হয়েছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই মেধাবী ছাত্র আল মুকাদ্দাস ও ওয়ালিউল্লাহকে তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে গুম করে রাখা হয়েছে। শিবির নেতা হওয়ায় আল মুকাদ্দাস ও ওয়ালিউল্লাহ কি এদেশের মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত? আল মুকাদ্দাস, ওয়ালিউল্লাহ, দিনার, জুনায়েদ কি এদেশের নাগরিক নয়? মুকাদ্দাস ও ওয়ালিউল্লাহর পরিবার চারবার মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানের কার্যালয়ে গেলেও তাদের ফিরিয়ে দেয়া হয়। ক্ষমতার বেপরোয়া প্রভাব খাটিয়ে দেশকে উন্নয়নের পরিবর্তে গুম, খুন ও ছিনতাইয়ের মাধ্যমে মৃত্যুপুরীর দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার। দেশের ভবিষ্যত্ ও দেশ কোনো দিকে যাচ্ছে তা এখন বিশিষ্টজনরাও অনুমান করতে পারছেন না। সরকারের বাহিনীগুলো এখন কসাইয়ের ভূমিকা পালন করছে। দিন-দুপুরে গুলি করে টাকা ছিনতাই হয় ও প্রকাশ্যে মানুষ খুন হয়। মায়ের বুক থেকে কোলের শিশু কেড়ে নিয়ে চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদা না পেয়ে সন্ত্রাসীরা স্কুলপড়ুয়া ছাত্রকে ইটভাটায় যখন পুড়িয়ে মারে, যখন কোনো যুবক, বৃদ্ধ, বালকের লাশ যত্রতত্র পড়ে থাকতে দেখা যায়, তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো থাকে কোথায়? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাকি অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেকে সফল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেও দাবি করেছেন। দেশে মৃত্যুর মিছিল আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন তিনি সফল!
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেভাবে সফল তার কিছু নমুনা : সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা ও উদঘাটন হয়নি তাতে তিনি সফল। সৌদি আরবের কূটনৈতিক খালাপ হত্যার রহস্য ধামাচাপা দিয়ে খুনিদের খুঁজে বের না করে তিনি সফল। নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নূর বাবুকে যারা পিটিয়ে হত্যা করেছে, তাদের বিচার হয়নি তাতেই তিনি সফল। নরসিংদীর মেয়র লোকমান হত্যার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদের বিচার হয়নি তাতে তিনি সফল। কালো বিড়াল রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিতের টাকার বস্তা উদ্ধারের ঘটনা ধামাচাপা দিতে সরকারি বিশেষ বাহিনী দিয়ে ইলিয়াস আলীকে গুম করতে পেরে তিনি সফল। ইবির দুই ছাত্র আল মুকাদ্দাস, ওয়ালিউল্লাহ, সিলেট ছাত্রদল নেতা দিনার ও জুনাইদকে গুম করে রাখা হয়েছে তাতে তিনি সফল। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মাধ্যমে ১৮ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের বাড়িতে গভীর রাতে তল্লাশি চালাতে পারায় তিনি সফল। পুলিশ-র্যাব দিয়ে শীর্ষ নেতাদের ওপর হামলা, মামলা, হয়রানি ও বাড়ি ছাড়া করতে পারায় তিনি সফল। পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগকে লেলিয়ে দিয়ে হরতালে গুলি করে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের হত্যা করতে পারায় তিনি সফল। পুলিশ-র্যাব দিয়ে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীদের আস্তানার মতো হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্ট ঘেরাও করে রাখতে পারায় তিনি সফল। হরতালে পুলিশের পাশাপাশি সরকারদলীয় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অস্ত্র দিয়ে লেলিয়ে দিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বাধা সৃষ্টি করায় তিনি সফল। বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে পুলিশকে বাদী সাজিয়ে মিথ্যা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলক মামলা করে জেলে ঢোকাতে পারায় তিনি সফল। সচিবালয়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যেও তথাকথিত কাল্পনিক ভিত্তিহীন বোমা বা ককটেল বিস্ফোরণের মিথ্যা বিল পাস করে ১৮ দলীয় শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দিতে পারায় তিনি সফল। গার্মেন্ট শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলাম হত্যার বিচার ও খুনিদের খুঁজে গ্রেফতার করতে হয়নি, তাতেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন সফল। সরকার ও পুলিশের ফ্যাসিস্ট আচরণে জনগণ তার মৌলিক অধিকার হারিয়েছে। ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠান পালনে দেশে কোনো স্বাধীনতা নেই। সারাদেশে তাফসির মাহফিলগুলোর ওপর সরকার পেটোয়া বাহিনী দিয়ে অঘোষিত ১৪৪ ধারা জারি করে রেখেছে। মাহফিল করার অপরাধে নিজ এলাকা কক্সবাজারে আমাকে ও আমার অন্য সহকর্মীদের গোয়েন্দা বাহিনীর দ্বারা হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। ধন্য এই সাফল্য!
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেভাবে সফল তার কিছু নমুনা : সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা ও উদঘাটন হয়নি তাতে তিনি সফল। সৌদি আরবের কূটনৈতিক খালাপ হত্যার রহস্য ধামাচাপা দিয়ে খুনিদের খুঁজে বের না করে তিনি সফল। নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নূর বাবুকে যারা পিটিয়ে হত্যা করেছে, তাদের বিচার হয়নি তাতেই তিনি সফল। নরসিংদীর মেয়র লোকমান হত্যার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদের বিচার হয়নি তাতে তিনি সফল। কালো বিড়াল রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিতের টাকার বস্তা উদ্ধারের ঘটনা ধামাচাপা দিতে সরকারি বিশেষ বাহিনী দিয়ে ইলিয়াস আলীকে গুম করতে পেরে তিনি সফল। ইবির দুই ছাত্র আল মুকাদ্দাস, ওয়ালিউল্লাহ, সিলেট ছাত্রদল নেতা দিনার ও জুনাইদকে গুম করে রাখা হয়েছে তাতে তিনি সফল। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মাধ্যমে ১৮ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের বাড়িতে গভীর রাতে তল্লাশি চালাতে পারায় তিনি সফল। পুলিশ-র্যাব দিয়ে শীর্ষ নেতাদের ওপর হামলা, মামলা, হয়রানি ও বাড়ি ছাড়া করতে পারায় তিনি সফল। পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগকে লেলিয়ে দিয়ে হরতালে গুলি করে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের হত্যা করতে পারায় তিনি সফল। পুলিশ-র্যাব দিয়ে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীদের আস্তানার মতো হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্ট ঘেরাও করে রাখতে পারায় তিনি সফল। হরতালে পুলিশের পাশাপাশি সরকারদলীয় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অস্ত্র দিয়ে লেলিয়ে দিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বাধা সৃষ্টি করায় তিনি সফল। বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে পুলিশকে বাদী সাজিয়ে মিথ্যা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলক মামলা করে জেলে ঢোকাতে পারায় তিনি সফল। সচিবালয়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যেও তথাকথিত কাল্পনিক ভিত্তিহীন বোমা বা ককটেল বিস্ফোরণের মিথ্যা বিল পাস করে ১৮ দলীয় শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দিতে পারায় তিনি সফল। গার্মেন্ট শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলাম হত্যার বিচার ও খুনিদের খুঁজে গ্রেফতার করতে হয়নি, তাতেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন সফল। সরকার ও পুলিশের ফ্যাসিস্ট আচরণে জনগণ তার মৌলিক অধিকার হারিয়েছে। ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠান পালনে দেশে কোনো স্বাধীনতা নেই। সারাদেশে তাফসির মাহফিলগুলোর ওপর সরকার পেটোয়া বাহিনী দিয়ে অঘোষিত ১৪৪ ধারা জারি করে রেখেছে। মাহফিল করার অপরাধে নিজ এলাকা কক্সবাজারে আমাকে ও আমার অন্য সহকর্মীদের গোয়েন্দা বাহিনীর দ্বারা হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। ধন্য এই সাফল্য!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন